শুক্রবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
ঢিমেতালে সিলেটের রাজনীতি

আওয়ামী লীগ ‘রিলাক্স মুডে’

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

আওয়ামী লীগ ‘রিলাক্স মুডে’

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘অকল্পনীয়’ জয়ের পর ‘রিলাক্স মুডে’ আছে সিলেট আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজারে মিলাদ মাহফিল আয়োজনে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে দলটির কার্যক্রম। জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও তা পুনর্গঠনের কোনো উদ্যোগই নেই দলটির দায়িত্বশীল নেতাদের। দলের দায়সারা এই অবস্থার প্রভাব পড়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও। ১২টি উপজেলার মধ্যে ৯টিতেই একক প্রার্থী দিতে পারেনি দলটি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৫টিতে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। বাকি একটিতে প্রার্থী দেয় জাতীয় পার্টি। দলটি জয়ের মুখ না দেখলেও বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের সব প্রার্থী। এই জয়কে নিজেদের ‘বিশাল অর্জন’ হিসেবেই দেখছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। জেলা      ও মহানগর শাখার আওতাধীন বিভিন্ন কমিটি অপূর্ণাঙ্গ, অগোছালো ও মেয়াদোত্তীর্ণ থাকলেও ‘অর্জনের’ এই ঢেঁকুর তুলে ‘রিলাক্স মুডেই’ সময় পার করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। নির্বাচনের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভা, দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে মিলাদ মাহফিল ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে দলটির কার্যক্রম। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্যে প্রতিটি উপজেলায় বর্ধিত সভা করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে বিভক্তি থাকায় প্রার্থী বাছাইয়েও বেগ পেতে হয় জেলার নেতাদের। কোম্পানীগঞ্জে বর্ধিত সভায় জেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে হামলার ঘটনাও ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে বহিষ্কার করা হয়। যদিও পরবর্তীতে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। প্রতিটি উপজেলায় বর্ধিত সভা করলেও ১২ উপজেলার মধ্যে ৯টিতেই একক প্রার্থী দিতে পারেনি আওয়ামী লীগ। একেক উপজেলায় একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে গত উপজেলা নির্বাচনের মতো এবারও ভরাডুবির আশঙ্কা করছেন অনেকে।

অপরদিকে জেলা ও মহানগর শাখার আওতাধীন কমিটিগুলো অপূর্ণাঙ্গ ও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে আছে। কিন্তু তা পুনর্গঠনের কোনো উদ্যোগই নেই সংশ্লিষ্টদের। সূত্র জানায়, জেলা আওয়ামী লীগের আওতাধীন ১৩টি উপজেলা কমিটির মধ্যে শুধুমাত্র বিশ^নাথে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। বাকি ১২টি উপজেলা কমিটি চলছে ২/৩ জন দিয়ে। কমিটিগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলেও সম্ভব হয়নি পূর্ণাঙ্গ করা। জেলার মতো অবস্থা মহানগরেরও। ২৭ ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টিতে কমিটি নেই। দলের বর্তমান কার্যক্রম প্রসঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, দল ক্ষমতায় থাকায় এবং রাজপথে বিরোধী দলের কর্মসূচি না থাকায় দিবসভিত্তিক কার্যক্রমই চলছে। তবে দলের নেতা-কর্মীদের সক্রিয় রাখতে যেসব ওয়ার্ডে কমিটি নেই সেসব কমিটি গঠনের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।

 

সর্বশেষ খবর