শনিবার, ১১ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

হলিডে মার্কেটে উপচেপড়া ভিড়

রমজান ও ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর ১১ এলাকায় ফের চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করে ঈদের আগে রাজধানীর হলিডে মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ঢল ছিল লক্ষ্যণীয়। উপচে পড়া ভিড় ও ক্রেতাদের ঠাসাঠাসিতে যেন সামনে পা ফেলারও জায়গা নেই। গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকাল থেকেই কেনাকাটার জন্য মার্কেটে চলে আসেন ক্রেতারা।

পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানীর ১১টি এলাকায় হলিডে মার্কেট চালুর ঘোষণা আগেই দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল থেকে ঢাকায় এসব হলিডে মার্কেট চালু করা হয়। ডিএসসিসির করপোরেট গলি (মৎস্য ভবন থেকে শিল্পকলা একাডেমি), নালারপাড় (কাঁটাবন থেকে শাহবাগের দিকে প্রথম গলি), মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের রাস্তা, দিলকুশার বকচত্বর থেকে পূবালী ব্যাংক রোড পর্যন্ত ও যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার পূর্বপাশে হলিডে মার্কেটের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া ডিএনসিসি এলাকার লালমাটিয়া মাঠ (আড়ংয়ের পেছনে), সলিমুল্লাহ রোডের পানির ট্যাংক মাঠ, মিরপুর-১ নম্বর থেকে রাইনখোলা, মিরপুরের হারুন মোল্লাহ ঈদগাহ মাঠ, উত্তরার জমজম টাওয়ারের পশ্চিম পাশের খালি প্লট এবং কাবাব ফ্যাক্টরির সামনের খালি চত্বর হকারদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এসব মার্কেট চালু থাকবে। ঈদুল ফিতরের পর এসব মার্কেট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।

গতকাল মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের রাস্তায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। সকাল ৮টা থেকেই সাজানো শুরু হয় হলিডে মার্কেটের দোকানপাট। সংসারের প্রয়োজনীয় প্রায় সবকিছুই পাওয়া যায় এসব দোকানে। এখানে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টি দোকান বসেছে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে। তবে জুমার নামাজের পর একে একে ক্রেতাদের ভিড় জমতে থাকে এসব দোকানের সামনে। এ দৃশ্য দেখে মনে হবে যেন পুরো রাজধানী এখন ঈদ আনন্দের জোয়ারে ভাসছে। ঈদের আগ মুহূর্তের ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতে একটু সময় নিয়ে কেনাকাটায় এসব মার্কেটে ক্রেতারা ঘুরছেন। সাধ্যমতো তারা কেনাকাটা করছেন। এ ছাড়া যারা ঢাকায় থাকবেন বলে মনস্থির করছেন, নির্দিষ্ট আয়ের এসব মানুষও পছন্দের পোশাক-আশাক ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। রাস্তার দুই পাশের ফুটপাথ এবং রাস্তার কিছু অংশজুড়েই রয়েছে হলি মার্কেটের দোকান। এর মধ্যে নারীদের কসমেটিক, শাড়ি, কাপড়, জুতা, থ্রিপিস, বিছানার চাদর, বালিশের কভার, কম্বল, মশারি, পর্দা, হাঁড়ি-পাতিল, সিরামিক আইটেম, গৃহস্থালি পণ্য, শিশুদের কাপড়, খেলনাসহ সব ধরনের পণ্য রয়েছে। ক্রেতাদের খুব সহজেই আকৃষ্ট করতে পারছেন হলিডে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। হলিডে মার্কেটে পণ্য কিনতে আসা রোখসানা বেগম বলেন- ছেলে-মেয়েদের জন্য কেনাকাটা করতে বের হয়েছি। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের বড় বড় মার্কেটে গিয়ে কেনার সামর্থ্য নেই। তাই আমাদের ভরসা হলিডে মার্কেট।

দামও কম এখানে। চাহিদা অনুযায়ী সব পণ্যই এখানে পাওয়া যায়।

গার্মেন্ট কর্মী রেনু আক্তার বলেন, সামনে ঈদ তাই আগেই কেনাকাটা করতে চলে এলাম। আর কিছুদিন পর প্রচ  ভিড় হবে এবং সব পণ্যের দামও বেড়ে যাবে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ উপলক্ষে মার্কেট খোলার প্রথম দিনেই ভালো বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া এখানে আমাদের কোনো ভাড়া দিতে হয় না। অন্যান্য বাজারে আমাদের ভাড়া দিতে হয়। ফলে বেশি লাভ করা যায় না।

থ্রিপিস বিক্রেতা সোলায়মান জানান, তার দোকানে ১০০ টাকা দামের ওড়না থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকার চেয়ে বেশি দামের থ্রিপিস আছে। আর এ মার্কেটে নারীরা বেশি আসেন। নারীদের পছন্দের ও চাহিদা অনুযায়ী সব পণ্য এখানে রাখা হয়।

সূত্র জানায়, গত ৩০ এপ্রিল ১১টি হলিডে মার্কেট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশের উপ-কমিশনারদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করে ডিএমপি। সব শ্রেণির ক্রেতা ও হকারদের কথা বিবেচনা করে হলিডে মার্কেট চালুর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর এ সিদ্ধান্ত নেয় ডিএমপি। বিষয়টি গত ২ মে এক চিঠিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামকে জানানো হয়। এর আগে ২০০৭ সালে রাজধানীতে চালু হয় হলিডে মার্কেট। কিছুদিন চলার পর বিভিন্ন সমস্যার কারণে কয়েক মাস বন্ধ থাকে।

সর্বশেষ খবর