শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

পানির দামেও বিক্রি হচ্ছে না ওভারব্রিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে যানজট নিরসন ও পথচারী পারাপারের জন্য নির্মিত ফুট ওভারব্রিজটি কোনো কাজেই আসছিল না। ফলে চেষ্টা করা হয় ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকায় নির্মিত ফুট ওভারব্রিজটি বিক্রি করে দেওয়ার। কিন্তু এর দাম ২২ লাখ টাকার ওপরে ওঠেনি। তাই বাধ্য হয়ে গতকাল দরপত্র বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার নির্বাচনী ইশতেহারে কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় একটি দৃষ্টিনন্দন ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ওই সময় নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তার এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে না পারলেও দ্বিতীয়বার সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কোর্ট পয়েন্টে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজের আদলে নির্মিত ওভারব্রিজটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশলী করপোরেশনের চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেড এই ফুট ওভারব্রিজটি নির্মাণ করে। ওভারব্রিজের পুরো স্টিল বডি চিটাগাং ড্রাই ডকে তৈরি করে এখানে এনে তা স্থাপন করা হয়। এতে ওভারব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় হয় ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

নগরীর ব্যস্ততম এলাকা কোর্ট পয়েন্টে ফুট ওভারব্রিজটি নির্মিত হলেও তা কোনো কাজেই আসছিল না। লোকজন ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহারে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। তাই সিটি করপোরেশন প্রথমে ফুট ওভারব্রিজটি নগরীর মদিনা মার্কেটে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করে। কিন্তু পরবর্তীতে স্থানান্তর না করে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বানও করা হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে মাত্র তিনটি প্রতিষ্ঠান এই দরপত্রে অংশ নেয়। তাদের দেওয়া মূল্যেও ছিল আকাশ-পাতাল ব্যবধান। নগরীর কাজিরবাজারের তাহমিদ এন্টারপ্রাইজ ২ লাখ টাকা, চাঁদনীঘাটের মো. সালেহ আহমদ ৩ লাখ টাকা ও স্টেশন রোডের সিরাজুল ইসলাম ওভারব্রিজটির মূল্য ২২ লাখ টাকা দিতে আগ্রহী হন। গত ৮ জুলাই দরপত্র খোলার পর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সিরাজুল ইসলামকে ওভারব্রিজটি ভেঙে  নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার তোড়জোড়ও শুরু হয় নগরভবনে।

সূত্র জানায়, ‘সমঝোতার’ মাধ্যমেই ওভারব্রিজটির দরপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। পানির দামে তারা স্টিল স্ট্রাকচারের ওভারব্রিজটি কিনে নিতে চেয়েছিল। এতে সিটি নগরভবনের একটি মহলও বেশ তৎপর ছিল। কিন্তু ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার ওভারব্রিজ মাত্র ২২ লাখ টাকায় বিক্রির বিষয়টি জানাজানি হলে গতকাল আগের দরপত্র বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, ‘মাত্র তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান ২২ লাখ টাকা মূল্য দিতে চেয়েছে। কিন্তু কাক্সিক্ষত মূল্য না পাওয়ায় আমরা দরপত্র বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বান করেছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর