অবশেষে রাজশাহীর সংরক্ষিত পুরাকীর্তি বড়কুঠি ছাড়লেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। রবিবার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একজন কাস্টডিয়ান ও একজন প্রকৌশলীসহ ছয় সদস্যের একটি দল রাজশাহীতে আসেন। তারা এ ভবনটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষে দখলমুক্ত করার জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জেলা প্রশাসককে চিঠি দেন। এর মধ্যে বসবাসকারী কর্মচারী তার মালামাল সরিয়ে নেন। কিন্তু এর চাবি হস্তান্তর করা হয়নি।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বড়কুঠির প্রত্নতাত্তি¡ক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার বড়কুঠিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে গত বছর ২১ জুন জারিকৃত সংরক্ষণ সম্পর্কীয় প্রজ্ঞাপন বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশ করা হয়েছে। গত ২৬ জুলাই এ ভবনটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষে দখলমুক্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মচারী পরিবার-পরিজন নিয়ে রীতিমতো সংরক্ষিত পুরাকীর্তির ভিতরে বসবাস করছিলেন। রবিবার তারা চলে যাওয়ায় রাজশাহীর সর্বপ্রাচীন দালানটি ফাঁকা হয়েছে। রবিবার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের রংপুর কাস্টডিয়ান অফিস থেকে কাস্টডিয়ান আবু সাইদ ইনাম তানভিরুলের নেতৃত্বে একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও চারজন মালি রাজশাহীতে আসেন। মালিরা ভবনটি পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেন। আবু সাইদ বলেন, ভবনটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার ও সংরক্ষণ করা দরকার। আবু সাইদ বলেন, আপাতত দুজন প্রহরী এর দায়িত্বে থাকবেন। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মহাপরিচালক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মিলে আনুষ্ঠানিকভাবে ভবনটি হস্তান্তরের বিষয়টি ঠিক করবেন। জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন, চাবি দেওয়ার ব্যাপারে কথা বলার জন্য রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি চিকিৎসকের কাছে থাকায় কথা বলতে পারেননি। অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি কোনো এক সময় ডাচ্্ ব্যবসায়ীরা বড়কুঠি ভবন নির্মাণ করে। ব্যবসায়ীদের কাছে এটা ‘ডাচ্ ফ্যাক্টরি’ হিসেবে পরিচিত। ১৯৫১ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে বড়কুঠি সরকারি সম্পত্তিতে পরিণত হয়। ১৯৫৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে বড়কুঠি বিশ্ববিদ্যালয়কে হস্তান্তর করা হয়।