শুক্রবার, ২ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

রেড জোনের দ্বারপ্রান্তে চট্টগ্রাম

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

রেড জোনের দ্বারপ্রান্তে চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) অধীন মহানগরে ৪১টি ওয়ার্ড। এর মধ্যে ১৪টি ওয়ার্ডকে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা আক্রান্ত হওয়ার হারের দিক দিয়ে লাল মার্ক দিয়ে চিহ্নিত করেছে। বাকি ওয়ার্ডগুলোও সবুজ চিহ্ন ক্রস করে ইয়েলো চিহ্নের পথে। ফলে ক্রমশ পুরো চট্টগ্রাম মহানগর এখন রেড জোনের দ্বারপ্রান্তে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাপকাঠি মতে, প্রতি লাখে শূন্য থেকে তিনজন আক্রান্ত হলে গ্রিন জোন, চার থেকে ৫৯ জন পর্যন্ত আক্রান্ত হলে ইয়েলো জোন এবং ৬০ থেকে এর বেশি আক্রান্ত হলে রেড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডে প্রতি লাখে ৮৩.৯ জন, ৭ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডে ৬০.৪ জন, ৮ নম্বর শুলকবহর ওয়ার্ডে ৭৯.৭ জন, ১০ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলি ওয়ার্ডে ৮৬.৪ জন, ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডে ১০৪.৩ জন, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ১৫৪.৬ জন, ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে ১৬৮.৮ জন, ১৫ নম্বর বাগমণিরাম ওয়ার্ডে ৩০৩.৩ জন, ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডে ২১৪.৭ জন, ২১ নম্বর জামাল খান ওয়ার্ডে ৯৪.৫ জন, ২২ নম্বর এনায়েত বাজার ওয়ার্ডে ১২০.৫ জন, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে ১০৪.০ জন, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে ৭৫.৯ জন ও ৩৮ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে ৭৩.৩ জন আক্রান্ত হন। এ তথ্য ১৫ থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত আক্রান্তদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী। তখন মহানগরে আক্রান্ত হয়েছিল ১৫০ থেকে ২০০ জন। কিন্তু চার দিন ধরে ৩০০ জন পর্যন্ত আক্রান্ত হচ্ছেন। বুধবার এক দিনেই আক্রান্ত হন ৫৫২ জন। ফলে চট্টগ্রামে সংক্রমণ খুব দ্রুতগতিতেই বাড়ছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমিত শুলকবহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম বলেন, ‘ওয়ার্ডভিত্তিক আবাসিক ও পাড়া-মহল্লার কমিটিগুলোকে সক্রিয় করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা মতে, ওয়ার্ডের প্রায় ৮০টি কমিটিকে চিঠি নিয়ে নিজ এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া আজ সেনাবাহিনীর দুটি টিমও টহল দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে ঘরে রাখতে এবং সচেতন করতে।’ চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে নগরের বেশ কিছু এলাকায় সংক্রমণের হার বাড়ছে। এটি আমাদের জন্য বড় সতর্ক সংকেত। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো ওয়ার্ড বা এলাকাকে রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করার সরকারি সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে অতীতে কাট্টলী ও চকবাজার ওয়ার্ডকে রেড জোন ঘোষণা করে আমরা যথেষ্ট সুফল পেয়েছিলাম। তখন ওই সব ওয়ার্ডে সংক্রমণ দ্রুত কমে আসে। রেড জোন বড় বিষয় নয়, বড় কথা হলো আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং সচেতন হওয়া।’ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে বুধবার পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হন ৫৯ হাজার ১১৬ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৪৬ হাজার ২৬৩ জন এবং উপজেলায় ১৩ হাজার ৫৩ জন। ইতিমধ্যে মারা গেছেন ৭০৬ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৪৭৭ জন ও উপজেলায় ২২৯ জন। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি ৯টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা চলছে।

সর্বশেষ খবর