বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

রাজধানীতে পাঁচ গাড়িচোর আটক চার পিকআপ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ আন্তজেলা গাড়িচোর চক্রের মূল হোতাসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত অভিযানে র‌্যাব-৪-এর সদস্যরা তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছেন চুরি করা চারটি পিকআপ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন সোহেল (২৬), সাগর (২৩), সাকিব হোসেন (২৫), হাসান (২৬) ও কামরুজ্জামান (৩৯)। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সম্প্রতি গাড়ি চুরির বেশ কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তকালে সংঘবদ্ধ একটি গাড়িচোর চক্রের সন্ধান পায় র‌্যাব। এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব-৪ কাজ করে যাচ্ছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, ধোলাইখাল এলাকায় এবং ঢাকার আশপাশে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় একটি গাড়িচোর চক্র দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি চুরি করে।

, গাড়ির  রং, বডি ও নম্বর প্লেট পরিবর্তন করে কম মূল্যে চোরাইপথে বিক্রি করে আসছে। পরে আমরা ছায়াতদন্ত শুরু করি।’

তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে আমরা জানতে পারি দারুস সালামের বেড়িবাঁধ এলাকায় চোরচক্রের সদস্যরা চুরি করা গাড়ি বিক্রির উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। এরা তিন বছর ধরে ঢাকার ধোলাইখাল, যাত্রাবাড়ী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিনি পিকআপ চুরি করে আসছিল। গ্রেফতার সোহেল ও সাগর ঢাকার একটি হাইস্কুল ও নারায়ণগঞ্জের একটি কলেজে পড়াশোনা করত। তারা সহোদর। সোহেল পেশায় ড্রাইভার। তারা উভয়েই মাদকাসক্ত।’

যেভাবে গাড়ি চুরি : গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ অধিনায়ক বলেন, পিকআপগুলো পার্কিংয়ে থাকা অবস্থায় চুরি হওয়ার ঘটনাই বেশি। ড্রাইভার বা মালিকের অনুপস্থিতিতে সুবিধামতো সময়ে বিশেষ কৌশল পার্কিংয়ে থাকা গাড়িগুলোর লক ভেঙে ও বিশেষ ধরনের মাস্টার চাবি দিয়ে স্টার্ট দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যেত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চালকদের সঙ্গে মিশে কৌশলে তাদের পিকআপ ভ্যান চুরি করতে নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করে আসছিল এ চক্রটি। এ জন্য তারা চালকদের লোভনীয় অফারও দিত। মালিকের কাছ থেকে আদায় করা টাকার একটি অংশ ড্রাইভারকে দিত তারা। মাঝেমধ্যে খালি চলন্ত পিকআপ ভাড়া করার কথা বলে থামিয়ে বিভিন্ন কৌশলে চালককে চেতনানাশক প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে নির্জন রাস্তায় ফেলে রেখে পিকআপ নিয়ে পালিয়ে যেত।

সোহেলের গাড়ি চালানোর দক্ষতা থাকায় পিকআপ গাড়িগুলোর লক ভাঙা ও যে কোনো চাবি দিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার বিষয়টি তার নখদর্পণে। এ ছাড়া গাড়িতে থাকা ট্র্যাকিং ডিভাইস দ্রুত শনাক্ত করে অকেজো করে দিতে সিদ্ধহস্ত সাগর। তাদের বাবা ভাড়ায়চালিত গাড়ির ড্রাইভার। তারা ২০২০ সালে গাড়ি চুরি মামলায় কুমিল্লায় জেলে ছিল। সেখানে সাকিবের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সাকিবকেও তারা গাড়ি চুরি করতে উৎসাহী করে তোলে। গাড়ি চুরির মামলায় জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তাদের সঙ্গে মাদকাসক্ত যুবক হাসান ও কামরুজ্জামানের পরিচয় হয়। তারা তাদের গাড়ি চুরির কৌশল সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয়। পরে মূলত সোহেলের নেতৃত্বে তারা পাঁচজন মিলে গাড়ি চুরি করা শুরু করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর