বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যান পদটি শূন্য আছে পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে। এখন প্রতিষ্ঠানটির সর্বময় ক্ষমতা ও দায়িত্ব নির্বাহী পরিচালকের (ইডি)। অফিস আদেশ বাস্তবায়ন করেন সচিব। কিন্তু ইডি ও সচিব অফিস করেন ইচ্ছামতো। ফলে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে কৃষি ও কৃষকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ সংস্থাটির। গত ১৪ এপ্রিল নির্বাহী পরিচালক তরিকুল আলম রাজশাহীতে আসেন। পরদিন দায়িত্ব নেন। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে অনিয়মিত অফিসে আসার অভিযোগ ছিল বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর। বিষয়টি কয়েকজন প্রকৌশলী ও একজন বোর্ড সদস্য মন্ত্রণালয়েও জানিয়েছিলেন। তারপরও তরিকুল আলমের অফিসে আসার সময় বদলায়নি। অফিস খোলার দিনগুলোতে তিন দিন ১২টা থেকে ১২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে, বিকাল ৪টায় অফিসে এসেছেন দুই দিন। অন্য দিনগুলোতে দুপুর ১টার পর অফিসে এসেছেন। বিএমডিএ অফিসে থাকা সিসি ক্যামেরাতে বিষয়টি স্পষ্ট আছে।
২২ অক্টোবর নির্বাহী পরিচালক তরিকুল আলমকে কয়েক দফায় কল ও মেসেজ করার পর তিনি বিকাল ৩টায় দেখা করেন। অফিসে দেরিতে আসার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘অসুস্থ, ঠান্ডা লেগেছে, তাই অফিসে দেরিতে এসেছেন। বেশির ভাগ সময় মাঠপর্যায়ে থাকি তাই অফিসে আসতে দেরি হয়।’ তরিকুল আলম মাঠপর্যায়ে যাওয়ার দাবি করলেও গত এক মাসে তাকে বিএমডিএর রেস্ট হাউসে অবস্থান ও দুপুরের পর কার্যালয়ে আসার তথ্য পাওয়া গেছে। রেস্ট হাউসের গার্ডও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিয়মিত দেরিতে অফিসে আসার কারণ জানতে চেয়ে আবারও নির্বাহী পরিচালককে মেসেজ পাঠানো হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।
শুধু নির্বাহী পরিচালক নন, কম যান না বিএমডিএর সচিব নীলুফা সরকার। তিনিও অফিস করেন দুপুরের পর থেকে। নির্বাহী পরিচালক অফিসে এলে তিনি আসেন। তিনি না এলে সচিবও আসেন না। অফিসের ফাইল স্বাক্ষর করতে কর্মকর্তাদের অপেক্ষায় থাকতে হয় সন্ধ্যা, এমনকি রাত পর্যন্ত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রকৌশলী জানিয়েছেন, বিভিন্ন অফিস আদেশ হয় বিকালের পর। সন্ধ্যায় সেগুলো স্বাক্ষর করেন সচিব। সর্বশেষ বিএমডিএর চেয়ারম্যান ছিলেন মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি এ বছরের ২৪ মে মারা যান। এরপর থেকে চেয়ারম্যান পদ শূন্য।