কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা সচেতনতা, চিকিৎসা ও নমুনা সংগ্রহের জন্য গঠন করেছে ‘করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিম’। কোথায়ও কোনো ব্যক্তির শরীরে করোনার উপসর্গ আছে এমন খবর পেলেই তাৎক্ষণিক ছুটে যাচ্ছেন টিমের সদস্যরা।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এমন মানবিকতা সাড়া জাগিয়েছে সর্বত্র।
জানা যায়, দেশে করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বেশ তৎপর। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল আলী বিদেশ ফেরতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করেছেন। কারো স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিলেই তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছেন।
কুমিল্লায় জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরপরই লাকসামের স্বাস্থ্য বিভাগ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বয়ে তাৎক্ষণিক গঠন করে ‘করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিম’। এ টিমের প্রধান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল আলী। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন- ডা. আবদুল মতিন, মো. ছানা উল্ল্যাহ এমটি (ল্যাব), মো. আজাদ হোসেন এমটি (ইপিআই), আশুতোষ মজুমদার এইচআই (ইনচার্জ), কবির হোসেন (গাড়ি চালক), আবদুল্লাহ আল মামুন (গাড়ি চালক)।
উপজেলার কোথাও কারো শরীরে করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন খবর পেলেই তাৎক্ষণিক ছুটে যাচ্ছেন ‘করোনা র্যাপিড রেসপন্স টিম’ এর সদস্যরা। রাত-দিন অবিরাম ছুটে চলেছেন তারা। ২৪ ঘণ্টা চালু রেখেছেন দু’টি ‘হটলাইন’ নাম্বার। ইতোমধ্যে টিমের সদস্যরা ৩৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ প্রেরণ করেছেন। রিপোর্ট এসেছে ১৭ জনের। তাদের মধ্যে একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাকি ১৬ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ। এখনো রিপোর্ট আসেনি ২১ জনের।
নারায়নগঞ্জ থেকে আসা উপজেলার একমাত্র করোনা রোগীকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’-এর সদস্যরা। শুধু তাই নয়, তারা করোনা আক্রান্ত রোগীর পুরো পরিবারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দিয়ে নজির স্থাপন করেছেন। ওই পরিবারের বাকি ৪ সদস্যেরও নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ প্রেরণ করেছেন। তাদের মধ্যে ৩ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। অন্যজনের রিপোর্ট এখনো আসেনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল আলী জানান, লাকসামের মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে স্বাস্থ্য বিভাগ তৎপর রয়েছে। কারো শরীরে করোনার উপসর্গের খবর পেলেই আমরা ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’-এর সদস্যরা তাৎক্ষণিক ছুটে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ এবং চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। সর্বোচ্চ মানবিকতা নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।
লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ.কে.এম সাইফুল আলম বলেন, স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দিন-রাত নিষ্ঠার সাথে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাদের যে কোনো প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে তিনি সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসা-বাড়িতে অবস্থানের পরামর্শ দিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম