রবিবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কুমিল্লায় হলুদের সমারোহ

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লায় হলুদের সমারোহ

কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার পুকুর, ধানি জমি ও নদীর চরে বিনাচাষে সরিষার আবাদ হয়েছে। এতে চারদিকে বসেছে হলুদের উৎসব। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, এবার কুমিল্লায় দ্বিগুণের বেশি জমিতে সরিষার চাষ হচ্ছে। মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বুড়িচং উপজেলার পরিহলপাড়া, মাঠের মাঝে পুকুর। হুমায়ুন কবির তার পুকুরের পানি নিষ্কাশন করে সেখানে সরিষার আবাদ করেছেন। সকালের কুয়াশার মাঝেও হাসছে সরিষা। ফুলে ফুলে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করছে। দু-চারটা ছোট পাখিও খাবার সংগ্রহ করতে এসেছে। কিচিরমিচির শব্দ তুলে উড়ে বেড়াচ্ছে। হুমায়ুন কবির বলেন, এ সময় মাছ তেমন বৃদ্ধি পায় না। তাই পুকুরে সরিষা চাষ করেছি। ভালো ফসল হয়েছে। প্রথমে অনেকে হাসাহাসি করেছে। এখন দেখতে আসে। জমির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলে। হরিপুর এলাকার মো. ইউসুফ বলেন, রোপা আমন কাটার ১০ দিন আগে ধানি জমিতে সরিষার বীজ ছিটিয়ে দিয়েছি। ধান কাটার পর সরিষা বেড়ে উঠেছে। পূর্ণমতি এলাকার কৃষক তারা মিয়া বলেন, ধান কাটার পর দেখি জমি চাষের ট্রাক্টর আনার ব্যবস্থা নেই। পাশের জমিতে ফসল। কৃষি অফিস জানিয়েছে চাষ ছাড়া সরিষা করা যাবে। এতবারপুর গ্রামের গোমতীর চরের কৃষক সামছুল হক বলেন, আমরা মাঝে দীর্ঘদিন সরিষা চাষ করিনি। এবার চরের অনেক জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে।

বুড়িচং উপজেলার মনিপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. জিয়াউদ্দিন মজুমদার, রামপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার সুলতানা ইয়াসমিন ও পূর্ণমতি ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার বিলকিস আক্তার বলেন, এই এলাকায় আগে তেমন সরিষার চাষ হত না। এবার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করায় কোথাও দ্বিগুণ, কোথাও তিন গুণ সরিষার আবাদ হয়েছে। বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় বলেন, বিনাচাষে পতিত জমি, পুকুর, ধানি জমিতে ও নদীর চরে সরিষা চাষ করা হয়েছে। অন্য ফসল থাকায় অনেকে সরিষা চাষের ইচ্ছে থাকলেও তা করতে পারত না। এবার তাদের বিনা চাষের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করায় আগ্রহী হয়েছে। আমরা ৮০০ জন কৃষকের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করি। নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জের ছিল। বাস্তবায়ন করেছেন আমাদের কৃষক ও উপ-সহকারী কৃষি অফিসাররা। গত বছর ৬২ হেক্টরের স্থলে এবার ১৬৮ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, সরিষার চাষ নিয়ে কৃষকদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। গতবার জেলার ১৭ উপজেলার ৮ হাজার ৭৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এবার তা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫৫০ হেক্টরে। আমাদের কৃষক ও মাঠ কর্মকর্তাদের আন্তরিক কার্যক্রম ভালো ফল দিয়েছে। এতে ভোজ্য তেলের সংকট কমবে। আমাদের অর্থনীতিতে নতুনমাত্রা যোগ হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর