জীবন বাজি রেখে আগুন নিভিয়ে এখন নিজ জীবন সংকটাপন্ন গফরগাঁও ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রেজাউল করিমের। কোমড়ের হাড় এমনভাবে ভেঙেছে যে, স্বাভাবিক জীবনে ফেরা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
আহত রেজাউল করিম ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগে প্রায় দুই সপ্তাহ চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরেছেন।
স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়ের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। পরিবারের দু’চোখভরা স্বপ্ন এখন হাহাকারে পরিণত হয়েছে।
জানা যায়, গত ৫ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার পাগলা গফরগাঁও থানধীন দত্তের বাজার ইউনিয়নের পাঁচুয়ালি গ্রাম, সহিদুল ইসলামের বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। স্টেশন অফিসার রেজাউল করিম তৎক্ষণাৎ একদল দমকল কর্মী নিয়ে ছুটে যান আগুন নেভাতে।
অল্প সময়ের মধ্যে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে আগুন নেভানোর কাজ শেষে স্টেশন অফিসার রেজাউল করিম ও পাগলা থানার পুলিশ কনস্টেবল আমিনুর রশিদ ধ্বংসাবশেষের ভেতরে প্রবেশ করতেই মাটির দেয়ালের নিচে চাপা পড়েন।
সহকর্মীরা গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করেন। স্টেশন অফিসার রেজাউল করিমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে গফরগাঁও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে অফিস কোয়াটারে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্রাম আছেন।
ময়মনসিংহ জেলা ফায়ার স্টেশনের সহকারি পরিচালক মো: মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি। একজন দায়িত্বশীল সাহসী কর্মী রেজাউল করিমের পাশে থাকবে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স। যথাযথ চিকিৎসায় তিনি সেড়ে উঠবেন বলে আমরা আশাবাদী।
তবে চিকিৎসকরা জানান, জীবন সঙ্কট কেটে গেলেও তাকে দীর্ঘসময় বিশ্রামে থাকতে হবে।
তার পরিবারের উদ্বেগ, কবে সুস্থ হয়ে তিনি আবারো কর্মস্থলে ফিরবেন। চিকিৎসার ব্যায়ভার ও সংসার নিয়ে হতবিহ্বল রেজাউল করিম। তিনি বলেন, পারিবারিক স্বচ্ছলতা খুব বেশী না হলেও চাকরির কারণে সংসার নিয়ে চিন্তামুক্ত ছিলাম। মেঝো ছেলে মোজাহিদ করিম বলেন, আমার বাবার সুস্থতা স্বাভাবিক জীবন নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
স্ত্রী মুর্শিদা খাতুনের আহাজারি এই দুর্ঘটনা স্বামীকে পঙ্গু করে দিলে পরিবারের সদস্যেদের নিয়ে তিনি কোথায় দাঁড়াবেন। তাই স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের নিকট আবেদন জানান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল