ধনবাড়ীতে এবার সরিষার ফলন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং দেশে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা আগ্রহ করে সরিষা চাষ করেছেন।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে উপজেলার মাঠজুড়ে সরিষা খেতের দেখা মিলেছে। মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের মনোরম দৃশ্যে চোখ জুড়িয়ে যায়। রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হয়েছে এবার। কৃষকরা আশা করছেন ফলনে লাভবান হবেন। ফলে তাদের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ করায় ফলন কম হতো এবং উৎপাদনে সময় বেশি লাগতো। বর্তমানে উচ্চফলনশীল জাত আসায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। কম জীবনকালের বারি-১৪ জাতের সরিষা ৮০-৮৫ দিনেই ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় দেড় মেট্রিক টন। সরিষা চাষ করে ওই জমিতে বোরো আবাদ করে চাষিরা। সরিষা খেতে বোরো চাষে সারও কম লাগে এবং ফলন ভালো হয়।
কৃষি অফিসের তথ্য অনুসারে, উপজেলায় ১০ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করছেন চাষিরা। ধান চাষের পর জমি পতিত থাকে। পতিত জমিতে এ মৌসুমে সরিষা আবাদে ৫০০ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও ৫৬৩ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করেছেন কৃষকরা। গতবার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছিল। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি হয়েছে। সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে দেওয়া হয়েছে পরামর্শ ও সরকারিভাবে প্রণোদনায় বীজ-সার।
মুশুদ্দি কামারপাড়া গ্রামের কৃষক আনছার আলী বলেন, আগে একটি জমিতে শুধু ধান আবাদ করতাম। ধান আবাদ শেষে জমি পতিত থাকতো। ভোজ্য তেলের দাম বাড়ায় ধান আবাদের পাশাপাশি মাঝখানের সময়টা সরিষা চাষ হচ্ছে। সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে বারি ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছি।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দুই ফসলি জমিতে এখন তিন ফসল আবাদ করছেন কৃষকেরা।
দরিচন্দ্রবাড়ীর কৃষক আরিফুর রহমান বলেন, সরিষায় ভালো ফলন আশা করছি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া, পোকা-মাকড় ও রোগবালাই আক্রমণ হয়নি। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ১১ বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের আবাদ করেছি। কোনো ধরণের ক্ষতি না হলে লাভবান হতে পারবেন বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, এ অঞ্চলের মাটি সরিষা চাষের উপযোগী। এলাকায় আবাদ বাড়ছে। অন্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভবান হওয়ায় কৃষরাও আগ্রহী হচ্ছে। কৃষকদের নানাভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আগামী বছর আবাদ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল