পৌষের কনকনে শীত আর হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে লালমনিরহাট। নদ-নদী ভরা হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রা আরও নেমে যাওয়ার শঙ্কা আছে। সব মিলিয়ে অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে উত্তরের এ জনজীবন। শনিবার সকালে লালমনিরহাটে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে কুয়াশা আর জেঁকে বসা হিমেল হাওয়ায় জবুথবু জনজীবন। এরপরও বসে নেই দিনমজুর ও কৃষক-শ্রমিকরা। জীবিকার তাগিদে মাঠে নেমেছেন তারা। এছাড়া ছিন্নমূল মানুষরা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
শীতের তীব্রতা আর শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে লালমনিরহাট শহরে মানুষের সমাগম কমে গেছে। কাজ ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। কমে গেছে যানবাহন চলাচল। হিমালয়ের বরফ বাতাসে শীত যেন আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছে মানুষসহ পশুপাখিকে। কুয়াশাও পড়ছে বৃষ্টির মতো।
এই শীতে খেটে খাওয়া মানুষরা আছেন চরম বিপদে। ২-৩ দিন ধরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এবং বিকেল ৪টার পর থেকে রাতভর ঘন কুয়াশা ঝরছে এ অঞ্চলে। রাত যতই গভীর হয়, কুয়াশার মাত্রাও ততই বাড়তে থাকে। বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতে থাকায় রাস্তায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে মারাত্মকভাবে। বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা, ঘটছে প্রাণহানিও।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার সাথে হিমেল বাতাসে মানুষ সাধারণ কাজকর্ম করতে পারছে না। শহরেও রিকশা-ভ্যান চালকরা একটু পর পর হোটেল কিংবা চায়ের দোকানে চুলার কাছে গিয়ে হাত শেকে নিচ্ছেন। শিশু-বৃদ্ধরা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। দিনভর ঘরের মধ্যে গায়ে কাঁথা-কম্বল জড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। খড়কুটো জালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন অনেকেই।
অন্যান্য বছর ডিসেম্বরের শুরু থেকে এ জেলায় শীতের তীব্রতা বাড়লেও এ বছর শীত নেমেছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে। বিশেষ করে গত দু’দিন ধরে হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশা এ জেলার মানুষকে কাহিল করে দিয়েছে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষ।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান, রংপুরসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা ৮ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আরও দুই-তিনদিন থাকতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/এএম