শিরোনাম
রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অর্থনৈতিক কূটনীতি

সমৃদ্ধির পথে পৌঁছার প্রকৃত পথ

রাজনীতি আর কূটনীতি একে অন্যের পরিপূরক হয়ে বিরাজ করছে হাজার হাজার বছর ধরে। রাষ্ট্রনীতিতে কূটনীতির বিশিষ্ট ভূমিকা ছিল প্রাচীন ও মধ্যযুগেও। আধুনিক যুগেও তা সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। বলা বাহুল্য, সূচনালগ্ন থেকে কূটনীতিতে রাজনৈতিক স্বার্থের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। কূটনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রভাব বলয় সৃষ্টির প্রয়াস চালানো হয়েছে প্রায় প্রতিটি দেশের পক্ষ থেকে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর মার্কিন-সোভিয়েত স্নায়ুযুদ্ধের কালে রাজনৈতিক কূটনীতি দুনিয়াজুড়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে। স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের পর বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে ও একবিংশ শতাব্দীতে রাজনৈতিক কূটনীতির বদলে অর্থনৈতিক কূটনীতি বিশ্বের রাষ্ট্রব্যবস্থার অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক কূটনীতির বদৌলতে চীনের পক্ষে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হওয়া সম্ভব হয়েছে। পুঁজিবাদ তার আগ্রাসী চেহারা নমনীয় করে তুলতে বাজার অর্থনীতির তত্ত্ব হাজির করেছে; বাড়িয়েছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা। চীনের মতো সাম্যবাদী তত্ত্বের দেশও বাজার অর্থনীতির কান্ডারিতে পরিণত হয়েছে। একসময় যে দেশটি ‘রাজনীতি রপ্তানি’তে সদা উন্মুখ থাকত তারা রাজনীতিকে চুলোয় রেখে কীভাবে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় সে প্রয়াস চালাচ্ছে। বাংলাদেশও তার সমৃদ্ধির জন্য অর্থনৈতিক কূটনীতি প্রাধান্য দিচ্ছে যুগের চাহিদা ভেবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব মুক্তিযুদ্ধে দুই দেশের যোদ্ধাদের রক্তের আখরে লেখা থাকলেও চীনের সঙ্গে রমরমা বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়েছে ‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’ বাস্তবতা মনে রেখে। বাংলাদেশ ফরেন অফিস একাডেমির নতুন ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক কূটনীতির বদলে অর্থনৈতিক কূটনীতির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন নিপুণভাবে। কূটনীতিকদের উদ্দেশে বলেছেন, রাজনৈতিক কূটনীতি নয় অর্থনৈতিক কূটনীতির পথে এগিয়ে যেতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য করে, সবার সঙ্গে মিলে কীভাবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করা যায়, কীভাবে অন্যকে সহযোগিতা করা যায়, একে অন্যের সহযোগিতার মাধ্যমে কীভাবে শান্তি আনা যায় সেভাবে কূটনীতি চালাতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সময়ের প্রেক্ষাপটে খুবই প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যের দাবিদার। মধ্য আয় ও উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কূটনীতি হতে পারে বাংলাদেশের পাথেয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর