জুলাই গণ অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে রোডমার্চ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গণ অভ্যুত্থানকালের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচারও দাবি করেছেন তারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বুধবারের সুশৃঙ্খল কর্মসূচিতে অংশ নেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। একই দিন আইন উপদেষ্টা বলেছেন, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে গণহত্যা ঘটেছে তার নির্দেশদাতা হিসেবে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে করা সম্ভব। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গণ অভ্যুত্থানে সারা দেশে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে যেসব হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করা হয়েছে তা ৩১ আগস্টের মধ্যেই প্রত্যাহার করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের ফসল হিসেবে। দেশ কাঁপানো ৩৬ দিনের গণ অভ্যুত্থানে কর্তৃত্ববাদীরা তাদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হত্যা করেছে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী ও অন্যান্য আন্দোলনকারীকে। গণরোষ ঠেকাতে ক্ষমতায় থাকতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি হত্যার বিষয়ে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ প্রেক্ষাপটে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার সব পক্ষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতা হারানো শাসকগোষ্ঠীর পক্ষেও তা অস্বীকারের সুযোগ নেই। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে শুধু জুলাই গণ অভ্যুত্থান নয়, গত পৌনে ১৬ বছরের প্রতিটি হত্যাকাণ্ড বিচারের আওতায় আনা উচিত। তবে তদন্ত ও বিচারের নামে প্রহসন যাতে না হয় তা দেখাও সরকারের দায়িত্ব। ভবিষ্যতে যাতে দেশে কোনো কর্তৃত্ববাদী শাসকের আবির্ভাব না হয়, তা নিশ্চিত করতেই সঠিকভাবে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দায় নির্ধারণের প্রয়োজন। বাংলাদেশে রাষ্ট্রযন্ত্রকে পৈতৃক সম্পত্তি ভাবা প্রতিটি সরকারের মজ্জাগত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ অভ্যাস দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। দুর্নীতি মহিরুহ আকার ধারণ করেছে, অনিয়ম নিয়মে পরিণত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার যেহেতু অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার প্রতি নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ, সেহেতু রাষ্ট্র সংস্কারে তারা অন্যায় অনিয়ম করার সব ফাঁকফোকর বন্ধ করবেন এটিই সময়ের দাবি।