সাপ পুষলে সাপের ফণায় জীবন দিতে হয়। এটি কিংবদন্তি ছড়াকার ফারুক নওয়াজের সাড়ে চার দশক আগে লেখা একটি ছড়ার পঙ্ক্তি। দেখেশুনে মনে হচ্ছে, পাকিস্তান যেন সাপ পোষার অনিবার্য পরিণতির দিকে এগিয়ে চলছে। বিশ্বের ‘প্রথম ইসলামি প্রজাতন্ত্র’ পাকিস্তান। এ দেশটি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তান ‘ইসলামি আমিরাত’-এর সঙ্গে। সে সংঘাতের ইতি ঘটেছে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে। কিন্তু তাতে পাকিস্তানের বিপদ কেটেছে কি না, তা বড়মাপে প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। দুনিয়াবাসীর কাছে আফগানিস্তান বা কাবুলের শাসকগোষ্ঠী ‘তালেবান’ নামে পরিচিত। এ পরিচিতিটায় রয়েছে মস্ত বড় বিভ্রান্তি। তালেবান মানে ছাত্র। তবে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীনদের কেউই এখন সহি বা খাঁটি তালেবান নয়। তারা তাদের ছাত্রত্ব ত্যাগ করেছে বহু আগেই। কাবুল যারা শাসন করছে তাদের সন্তান এমনকি নাতিদের তালেবান বলা গেলেও বাস্তবে তারা নিজেরা তালেবান নয়।
আগেই বলেছি তালেবান মানে ছাত্র। ছাত্রদের কাজ পড়াশোনা করা। তবে তালেবান নামের রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তির জন্মদাতা পাকিস্তান। গত শতাব্দীর আশির দশকে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসে সোভিয়েত-সমর্থিত সরকার। সমাজতান্ত্রিক ধ্যানধারণায় বিশ্বাসী ছিল তারা। এ সরকার ক্ষমতায় এসেই ভূমি সংস্কারে হাত দেয়। জমিদার-মহাজন যাদের বেশির ভাগের পরিচয় ছিল পীর হিসেবে, তাদের কাছ থেকে জমি কেড়ে কৃষকের মাঝে তা বিলিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। এমন কর্মসূচি জনপ্রিয় হওয়ারই কথা। কিন্তু মাঠপর্যায়ে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী সংগঠন না থাকায় এ বিষয়ে জনমত গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই জেঁকে বসায় ভূমি সংস্কার বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়ায়। ধর্ম ব্যবসায়ী পীর সাহেবরা নিজেদের আধিপত্য ও জমিদারি রক্ষায় গড়ে তোলেন প্রতিরোধ বাহিনী। যা মুজাহিদ বাহিনী নামে পরিচিতি লাভ করে। আমেরিকা, সৌদি আরব ও পশ্চিমা দেশগুলোর মদত পেয়ে পাকিস্তান মুজাহিদিনদের অস্ত্র সরবরাহ করে ও প্রশিক্ষণ দেয়।
একপর্যায়ে আফগান মুজাহিদিনরা বেশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় পপি চাষ হতো। তা দিয়ে তৈরি হতো হেরোইন। সেই হেরোইন পাচার হতো বিভিন্ন দেশে। মুজাহিদিন নেতারা মাদক কারবারে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন দলের অন্তঃকোন্দলে একপর্যায়ে তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে ওঠে। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত আফগান মুজাহিদিনদের পক্ষে আমেরিকার মদত থাকায় কাবুল সরকারকে রক্ষার তাগিদ অনুভব করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। ক্ষমতাসীন আফগান সরকারকে টিকিয়ে রাখতে তারা সে দেশে সৈন্য পাঠায়। আফগানিস্তানের সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের সম্পর্ক ছিল বরাবরই ভালো। আফগানরা অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নকে বেশি আপন ভাবত। কিন্তু আফগানিস্তানে সোভিয়েত সৈন্য মোতায়েনকে সে দেশের মানুষ ভালো চোখে দেখেনি।
আফগানরা ঐতিহ্যগতভাবে স্বাধীনচেতা জাতি। আড়াই হাজার বছর আগেও তাদের গর্বিত অস্তিত্বের কথা জানা যায়। গ্রিক ইতিহাসবিদ হেরোডোটাস খ্রিস্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দের প্রথম দিকে অ্যারাকোসিয়া এবং এর আশপাশে বসবাসকারী প্যাক্টিয়ান নামের জনগোষ্ঠীর কথা উল্লেখ করেছেন। যারা আজকের পশতুন বা আফগান জাতির পূর্বপুরুষ। আরব মুসলমানরা সপ্তম শতাব্দীতে আফগানিস্তান জয় করে পশতুনদের কাছে ইসলাম প্রচার করে। পশতুনরা সে সময় ছিল বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। তারা দলে দলে ইসলামের ছায়ায় আশ্রয় নেয়। দশম শতকের প্রথম দিকে লেখা আরবি ইতিহাসে পশতুনদের আফগান নামে উল্লেখ করা হয়। আফগানিস্তান দশম শতকেই গজনভি সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। তারপর এ দেশটি ঘুরি, তৈমুরি, মোগল, হোতাকি, দুররানি ও শিখদের অধীনে শাসিত হয়।
১৮৩৯ সালে শুরু হয় প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ। এ সময় ব্রিটিশ বা ইংরেজদের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় বাহিনী আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায়। দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে ১৮৪২ সালে ব্রিটিশরা পরাজিত হয়। এটি ছিল ব্রিটিশদের জন্য লজ্জার ঘটনা। এ লজ্জা থেকে মুক্তি পেতে শুরু হয় ১৮৭৮ সালের দ্বিতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ। ব্রিটিশরা আফগানদের অন্তঃকোন্দলের সুযোগ নিয়ে আফগানিস্তানে অভিযান চালায়। ইংরেজরা আফগানিস্তান দখলে ব্যর্থ হলেও তাদের মিত্র আমির আবদুর রহমান খানকে কাবুলের সিংহাসনে বসাতে সফল হয়। ১৮৮০ সালে গন্ডামাক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে আফগানিস্তান তাদের সীমান্তবর্তী এলাকার নিয়ন্ত্রণ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের হাতে তুলে দেয়। আফগানিস্তানে নিজেদের ভূরাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ হওয়ায় ব্রিটিশরা সে দেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়।
১৮৯৩ সালে মর্টিমার ডুরান্ডকে ভারতবর্ষের ব্রিটিশ সরকার কাবুলে পাঠায়। উদ্দেশ্য ছিল আমির আবদুর রহমান খানের সঙ্গে ব্রিটিশশাসিত ভারতের সীমা নির্ধারণ করা। একই সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর করা। ওই বছরের ১২ নভেম্বর ডুরান্ড লাইন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির ফলে ব্রিটিশরা আফগানিস্তানের কাছ থেকে পাওয়া ভূখন্ড নিয়ে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ নামে একটি নতুন প্রদেশ গঠন করে। যা এখন খাইবার পাখতুনখাওয়া নামে পরিচিত।
আফগানরা কখনো ডুরান্ড লাইনকে স্বীকার করেনি। কারণ এটা পশতুন জাতি-অধ্যুষিত এলাকাকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে। চুক্তির পর থেকে পশতুনদের একাংশের বসবাস ডুরান্ড লাইনের আফগানিস্তান অংশে। অন্য অংশের অবস্থান হয় তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মধ্যে। জার সম্রাটদের আমল থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্ক ছিল ঘনিষ্ঠ। অন্যদিকে ব্রিটিশরা রাশিয়ানদের দেখত বাঁকা চোখে। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনামলে সম্ভাব্য রুশ হামলার ভয়ে তারা আফগানিস্তানের কৌশলগত একটি অংশ দখল করে। আফগানরা যোদ্ধা জাতি হওয়ায় ভারতবর্ষের ব্রিটিশ বাহিনীতে ব্যাপক হারে আফগানদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর ফলে ব্রিটিশ দখলকৃত এলাকার মানুষ মানসিকভাবে কাবুলের প্রতি আনুগত্য পোষণ করলেও বৈষয়িক কারণে বড় মাপে কখনো ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হওয়ার চেষ্টা করেনি।
১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ ভারত ও পাকিস্তান নামে বিভক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। যে ডুরান্ড লাইন ছিল আফগানিস্তান ও ব্রিটিশ ভারতের সীমান্ত, তা পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের সীমান্তে পরিণত হয়। ডুরান্ড লাইন আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্ত হিসেবে স্বীকৃত হলেও আফগানরা তা কখনো স্বীকার করেনি। আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট দাউদ খান জোরালোভাবে এই সীমান্ত লাইনের বিরোধিতা করেন। এর বিপক্ষে প্রচারযুদ্ধও শুরু করেন তিনি। ২০১৭ সালে আন্তঃসীমান্ত উত্তেজনার সময় তৎকালীন আফগান প্রেসিডেন্ট কারজাই বলেন, আফগানিস্তান দুই দেশের সীমানা হিসেবে ডুরান্ড লাইনকে কখনোই স্বীকৃতি দেবে না। ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসা তালেবানও ডুরান্ড লাইনকে উভয় দেশের সীমানা হিসেবে মানতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কয়েকবার সংঘর্ষেও জড়িয়েছে। সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনাও ঘটেছে। দুই দেশের যুদ্ধাবস্থার পেছনে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বিদ্রোহীদের প্রতি আফগানিস্তানের সমর্থন দায়ী বলে মনে করা হয়। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায়। স্বাক্ষরিত হয়েছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি। এই চুক্তিকে আফগানিস্তানের জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সামরিক শক্তিতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ব্যবধান বিশাল। বিশ্ব সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামরিক সক্ষমতা, জনশক্তি, প্রতিরক্ষা বাজেট ও বিমান শক্তি সব দিক থেকেই পাকিস্তান আফগানিস্তানের চেয়ে বহু গুণ এগিয়ে।
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার সূচকে পাকিস্তান বিশ্বে সামরিক শক্তিতে ১২তম স্থানে। অন্যদিকে আফগানিস্তানের অবস্থান ১১৮তম। পাকিস্তান প্রায় পাঁচ লাখের বেশি সৈন্যের শক্তিশালী বাহিনীর অধিকারী। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে কোনো পূর্ণাঙ্গ নিয়মিত সেনাবাহিনী নেই। তাদের রিজার্ভ বা সক্রিয় বাহিনীর সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোঠায়। প্রতিরক্ষা বাজেটেও দুই দেশের ব্যবধান চোখে পড়ার মতো। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেট প্রায় ৭ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে আফগানিস্তানের বাজেট মাত্র ২৯ কোটি ডলারের। পার্থক্যটা বট গাছ ও দূর্বাঘাসের সঙ্গে তুলনীয়। পাকিস্তানের রয়েছে ১ হাজার ৪০০টির বেশি বিমান। যার মধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিমান, আক্রমণ চালানোর মতো হেলিকপ্টার ও কার্গো বিমান। অন্যদিকে আফগানিস্তানের বিমানসংখ্যা মাত্র ৯টি। স্থলবাহিনীর ক্ষেত্রেও পাকিস্তানের কাছে ট্যাংক, সাঁজোয়া যান, রকেট সিস্টেমসহ আধুনিক অস্ত্রের বিশাল ভান্ডার আছে। আফগান বাহিনী এসব ক্ষেত্রে একেবারে পিছিয়ে।
বিশ্লেষকদের মতে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুর্বল অর্থনীতি এবং বৈদেশিক সহযোগিতার অভাবে আফগানিস্তান প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে শক্তিশালী হতে পারছে না। অন্যদিকে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও তুরস্কের মতো দেশের সহযোগিতায় প্রযুক্তিগতভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
পাকিস্তানের তুলনায় আফগানিস্তান সামরিক শক্তিতে বহু গুণ পিছিয়ে এটি একটি সত্যি। পাশাপাশি মহাসত্যি হলো আফগানরা সেই জাতি যাদের কাছে ব্রিটিশ, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও আমেরিকার মতো তিন পরাশক্তি নাকানিচুবানি খেয়েছে। উনবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের সেরা পরাশক্তি ব্রিটিশরা হার মেনেছে আফগানদের কাছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল সামরিক দিক থেকে সেরা দুই পরাশক্তির একটি, তখন তাদের অপমান স্বীকার করে আফগানিস্তান ছাড়তে হয়েছে। আর দুনিয়ার একমাত্র পরাশক্তি আমেরিকা ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি বলে আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়েছে।
ব্রিটিশ, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান যদি হয় বাঘ বা সিংহের মতো পাকিস্তানের অবস্থান তাদের বিপরীতে নেংটি ইঁদুরসম। পাকিস্তানের জনসংখ্যায় পাঞ্জাবিদের পরেই পশতুনদের অবস্থান। যাদের সংখ্যা সাত কোটিরও বেশি। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখন পশতুনদের নিয়ে গঠিত তেহরিক-ই-তালেবান বা টিটিপির আধিপত্য। আফগানিস্তানের তালেবানপন্থি এ সশস্ত্র সংগঠনটি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে আফগানিস্তানের মতো শরিয়া আইন চালু করতে চায়। শুধু ওই প্রদেশে নয়, পাকিস্তানজুড়েই রয়েছে টিটিপির দাপট।
আমেরিকা ২০২১ সালে তালেবানদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আফগানিস্তান থেকে পালালেও এখন তারা সে দেশের বাগরাম বিমান ঘাঁটিটি ফিরে পেতে চায়। যেখান থেকে চীন, রাশিয়া ও ভারতের ওপর নজর রাখা যায়। তালেবান সরকার সাফ সাফ বলে দিয়েছে আমেরিকাকে তারা বিমান ঘাঁটি করতে দেবে না। মনে করা হচ্ছে আমেরিকার হয়ে আফগানিস্তানে প্রক্সি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল পাকিস্তান। সে যুদ্ধে সুবিধা করতে না পেরে তারা আমেরিকার মিত্র কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় আফগানিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেছে। এ যুদ্ধবিরতির ফলে যুদ্ধ থেমে যাওয়ায় আফগানিস্তান পাকিস্তানি হামলার ঝামেলা থেকে আপাতত রক্ষা পেয়েছে। এটি তাদের একটি অর্জন। কিন্তু এর বিপরীতে পাকিস্তানের অর্জন প্রায় শূন্য। কারণ দুই দেশের যুদ্ধবিরতি হলেও তার সঙ্গে পাকিস্তানি তালেবান টিটিপির কোনো সম্পর্ক নেই। তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে লড়াই চালাচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে। কোনোক্রমে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে শরিয়া আইন চালু হলে সেখানে পাকিস্তানি শাসন ধরে রাখা যাবে কি না, সন্দেহ। কারণ ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় বাঙালি মুসলমানদের নিরঙ্কুশ সমর্থন থাকলেও খান আবদুল গাফফার খানের নেতৃত্বে পশতুনদের বড় অংশের কোনো সমর্থন ছিল না। বালুচরা তো পাকিস্তানি আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়ছে শুরু থেকে। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আমেরিকার সেবাদাস হয়ে পাকিস্তান যে তালেবান বাহিনী তৈরি করেছিল, সে সাপ এখন পাকিস্তানকে দংশনের জন্য উন্মুখ।
♦ লেখক : সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইমেইল : [email protected]