রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

শান্তি কামনায় ঈদ উদযাপিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

শান্তি কামনায় ঈদ উদযাপিত

সংযমের মাস রমজানের বিদায়লগ্নে গুলশানে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলায় দেশি-বিদেশি ২০ প্রাণ ঝরে যাওয়ার শোক বুকে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার অন্য এক আবহে ঈদ উদযাপন করেছে বাংলাদেশের মানুষ। মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের নামাজের প্রতিটি জামাত থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই দেশে সম্প্রীতি আর সৌহার্দ্য বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়। দেশের মানুষের শান্তি ও দেশের স্থিতিশীলতা কামনার পাশাপাশি জঙ্গি, সন্ত্রাসসহ সব ধরনের অপতত্পরতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ঈদগাহ ও মসজিদগুলোতে ইমামরা বিশেষ খুতবা পাঠ করেন। সকালে ঈদের নামাজের আগে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতের মাঠের অনতিদূরে পুলিশের ওপর হামলা চালায় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। জঙ্গিদের বোমা হামলা ও গোলাগুলিতে নিহত হন দুই পুলিশ সদস্য ও এক গৃহবধূ।

এ খবরে উৎকণ্ঠাও ছড়ায় দেশবাসীর মনে। বরাবরের মতো এবারও রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন, সরকারি ও সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশ নেন। ঈদের নামাজ শেষে দেশের শান্তি ও উন্নয়ন, জনগণের কল্যাণ এবং মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর ঐক্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত শেষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সবার সঙ্গে কোলাকুলি করেন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় পাঁচটি ঈদ জামাত। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় চারটি ঈদ জামাত। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সকাল ৮টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে রাজধানীর ৯৩টি ওয়ার্ডে চার শতাধিক ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। ৭টি বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, বরিশাল ও ময়মনসিংহসহ দেশের সব জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও প্রতিটি গ্রামে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয়েছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথকভাবে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের প্রতিনিধি এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো কয়েক দিনব্যাপী ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করে। ঈদের ছুটিতে মহানগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাজধানীর অর্ধ কোটির বেশি মানুষ স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে গ্রামে চলে যান।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর