ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, সত্যিকার অর্থে এই সংসদ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ফসল। তবে এই সংসদের পথচলা কখনো মসৃণ ছিল না। এই সংসদ বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কখনো আঘাত এসেছে, বাতিল হয়েছে, সংসদকে ঠুঁটো জগন্নাথ করা হয়েছে। আজকে আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে অসাম্প্রদায়িক চেতনা, মান ও গুণসম্পন্ন সংসদ গড়তে হবে।
জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে চলমান বিশেষ অধিবেশনে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪৭ বিধিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, এই সংসদের আরেকটি কালো অধ্যায় জিয়াউর রহমানের আমলে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি হয়। অবৈধ ক্ষমতাধারী জিয়াউর রহমান সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী করে সংবিধান পাল্টে দেন, অধিকার ক্ষুণ্ণ করেন। এরপর বিএনপি ক্ষমতায় এসে জামায়াতকে নিয়ে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকীকরণের দিকে জোর দেন। সংবিধানের চার মূলনীতি ক্ষুণ্ণ হয়। বিএনপি ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে উৎসাহিত করে, ধর্মের নামে সহিংসতা চালু করা হয়।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি আরও বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখছি আমাদের পার্লামেন্টের মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এখানে এক ঘণ্টার বক্তব্যের মধ্যে মাত্র তিন মিনিট সাধারণ মানুষের কথা হয়। বাকি কথা হয় দলের নেতার কথা, নিজের কথা। এর বাইরে সংসদ এগোতে পারছে না। তিনি গতকাল প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, রাষ্ট্রপতি বলেছেন সংসদে এমন অবস্থা হয়েছে এখানে আইনজীবী না থাকার কারণে ভবিষ্যতে আইন প্রণয়ন করতে তাদের বাইরে থেকে আনতে হবে। মেনন বলেন, আজকে রাজনীতি ও নির্বাচনের বাণিজ্যায়নের ফলে সংসদের চরিত্র পাল্টে যাচ্ছে। নতুন চেহারা দাঁড়িয়েছে। আজকে ব্যবসায়ীর সংখ্যা সংসদে অনেক বেশি। ফলে ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়লে তাদের স্বার্থে সংসদের পরিস্থিতি পাল্টে যায়। বঙ্গবন্ধু বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু আজকে বৈষম্যের পাহাড় গড়ে উঠেছে বাংলাদেশে, তারই প্রতিচ্ছতি দেখতে পাই এই সংসদে। আজকে প্রয়োজন সংসদের সংস্কার করা। সংবিধান পর্যালোচনা প্রয়োজন।