বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্বস্তি মিলছে না চিনিতে এক লাফে ১৬ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

দাম এত বেড়েছে যে, মিঠা চিনি এখন ভোক্তার কাছে তেতো ঠেকছে। তারা এখন মূল্য সমন্বয় করতে চিনি খাওয়া কমিয়ে দিচ্ছেন। রাজধানীর মিরপুরের এক গৃহিণী জানান, আগে তার পরিবারে তিন প্যাকেট চিনি লাগলেও দাম বাড়ায় এখন দুই প্যাকেটেই সামাল দিচ্ছেন। এদিকে মিল মালিকদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনার পর প্যাকেটজাত চিনির দাম আরেক দফা বাড়ানোর প্রস্তাব হয়েছে। এবার এক লাফে প্রতি কেজি খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম ১৬ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। ওই দামেই চিনি বিক্রির জন্য মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ট্যারিফ কমিশন তাদের প্রস্তাবে খোলা চিনির দাম প্রতি কেজি ১০৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রস্তাব করেছে ১২০ টাকা। একইভাবে প্যাকেটজাত চিনির দাম ১০৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রতি কেজি ১২৫ টাকা বিক্রির প্রস্তাব করেছে।

গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ সাংবাদিকদের জানান, ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী চিনি বিক্রির জন্য বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। তবে তারা (মিল মালিকরা) আমাদের এ বিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি।

চিনির দাম সহনীয় রাখতে গত ফেব্রুয়ারিতে পণ্যটি আমদানির ওপর শুল্ক হ্রাস করে প্রজ্ঞাপন জারি করে এনবিআর। এরপরও দাম না কমে দফায় দফায় বেড়েছে। সর্বশেষ গত ৬ এপ্রিল প্রতি কেজি চিনির দাম ৩ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় সরকার। সরকার ঘোষিত পরিশোধিত খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ছিল কেজি ১০৪ টাকা আর পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনির দাম প্রতি কেজি ১০৯ টাকা। তবে এই দামে চিনি বিক্রি না করে উল্টো দাম বাড়ানোর কৌশল অবলম্বন করে মিল মালিকরা। শুল্ক ছাড় বহাল থাকার পরও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে- এই অজুহাতে বাজারে চিনির সরবরাহ কমিয়ে দেয় তারা। সরবরাহ কমে যাওয়ায় সব দোকানে প্যাকেটজাত চিনি মিলছে না। যেখানে পাওয়া যাচ্ছে সেখানেও দাম পড়ছে প্রতি কেজি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। এ পরিস্থিতিতে চিনির দাম নিয়ে মিল মালিকদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করে ট্যারিফ কমিশন।

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে চিনির দাম বাড়াতে গত ১৭ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। প্রতি কেজি পরিশোধিত খোলা চিনির দাম ১২৫ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম ১৩৫ টাকা প্রস্তাব করে মিল মালিকদের সংগঠনটি। শুল্ক ছাড়ের পরও মিল মালিকদের প্রস্তাবিত মূল্য অযৌক্তিক বলে মেনে নেয়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। শেষে ট্যারিফ কমিশনকে চিনির মূল্য নির্ধারণে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির মূল্য এবং ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চিনি আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান বাণিজ্য সচিব। তিনি বলেন, চিনির জন্য শুল্কহার এখনো বলবৎ রয়েছে। এটা ৩১ মে শেষ হবে। চিনির জন্য শুল্কহার অব্যাহত রাখার জন্য আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে চিঠি পাঠাব। যেহেতু চিনির দাম বেড়েছে, এ জন্য আমরা শুল্কহার আরও কমানোর জন্য সুপারিশ করব।

 

 

সর্বশেষ খবর