শুক্রবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
অনিরাপদ ফেসবুক

মার্কিন সিনেটে ক্ষমা চাইলেন জাকারবার্গ

প্রতিদিন ডেস্ক

মার্কিন সিনেটে ক্ষমা চাইলেন জাকারবার্গ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে শিশুসন্তানরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউএস সিনেটে পাঁচ শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিপ্রধানদের নিয়ে শুনানি হয়েছে। এই উত্তপ্ত শুনানিতে অভিভাবকদের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ। সূত্র : বিবিসি। অনলাইনে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে বাড়তে থাকার উদ্বেগ নিয়ে মার্কিন হাউস কমিটির সামনে গতকাল সাক্ষ্য দেওয়ার সময় তিনি এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন। মার্কিন অঙ্গরাজ্য ওয়াশিংটনে এই শুনানি হয়। মার্কিন জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো অনলাইনে যৌন হয়রানি থেকে শিশুদের রক্ষায় যথেষ্ট কাজ করছে না। যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটি’র এ শুনানিতে যোগ দেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক, ডিসকর্ড ও স্ন্যাপচ্যাট প্রধানরা। শুনানিতে যোগ দিতে সম্মত হওয়ার আগে একটি সমন পান এক্স-এর সিইও লিন্ডা ইয়াকারিনো, ডিসকর্ড প্রধান জেসন সাইট্রন ও স্ন্যাপের প্রধান ইভান স্পিগেল। এ ছাড়া, শুনানিতে স্বেচ্ছায় সাক্ষ্য দিতে রাজি হন মেটার মার্ক জাকারবার্গ ও টিকটকের প্রধান নির্বাহী শৌ জি চিউও। শুনানি পর্বে প্যানেলের ডেমোক্র্যাটিক অংশের চেয়ারম্যান ডিক ডার্বিন ও রিপাবলিকান অংশের প্রধান লিন্ডজি গ্রেহাম এ পরিকল্পনা ঘোষণার সময় বলেন, ‘মা-বাবা ও শিশুরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ দেখতে চান।’ এর আগে মেটার এক সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মী মার্কিন কংগ্রেসে বলেছিলেন, ‘তিনি বিশ্বাস করেন, ইনস্টাগ্রাম কিশোর-কিশোরীদের যৌন হয়রানি থেকে রক্ষায় যথেষ্ট কাজ করছে না।’ মার্কিন আইনপ্রণেতারা বলেছিলেন, এআই ব্যবহার করে তৈরি নকল ছবিসহ অনলাইনে শিশুদের নগ্ন ছবি শেয়ার করার মতো ছবি দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে। গতকালের শুনানিতে ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকের মালিক জাকারবার্গ সিনেটে উপস্থিত অভিভাবকদের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কারও যাওয়া উচিত না’।

এ সময় তিনিসহ টিকটক, স্ন্যাপ, এক্স ও ডিসকর্ডের প্রধান কর্মকর্তাদের প্রায় চার ঘণ্টা ধরে উভয় পার্টির সিনেটররা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আইনপ্রণেতারা তাদের কাছে জানতে চান, অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষার জন্য তারা কী করছেন? এ নিয়ে মেটা প্রধান জাকারবার্গকে সবচেয়ে বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তাকে তার পেছনে বসে থাকা পরিবারগুলোর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। তখন তিনি উঠে দাঁড়ান এবং শ্রোতাদের দিকে ফিরে বলেন, ‘আপনারা যা কিছুর মাঝ দিয়ে যাচ্ছেন, তার জন্য আমি দুঃখিত। এটি ভয়ানক। আপনাদের পরিবার যে যন্ত্রণার মাঝ দিয়ে গেছে, তা আর কোনো পরিবারের ভোগ করা উচিত নয়।’ উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কন্টেন্ট দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অনেক কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যা করছে বলে অভিযোগ তোলেন অভিভাবরা। এদিকে এই শুনানির পর অভিভাবকরা বিক্ষোভ করেছেন। এর কারণ সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি বিশ্লেষক ম্যাট নাভারা বলেন, এই শুনানিটি অনেকগুলো শোডাউনের অনরূপ, যেখানে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজনীতিবিদের গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডিংয়ের পাশাপাশি মার্ক জাকারবার্গের ক্ষমা চাওয়ার মতো নিখুঁত ছবির সুযোগ। এই প্ল্যাটফর্মগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য উভয়পক্ষের সিনেটররা একমত হয়েছেন বটে, কিন্তু এরপর কী হবে, সেটা এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে। আমরা এই শুনানিগুলো বারবার দেখেছি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, তারা এখন পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য নিয়ম তৈরি করতে পারেনি। আমরা এখন ২০২৪ সালে বসবাস করছি এবং সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কার্যত কোনো নিয়ম নেই।’

 

সর্বশেষ খবর