ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়েছে বলে মনে করেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর।
ভারতের অাসাম রাজ্যের গুয়াহাটিতে ‘ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ডায়লগ’এর অষ্টমপর্ব অনুষ্ঠানে রবিবার তিনি এসব কথা বলেন। আকবর বলেন, ‘শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে ৩৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছিল, অন্যদিকে মোদির বাংলাদেশ সফরে ২২টি চুক্তি হয়েছিল। এর মধ্যে ১৩টি চুক্তির চরিত্রই ছিল বাণিজ্যিক এবং এর মধ্যে দিয়ে দুই দেশের বাণিজ্যিক বৃদ্ধি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্মার্ট সিটির উন্নয়ন ও কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরিতে ভারত সরকার বাংলাদেশকে সবদিক থেকে সহায়তা করবে বলেও আশ্বাস দেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। দুই দেশের মধ্যে কানেক্টিভিটি বাড়াতে বাস পরিসেবার পাশাপাশি আরও নতুন তিনটি রেল লাইন চালু করা হবে বলেও জানান তিনি। একইসঙ্গে নদীর নব্যতা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ওপরও জোর দেন এম জে আকবর।
আকবর ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, অাসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সর্বানন্দ সনোয়াল, দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি, বাংলাদেশের সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ, ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ক্যাপ্টেন অলোক বনসালসহ দুই দেশের কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে বাংলাদেশ-ভারত পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্যই দুই দেশের সরকারের কাছেই সম্পর্ক জোরদার করার আর্জি রাখেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ভারতের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশের পণ্য যাতে ভারতের বাজারে প্রবেশ করতে পারে সেই বিষয়টি দেখার জন্য ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদির সবকা সাথ, সবকা বিকাশ (সকলের সঙ্গে সকলের উন্নয়নে) স্লোগানকে উদ্ধৃত করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের কাছে শাহরিয়ার আলম আহ্বান জানান, তারা যেন দুই দেশের সর্বাধিক উন্নয়নে নতুন নতুন চিন্তাধারা নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হয়।
অনুষ্ঠানে দারিদ্রতা ও সন্ত্রাস বাংলাদেশ-ভারত এই দুই দেশেরই কমন শত্রু বলে উল্লেখ করে অাসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের শত্রু, সমস্যা এবং হুমকি এক। আমাদের দুই রাষ্ট্রকেই একযোগে এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আমাদের কমন শত্রুই হল দারিদ্রতা-এর বিরুদ্ধে আমাদের একসঙ্গে লড়াই করতে হবে। আমাদের দুই দেশের কাছেই সন্ত্রাসবাদ বড় হুমকি, যেটা গোটা বিশ্বের কাছেও হুমকির কারণ। আমাদের এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং একযোগে কাজ করতে হবে’।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যক আদান-প্রদান বাড়াতে সমস্ত ব্যারিয়ার তুলে দেওয়ার পক্ষেও মত দেন সনোয়াল। তাঁর মতে, দুই দেশেরই ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এক। সর্বোপরি ঐতিহাসিক স্থলসীমান্ত চুক্তি দুই দেশের সম্পর্কে নতুন প্রাণ পেয়েছে।
গুয়াহাটিতে রবিবার থেকে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান যৌথভাবে আয়োজন করে আসমের স্টেট ইনোভেশন অ্যান্ড ট্রান্সফর্মেশন আয়োগ (এসআইটিএ), মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইন্সিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিস এবং বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিস (বিএফআরএস) এবং ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন (আইএফ)।
বিডি-প্রতিদিন/০৩ জুলাই, ২০১৭/মাহবুব