পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের একক আধিপত্যের ভাঙন ঘটিয়েছে কাতারের দোহা ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। সেটিই এখন বন্ধ করে দিতে চায় সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট।
গত ৫ জুন সৌদি আরব, মিশর, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক ও ভ্রমণ সম্পর্ক ছিন্ন করে। পরে অবরোধ তুলে নিতে ১৩টি শর্ত দেয় যার মধ্যে অন্যতম- আল জাজিরা বন্ধ করতে হবে।
আল জাজিরা নেটওয়ার্ক মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তারা কাতারের রক্ষণশীল শত্রুরা যে এটি বন্ধ করতে চাইবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বশ্যতা স্বীকার করবে এমন কোনো লক্ষণ কাতারের মধ্যে নেই। তবে শর্ত মানার সময়সীমা কিংবা যুদ্ধের কারণে কাতার তার অবস্থান বদল করলেও করতে পারে। ফলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে আল জাজিরাও। যা-ই ঘটুক না কেন, তার সমস্ত কৃতিত্ব আল জাজিরারই। সম্প্রচার শুরুর ২১ বছরেও এটি এখনো ক্ষমতাসীনদের জন্য রীতিমতো ভয়ের কারণ। খুব কম গণমাধ্যমই এমন প্রভাবশালী।
আল জাজিরা কোনো সাধারণ গণমাধ্যম নেটওয়ার্ক নয়। ১৯৯৬ সালে সম্প্রচার শুরুর পর থেকেই নিজের ব্যতিক্রমী অবস্থান ধরে রেখেছে আল জাজিরা। আরব বিশ্বের গণমাধ্যম শিল্পে এটি রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে। ২০১০ সালে আরব বিশ্বে রাজনৈতিক বিপ্লবেও এটি অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে। আল জাজিরা শোষিত-নীপিড়িত-প্রান্তি মানুষদের কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে। যাদের বিপ্লববিরোধী পক্ষগুলো সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। সোদি নেতৃত্বাধীন জোটের মূল মাথা ব্যথার কারণ, ইতিহাসের সঠিক পথে হাঁটছে কাতার। এজন্যই তারা আল জাজিরা বন্ধের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
গার্ডিয়ানে প্রকাশিত ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিউ মাইলসের নিবন্ধ অবলম্বনে (সংক্ষেপিত)
বিডি প্রতিদিন/৪ জুলাই, ২০১৭/ফারজানা