বাংলাদেশ সার্বভৌম সম্পদ তহবিল গঠনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে পড়ে থাকা টাকা থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে এ তহবিল গঠন করা হবে। প্রতি বছর ২ বিলিয়ন ডলার করে জমা হবে এ তহবিলে। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া মন্ত্রিসভা বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০১৬, বাংলাদেশ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস আইন, ২০১৭ এবং কৃষি কাজে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১৭-এর খসড়াও নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ সার্বভৌম সম্পদ তহবিল গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এ তহবিল গঠিত হলে সরকার এর অর্থ জনস্বার্থে যে কোনো কাজে ব্যবহার করতে পারবে। এ তহবিল গঠনে আইন তৈরির পাশাপাশি কাঠামোও তৈরি করা হবে। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে এ তহবিল গঠন করা হবে। আমাদের রিজার্ভ যদি ৩০-৩২ বিলিয়ন ডলারের হয়, ওখান থেকে আমরা ২ বিলিয়ন ডলার নিলে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না। অনেক দেশেই এ ধরনের তহবিল আছে। এটা আমাদের বড় প্রয়োজন হয় যখন বিদেশিদের সঙ্গে ম্যাচিং ফান্ড করি, আমাদের ডলার দিতে হয়।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ তহবিলের বহুমুখী ব্যবহার হতে পারে। সরকার জনস্বার্থে যে কোনো বিনিয়োগে এর অর্থ ব্যবহার করতে পারবে। যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে কাজে লাগানো যাবে। তিনি বলেন, সার্বভৌম সম্পদ তহবিল গঠনের এ প্রস্তাব পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে আইন ও কাঠামো তৈরির পর। আর আইন হওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।এ ছাড়া মন্ত্রিসভা বৈঠকে আইএমও কর্তৃক প্রবর্তিত ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য কন্ট্রোল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অব শিপ ব্যালাস্ট ওয়াটার অ্যান্ড সেডিমেন্টস (বিডব্লিউএম), ২০০৪-এর খসড়া অনুসমর্থনের প্রস্তাব এবং আইএমও কর্তৃক প্রবর্তিত ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন দ্য কন্ট্রোল অব হার্মফুল অ্যান্টি ফ্লোয়িং সিস্টেমস অন শিপ (এএফএস), ২০০১-এর খসড়া অনুসমর্থনের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, এ দুই অনুসমর্থনে স্বাক্ষরের ফলে জাহাজের দূষিত ময়লা বর্জ্য সাগরে ফেলা যাবে না এবং জাহাজের নিচের যে অংশ তাকে পরিবর্তন করতে হবে। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হওয়ার প্রক্রিয়া এবং এর ফলাফল সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করেছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আর মানি লন্ডারিং ঝুঁকিতে নেই। বাংলাদেশের অবস্থান এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো।