শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
মেয়রের সঙ্গে এমডির সাক্ষাৎ

বসুন্ধরা গ্রুপ মাটি ধরলে সোনা হয়ে যায় : নাছির

চট্টগ্রামে শুরুতে বিনিয়োগ ১৬ হাজার কোটি টাকা, ৪০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

বসুন্ধরা গ্রুপ মাটি ধরলে সোনা হয়ে যায় : নাছির

আন্দরকিল্লার নগর ভবনে গতকাল বিকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান —বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের স্বার্থেই চট্টগ্রামে ব্যাপক বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান। গতকাল বিকালে আন্দরকিল্লার নগর ভবনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ আগ্রহ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এরই মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে কয়েকটি মেগাপ্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে বিনিয়োগ হবে ১৬ হাজার কোটি টাকা। আর কর্মসংস্থান হবে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মানুষের।

সাক্ষাৎকালে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবসায়িক সাফল্যের ইতিহাস রয়েছে। এই গ্রুপটি ‘মাটি ধরলে তা সোনা হয়ে যায়’ বলেও প্রবাদ রয়েছে। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছাড়াও চট্টগ্রামে কর্মসংস্থানের স্বার্থেই মেয়র হিসেবে বসুন্ধরার প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার তাগিদ আমার রয়েছে। দেশের শীর্ষতম শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে বসুন্ধরা গ্রুপ আবাসন খাত দিয়ে শুরু করে অনেকগুলো খাতে বিনিয়োগ করেছে। চট্টগ্রামেও আরও ব্যাপক বিনিয়োগের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিকে অনুরোধ জানিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান মেয়র।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান। তাদের মাধ্যমে দেশের লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই শিল্প গ্রুপকে চট্টগ্রামেও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা চট্টগ্রামে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়েছেন। আশা করি, তাদের চলমান প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সেখানেও ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ মিলবে।’

সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান বলেন, চট্টগ্রামে আমরা অয়েল রিফাইনারি প্লান্ট এবং বড় আকারের টার্মিনাল নির্মাণ করছি। এতে প্রাথমিকভাবে ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। আমাদের দুটি বিনিয়োগেই ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মানুষের নতুন কর্মসংস্থান হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থান বিনিয়োগ উপযোগী। দেশের বৃহৎ শিল্প গ্রুপ হিসেবে চট্টগ্রামে বিনিয়োগ ও উন্নয়নে বসুন্ধরার উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

চট্টগ্রামের সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন উন্নয়ন এবং সেবায় ‘মাটি ও মানুষের আস্থার শতভাগ পূরণ করবেন’ এমন আশা প্রকাশ করেন বসুন্ধরার এমডি। বসুন্ধরার অর্থায়নে যে কোনো উদ্যোগে মেয়র পাশে থাকবেন বলেও আশাবাদ জানান তিনি।

বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি বলেন, একটি নগর কতটা উন্নত তা অনেকটাই নির্ভর করে সে নগরের যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর। সে মূল্যায়নে চট্টগ্রামের সড়কগুলোর অবস্থা আরও উন্নত হওয়া উচিত। বিশেষ করে বিমানবন্দর রোডসহ নগরের প্রধান সড়কগুলোর সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। চট্টগ্রামে বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সায়েম সোবহান বলেন, বাণিজ্যিক নগরের অন্যতম সমস্যা যানজট। যানজট থাকলে শিল্প গ্রুপগুলো চট্টগ্রামে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাবে। চার মাস আগে বিমানবন্দর থেকে কাজীর দেউড়ি মোড় পর্যন্ত আসতে লেগেছে প্রায় চার ঘণ্টা। তাই বিমানবন্দর সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা প্রয়োজন। আমি মেয়রকে অনুরোধ করব, রাস্তাঘাট দ্রুত সংস্কার করার জন্য। তিনি বলেন, রাস্তার ওপর অনেক দোকান। কিছুটা সমন্বয় করে সংস্কার করা গেলে সড়ক প্রশস্ত করা যায়। মেয়রকে উদ্দেশ করে বসুন্ধরার এমডি বলেন, চট্টগ্রামে এমন ডায়নামিক মেয়র থাকায় আমাদের ভরসা আছে, উনি পারবেন। তিনি বলেন, দেশে অনেক প্রকল্প হয়েছে। সাকসেসফুল কয়টা হয়েছে সেটা দেখতে হবে। আমি অনেক কারখানা দেখেছি শুরু হওয়ার আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের ওপর আল্লাহর রহমত আছে। আমরা যা করেছি ভালোভাবে করেছি। দেশ ও মানুষ যাতে লাভবান হয় সে লক্ষ্য সামনে রেখে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়তে হবে। সবার যাতে বেনিফিট হয় সেই মনোভাব রেখে এগোতে হবে।

সর্বশেষ খবর