শনিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

মদনা টিয়া

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

মদনা টিয়া

টিয়া পাখি। আমাদের সবার খুবই অতি পরিচিত একটি পাখি। অনেকে বাসাবাড়িতে শখের বশে খাঁচায় বন্দী করে টিয়া পাখি পালেন। আবার অনেকেই রাস্তার পাশে বসে টিয়া পাখি দিয়ে পথচারীদের ভাগ্য গণনা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আমাদের দেশে রয়েছে সাত প্রজাতির টিয়া পাখি। এদের মধ্যে একটি প্রজাতির নাম মদনা টিয়া। লাল-বুক ও সবুজ দেহের সুন্দর এই পাখিটি লাল-বুক টিয়া নামেও পরিচিত। এদের ইংরেজি নাম জবফ Breasted Parakeet, Moustached Parakeet. আর বৈজ্ঞানিক নাম psittacula alexandri. পাখিবিশারদরা জানান, বনের সবুজ টিয়ার চেয়ে সামান্য ছোট আকারের বাহারি রঙের পাখি মদনা টিয়া। দৈর্ঘ্য ৩৮ সেন্টিমিটার। ওজন ১০০-১৩০ গ্রাম। এদের পিঠের ওপরের অংশ ঘাস সবুজ। লেজের দিকটা নীলচে সবুজ। একেবারে ডগায় হলদে। পুরুষ পাখির মাথা ও কানের দিকটা বাদামি লাল। গলার নিচে কালো। বুক থেকে পেটের উপরিভাগ লাল। তলপেট পান্না সবুজ, আরও নিচে হলদে সবুজ। ওপরের ঠোঁট বাঁকানো রক্তলাল, আর নিচের ঠোঁট বাদামি কালো। চোখ হলদেটে। পা ও আঙ্গুল কালচে হলুদ। মেয়ে পাখির ঠোঁট কালো। মাথা নীলচে সবুজ। বুকের রং গোলাপি। মদনা টিয়া পাহাড়ি জঙ্গলের, জুমচাষের এলাকা ও চা-বাগানের গাছে গর্ত করে বাসা বাঁধে। ফল, ফুল, ফুলের রস, ফুলকুঁড়ি এদের স্বাভাবিক খাদ্য। তবে ফসল তোলার সময় খাবারের খোঁজে কৃষিখেতে বিচরণ করে। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত এদের প্রজনন সময়। গাছের স্বাভাবিক গর্তে বাসা বাঁধে। বসন্তবাউরী, কাঠঠোকরাদের পরিত্যক্ত গর্তেও ডিম দিয়ে থাকে। ডিম পাড়ে তিন থেকে চারটি।

ডিমের রং সাদা। ২০ থেকে ২৪ দিনে বাচ্চা ফোটে। বাচ্চাগুলো প্রায় দেড় মাস পর উড়তে শেখে। পুরুষ পাখিরা মেয়ে পাখিদের মুখে খাবার তুলে দেয়। সৌল (সেভ আওয়ার আনপ্রোটেক্টের লাইফ)-এর নির্বাহী পরিচালক তানিয়া খান বলেন, মদনা টিয়া আবাসিক পাখি। এরা দলবদ্ধভাবে থাকে। সারা দেশেই এদের দেখা যায়। তবে বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে এদের বেশি দেখা যায়। চিরসবুজ বন, চা-বাগান এবং পাহাড়ের আশপাশে এরা বিচরণ করে থাকে। এরা এখনো আশঙ্কামুক্ত।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর