শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

চরের ৫০০ একর খাস জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার উদ্যোগ

মো. নাসির উদ্দিন, টাঙ্গাইল

চরের ৫০০ একর খাস জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার উদ্যোগ

টাঙ্গাইলের যমুনা নদীতে জেগে ওঠা চরে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন ভূঞাপুর উপজেলায় ৫০২.০২ একর খাস জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য জোর তৎপরতা শুরু করেছে। প্রস্তাবিত প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শুধু টাঙ্গাইল নয় আশপাশের এলাকার শিল্প-বাণিজ্যের সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে। কর্মসংস্থান হবে হাজার হাজার মানুষের।

দেশে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার পলশিয়া মৌজায় ৯৬.৩৪ একর, দোভায়া মৌজায় ৪৫.৪৫ একর, কোনাবাড়ী মৌজায় ৯৭.১৩ একর, পাটিতাপাড়া মৌজায় ৩২.৪০ একর, নাগরগাতি মৌজায় ৮৭.৩৮ একর, ভালকুটিয়া মৌজায় ৯৬.৩৬ একর, কষ্টাপাড়া মৌজায় ৬.৯৬ একর এবং খানুরবাড়ী মৌজায় ৪০.০০ একরসহ সর্বমোট ৫০২.০২ একর ভূমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য স্থান নির্বাচন করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত স্থান যমুনা নদীর পাশে রেলস্টেশনের নিকটবর্তী সর্বোপরি ঢাকার সন্নিকটে ও অগ্রসর/পিছিয়ে পড়া ভূঞাপুর উপজেলার অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হলে টাঙ্গাইলসহ পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহের ব্যাপক উন্নতি সাধন হবে।

সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম এমপি, তানভীর হাসান ছোট মনি এমপি, মো. ছানোয়ার হোসেন এমপি, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম। এর আগে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল মহাব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপূর উপজেলায় প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্যে নির্ধারিত জায়গা পরিদর্শন করেছেন। কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, যমুনার নদীতে জেগে ওঠা চর এবং এর আশপাশের অব্যবহৃত পড়ে থাকা খাস জমি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য বাছাই করা হয়েছে। আমাদের সরকার চায় অব্যবহৃত পড়ে থাকা ও অকৃষি জমি ব্যবহার করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলা। অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে যা যা করা দরকার তা তিনি করবেন বলে জানান। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম এমপি বলেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য দেশে এক টুকরা জমি পতিত পড়ে থাকবে না। সেই লক্ষ্যকে কাজে লাগিয়ে যমুনার চরে জেগে ওঠা খাস জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির বলেন, উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ, আর উন্নত দেশের কাতারে বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে সম্ভাবনাময় ভূঞাপুরে যমুনার চর এলাকায় প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল।

 টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ভূঞাপুর উপজেলায় ৫০২.০২ একর খাস জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা ১৯৯৫ অনুযায়ী সচিব, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের অনুকূলে বন্দোবস্ত প্রদানের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সচিব ভূমি মন্ত্রণালয় বরাবর সুপারিশসহ প্রেরণ করা হয়েছে। এর পাশে আরও এক হাজার একর খাস জমি রয়েছে। জমির প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তা দেওয়া যাবে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, ২০১০ সালের আগস্টে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন পাস হয়। ইতিমধ্যেই  বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল নীতি ২০১৪ প্রণয়ন করা হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন ২০১০ এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল বিধিমালা ২০১৪ সংশোধন করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর