বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

চলে গেলেন কবি শঙ্খ ঘোষ

কলকাতা প্রতিনিধি

চলে গেলেন কবি শঙ্খ ঘোষ

ভারতে বাংলা ভাষার প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গতকাল কলকাতায় মারা গেছেন। রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পদ্মভূষণে ভূষিত কবির ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ১৪ এপ্রিল। বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৮৯ বছর বয়সী কবি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে অবসান ঘটে বাংলার কবিতায় একটি যুগের। ১২ এপ্রিল থেকে সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন কবি। ছিল সামান্য জ্বরও। করোনা পরীক্ষা করা হয়। ১৪ এপ্রিল বিকালে রিপোর্টে বলা হয় তিনি কভিড পজিটিভ। এমনিতেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। মঙ্গলবার রাতে আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। গতকাল সকালে তাঁকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। এরপর আর কোনো আশা নেই বুঝতে পেরে বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ভেন্টিলেটর খুলে নেওয়া হয়। ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের চাঁদপুরে জন্ম শঙ্খ ঘোষের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর। কর্মজীবনে বঙ্গবাসী কলেজ, সিটি কলেজ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। পড়িয়েছেন বিশ্বভারতী ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েও। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ’। পেয়েছেন দেশিকোত্তম, পদ্মভূষণ, জ্ঞানপীঠ, সাহিত্য অ্যাকাডেমিসহ একাধিক পুরস্কার। বরাবরই তিনি ছিলেন প্রতিবাদী। বর্তমান সরকারের কোনো জনবিরোধী কাজকর্ম হোক বা কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের- তাঁকে বারবারই কলকাতার রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সরব হতে দেখা গেছে। কবি শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি কবির পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেও সমবেদনা জানিয়েছেন। মৃত্যুর খবর পেয়েই শঙ্ঘ ঘোষের বাড়িতে যান রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সাধন পান্ডে। ফিরহাদ তখন বলেন, ‘কভিড নীতিমালা মেনেই তাঁকে বিকালে নিমতলা মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই তাঁকে দাহ করা হবে।’

 বিকালেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শঙ্ঘ ঘোষের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। কবির মৃত্যুতে শোকাহত তাঁর অসংখ্য গুণমুগ্ধ ভক্ত, রাজ্যবাসীসহ উপমহাদেশের কবি-সাহিত্যিক। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ঔপন্যাসিক শীর্ষেন্দু মুখার্জি জানান, ‘শঙ্খ ঘোষ খুব সহজ সরল মানুষ ছিলেন। তিনি বাংলা সাহিত্যকে অন্য মাত্রা দিয়েছেন। তাঁর চলে যাওয়ায় সাহিত্যজগতে বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে আমার মাথার ওপর থেকে ছাদটা সরে গেল।’ জয় গোস্বামী জানান, ‘তাঁর মৃত্যুতে আমি সত্যিই অসহায় বোধ করছি। ওঁর সঙ্গে আমার প্রায় ৪৫ বছরের যোগাযোগ। সব একমুহ‚র্তে শেষ হয়ে গেল। শঙ্খ ঘোষের কবিতা থেকেই আমি অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। তাঁর মৃত্যুতে আমার কী হারাল তা আমিই জানি।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর