মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
বিইআরসির গণশুনানি

এলপিজি ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৬৫ টাকা বৃদ্ধির সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন প্রতি ১২ কেজির তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৬৫ টাকা বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। গতকাল রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে বিয়াম ফাউন্ডেশনের সম্মেলন কক্ষে বিইআরসি আয়োজিত এলপিজির মূল্য সমন্বয়ের গণশুনানিতে কমিশন গঠিত কারিগরি কমিটি এ সুপারিশ করে। শুনানিতে অংশ নিয়ে এলপিজি ব্যবসায়ীরা বলেন, বিইআরসির পূর্ব নির্ধারিত দামের কারণে তারা এরই মধ্যে লোকসানে পড়েছেন। তারা এলপিজির ‘যুক্তিসঙ্গত দাম’ নির্ধারণ না করা হলে ব্যবসা বন্ধের আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন। কমিশন গঠিত কারিগরি কমিটির সুপারিশে বলা হয়, সৌদি সিপি অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসের এলপিজির সরবরাহ ব্যয় ৯১ দশমিক ৪৮ টাকা প্রতি কেজি হিসেবে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৯৭ টাকা ৭৬ পয়সা করা দরকার। কমিশনের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি এলপিজি বোতলজাত এবং মজুদে চার্জ অপরিবর্তিত রাখতে চায়। তবে পরিবেশক এবং খুচরা বিক্রেতার কমিশন বৃদ্ধির পক্ষে মত দিয়েছে কারিগরি কমিটি। বর্তমানে বাজারে ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের বিইআরসি নির্ধারিত দাম  ১ হাজার ৩৩ টাকা। কারিগরি কমিটি সেটি সমন্বয় করে ১ হাজার ৯৮ টাকা করার সুপারিশ করেছে। তবে শুনানির শুরুতে ১২ কেজি এলপিজির দাম ১ হাজার ৩৮০ টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেন এলপিজি ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ খাতে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। ১৩ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। যুক্তিসঙ্গত মূল্য না হলে বড় কোম্পানিগুলো  লোকসানে পড়বে আর ছোট কোম্পানিগুলোর বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ অপারেটরদের পক্ষে মূল প্রস্তাব উপস্থাপন করেন ওমেরা এলপিজির চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার শামসুল হক আহমেদ। তিনি মূল প্রস্তাবে বলেন, এলপিজির দাম সঠিকভাবে নির্ধারণ না করায় তারা লোকসানে পড়েছেন। এতে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে। এলপিজি মজুদকরণ ও  বোতলজাতকরণ চার্জের ক্ষেত্রে কমিশন প্রতি ১২ কেজির জন্য চার্জ মাত্র ১৪৩ টাকা নির্ধারণ করেছে; যা অযৌক্তিক। কোনো অপারেটর যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা বিবেচনায় রেখে যে কোম্পানির চার্জ সর্বোচ্চ হবে তা সবার জন্য প্রযোজ্য করা আবশ্যক। এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা নিট মুনাফা, ঋণের সুদ, বিক্রয় ও প্রশাসনিক ব্যয়, সিলিন্ডারের আয়ুষ্কাল, বিক্রির পরিমাণ নিয়ে কমিশনের দেওয়া চার্জের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন। বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের হেড অব সেলস জাকারিয়া জালাল বলেন, সরকারি এলপিজি বিক্রিতে অপারেটরদের কমিশন ৫০ টাকা। সেখানে বেসরকারি অপারেটরদের ২৪ টাকা কমিশন দেওয়া হয়। অন্যদিকে সরকারি এলপিজির রিটেইলারদের ৫০ টাকা কমিশন আর বেসরকারি এলপিজির রিটেইলারদের ২৭ টাকা কমিশন দেওয়া হয়। মাত্র ২৪ টাকা বা ২৭ টাকা কমিশন দিয়ে একজন ব্যবসায়ীর পক্ষে ব্যবসা করা সম্ভব কিনা তিনি তা জানতে চান। শুনানিতে অংশ নিয়ে উদ্যোক্তারা আরও বলেন, বিইআরসি মাঝারি ধরনের অপারেটরের (৮ হাজার মেট্রিক টন) আমদানি এবং বাজারজাতকরণ ধরে দাম নির্ধারণ করেছে। এতে এক থেকে দেড় হাজার টন এলপিজি আমদানিকারক  কোম্পানিগুলো সংকটে পড়েছে। শুনানিতে বেসরকারি এলপিজি কোম্পানিগুলোর পক্ষে আরও বক্তব্য রাখেন  বেক্সিমকোর চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মুনতাসির আলম, পেট্রোম্যাক্সের পরিচালক নাফিস কামাল, টোটাল গ্যাসের মনজুর মোর্শেদ। কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল জলিল শুনানিতে বলেন, আমরা অপারেটর, ভোক্তা প্রতিনিধিদের কথা শুনেছি। এখন কমিশন এসব বিষয় বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্ত জানাবে।

সর্বশেষ খবর