শিরোনাম
বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের পেছনে সরকারের ব্যয় জানতে চায় জাতিসংঘ

৭৬তম সাধারণ অধিবেশনে উচ্চপর্যায়ের সভায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

দেশে বসবাসরত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য সরকার কী পরিমাণ অর্থ খরচ করেছে সেটি জাতিসংঘকে জানানো হবে। এ জন্য সরকারের সামরিক ও বেসামরিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে অর্থ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ,

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট

দফতরগুলোতে চিঠি পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের বলেছে, আগামী ২১ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা বিষয়ক বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের সভায় অংশ নেবেন। বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) জন্য এ পর্যন্ত যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে সরকার সে তথ্য এসব তথ্য ওই সময় সংশ্লিষ্টদের সরবরাহ করা হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের শরণার্থী সেলের প্রধান (যুগ্ম সচিব) মো. হাসান সারওয়ার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ কার্যক্রমের সমন্বয় করছে জাতিসংঘের প্রতিনিধি সংস্থাগুলো। ফলে ত্রাণ সংক্রান্ত ব্যয়ের তথ্য তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত ব্যয়গুলোও পৃথক পৃথক মন্ত্রণালয় থেকে আসবে। ফলে সবগুলো দফতরের তথ্য পাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের জন্য এ পর্যন্ত সরকারের ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ জানা যাবে।

কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ সরকারসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে ব্যয়ের জোগান দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ বা সহায়তা বাবদ রোহিঙ্গাদের পেছনে দাতা গোষ্ঠী বা অন্য কোনো সূত্র থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়ার বাইরেও সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে অনেক টাকাই ব্যয় হয়েছে এবং হচ্ছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পেছনে সরকারের বছরে খরচ হতে পারে অন্তত ৬০ কোটি ডলার, যা ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। তবে গত বছরের আগস্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে যে তথ্য দিয়েছিলেন, সেটি ছিল জাতিসংঘের ধারণার চেয়ে বেশি। ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন রোহিঙ্গাদের পেছনে সরকারের সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বলপূর্বক মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুতদের (রোহিঙ্গা) জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রতি মাসে ব্যয় করছে তিনশ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকারও বেশি। সেই হিসাবে গত চার বছরে রোহিঙ্গাদের পেছনে সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের জন্য খাবারসহ ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা বিষয়ক সহায়তা দিচ্ছে সরকার।

 ইউএনএইচসিআর, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক ও দেশীয় এনজিওর সহায়তায় রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে যার তত্ত্বাবধান করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সহায়তার পরিবারের সদস্য হিসেবে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বিভিন্ন প্রকার শিশুখাদ্য ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। উপরন্তু জাতিসংঘের আপত্তির পরও ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের ব্যয় প্রাথমিকভাবে সরকারকেই বহন করতে হয়েছে। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরিতেও সরকারের ব্যয় বেড়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর