সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশমুখী

-মনোয়ারা হাকিম আলী

বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশমুখী

বিদেশি পর্যটকরা এখন বাংলাদেশমুখী বলে মনে করেন এই খাতের শীর্ষ উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ইন্ট্রাকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মনোয়ারা হাকিম আলী। তিনি বলেছেন- বাংলাদেশ নিয়ে বিদেশি পর্যটকদের আগ্রহ এখন দিন দিন বাড়ছে। দেশের তারকা হোটেলগুলোতে এখন ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বিদেশি পর্যটকের সরব উপস্থিতি রয়েছে। তার মানে বিদেশি পর্যটকরা এখন নিরাপদ বোধ করছেন। দেশে বেসরকারি খাতের হাত ধরে পর্যটন কেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়ছে। এর সঙ্গে বেড়েছে প্রচার ও প্রচারণা।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ হোটেলের এই কর্ণধার। তিনি আরও বলেন, করোনার অভিঘাত মোকাবিলা করেই এখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পর্যটন খাত। দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে যাতায়াত বাড়ছে পর্যটকদের। সমুদ্রসৈকত  কক্সবাজার ও সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পর্যটকদের ঢল নেমেছে। রাঙামাটি আর বান্দরবানসহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থানও মুখরিত। হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউসে রুম খালি নেই। পর্যটকদের জমজমাট উপস্থিতিতে ব্যবসাও রমরমা। সব মিলিয়ে করোনাকালের নিস্তব্ধতা কাটিয়ে একটু মানসিক প্রশান্তি খুঁজছেন পর্যটকরা। তাদের অপ্রত্যাশিত সাড়ায় পর্যটন খাতে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সভাপতি বলেন, দেশের জনসংখ্যার বড় অংশ করোনার টিকা নিয়ে ফেলেছেন। তারা এখন দর্শনীয় স্থানগুলোতে যাতায়াত করছেন। এভাবে অভ্যন্তরীণ পর্যটক অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে পর্যটন খাত। করোনাকালে পর্যটন ব্যবসা সচল রাখতে একটি নীতিমালাও করা হয়েছে। পর্যটকরা যাতে সচেতনভাবে বেড়াতে যান সে জন্য সরকারের ব্যাপক প্রচারণা আছে। ফলে দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকরাও এখন বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন- এফবিসিসিআইর সাবেক এই প্রথম সহসভাপতি বলেন, দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের সরব পদচারণে অভ্যন্তরীণ পর্যটনশিল্প চাঙা হওয়াতে উদ্যোক্তাদের মাঝে প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে। এতে দেশীয় পর্যটন খাত লাভবান হচ্ছে। অংশীজনরা ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এককথায় পর্যটন খাতে কর্মযজ্ঞ বাড়ছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়াতে স্বস্তি ও শান্তিময় পরিবেশে মানুষ ঘুরতে বেরোচ্ছেন।

মনোয়ারা হাকিম আলী আরও বলেন, করোনার ক্ষত শুকিয়ে ঘর থেকে বাইরে বেরোতে মুখিয়ে আছেন অধিকাংশ পরিবারের সদস্যরা। তারা আস্তে আস্তে ঘুরতে বের হচ্ছেন। কেউ যাচ্ছেন সমুদ্রে। কেউ যাচ্ছেন পাহাড় কিংবা সমতলের দর্শনীয় স্থানগুলোতে। এককথায় বদ্ধ পরিবেশ থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির উষ্ণতা খুঁজছেন। ফলে জমে উঠেছে দেশের পর্যটনশিল্প। স্থানীয় পর্যটকদের পদচারণে মুখরিত বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার এবং সাগরকন্যা খ্যাত আরেক সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা। করোনাকালে পর্যটকদের এমন সাড়ায় অভিভূত পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

পর্যটন খাতের এই উদ্যোক্তা করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হোটেল খাত বাঁচাতে সরকারের কাছে সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, করোনার প্রভাবে তারকা হোটেল খাতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি পোষাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। তার মতে, দেশে পর্যটক বাড়ছে। স্থানীয় পর্যটকরা ঘুরতে বের হচ্ছেন। নতুন নতুন রিসোর্টও হচ্ছে। ফলে এক ধরনের চাঙাভাব দেখছি। এত দিন দেশের যেসব পর্যটক বিদেশে ঘুরতেন, তারা এখন স্থানীয় দর্শনীয় স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এটা আমাদের পর্যটনশিল্পে ইতিবাচক দিক। তিনি পর্যটনশিল্পের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে বলেন, আগামী তিন বছরের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার সুদমুক্ত ঋণ চাই। করোনা সংকট কেটে গেলে বিদেশি গণমাধ্যমে প্রচারণা চালাতে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের আহ্বান জানাই।

সর্বশেষ খবর