মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

মেহেরপুরে সাপ আতঙ্ক, নানা গুজব

মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুর সদরের উজলপুর গ্রামে একাধিক ব্যক্তি সাপে কাটার শিকার হওয়ায় গ্রামজুড়ে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্বার্থান্বেষী চক্র নানা গুজব ছড়িয়ে এ আতঙ্ককে বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রচার পেয়েছে, দুই সপ্তাহে প্রায় ৩৫/৪০ জনকে সাপে কেটেছে।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১২ মে শেষ রাতে কামাল হোসেনের শিশু পুত্র মুরসেলিনকে সাপে কামড়ায়। পরে বাবা-মা তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক মুরসেলিনকে মৃত ঘোষণা করেন। এর এক দিন পর মাঠে কাজ করার সময় হেলাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিও সাপে কাটার শিকার হন। তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। এর দুই দিন পর সকালে উজুলপুর কুঠিপাড়ার চাঁদনী বেগমের হাতে কোনো পোকা-মাকড় কামড় দেয়। এতে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। তখন শোলমারি গ্রামের হাসেম আলী ও রতন ওঝার ঝারফুঁক দেন। দাবি করা হয়, এতে জ্বালাপোড়া ভালো হয়ে যায়। চাঁদনী বেগম জানান, ‘কোনো কিছুর কামড়ে হাত জ্বালা করতে থাকে। তখন হাসেম আলী ওঝা এসে বলেন, সাপে কেটেছে। তারপর তিনি ঝাড়ফুঁক দেন।’ একই গ্রামের নুর আলী দাবি করেন, তাকেও সাপে কাটে।

তিনি হাসেম আলী ওঝার ঝাড়ফুঁকে ভালো হয়েছেন। নূর আলী জানান, সাপে কাটলে ওঝাদের টাকা দিতে হচ্ছে। সাপের কামড়ে যদি বিষ থাকে তাহলে ওঝাদের ৫০০ টাকা, আর বিষ না থাকলে ৩০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এ বিষয়ে কতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, সাপের কামড়ে এক শিশুর মৃত্যুর পর আরও একজন সাপে কাটার শিকার হন। তারপর গ্রাম জুড়ে গুজব ছড়ানো শুরু হয়। এভাবে আতঙ্ক বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছিল। তবে  আমরা এরই মধ্যে গুজবের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছি। গ্রামবাসীকে সচেতন করছি।

মেহেরপুর সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. অলোক কুমার দাস বলেন, আমরাসহ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের একটি দল গ্রামটি পরিদর্শন করেছি। আমরা জেনেছি একটি চক্র গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে ফায়দা লুটছে। আমরা তাদের প্রাথমিকভাবে শনাক্তও করেছি। তারা গুজব ছড়ানো বন্ধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর