শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

শিক্ষক কর্মকর্তা পাল্টাপাল্টি লাঞ্ছনার অভিযোগ

শেকৃবি প্রতিনিধি

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) কয়েকজন কর্মকর্তা কর্তৃক মাইক্রোবায়োলজি ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এম এ মান্নান এবং একই সঙ্গে সহকারী অধ্যাপক মান্নানের বিরুদ্ধে মেডিকেল অফিসার ডা. খন্দকার মো. শহিদুল ইসলামকে লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সহকারী অধ্যাপক ও মেডিকেল অফিসার দুজনই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছেন। জানা যায়, ২৪ সেপ্টেম্বর এম এ মান্নান মেডিকেল সেন্টারে তার সন্তানের চিকিৎসা নিতে গেলে মেডিকেল অফিসারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার জের ধরে পরদিন একদল কর্মকর্তা শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শেখ কামাল অনুষদ ভবনে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা বলেন, সেদিন ৩০ থেকে ৪০ জন কর্মকর্তা শোডাউন দিয়ে অনুষদে প্রবেশ করেন ও মান্নান স্যারের চেম্বার যান। পরে চেম্বার থেকে অনেক চেঁচামেচির আওয়াজ আসছিল। জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় ওই শিক্ষকের কক্ষে ৩০ থেকে ৪০ জনের একদল কর্মকর্তা প্রবেশ করে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। এ সময় কর্মকর্তারা তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে টেবিলে রাখা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার মূল্যায়নপত্র এলোমেলো করেন। এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক মান্নান বলেন, আমি আমার বাচ্চাকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে রাহাতের (শিক্ষার্থী) সঙ্গে দেখা হয়। আমি আর রাহাত মেডিকেল অফিসে যাই। কিন্তু রুমে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তার আমাকে তুমি সম্বোধন করে ছুটির দিনে এসেছি বলে খারাপ ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে রাহাতের সঙ্গে ডাক্তারের কথা কাটাকাটি হয় এবং পরে ডাক্তার প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। বিষয়টি ওখানেই শেষ হয়। কিন্তু পরদিন সোমবার পরীক্ষা শেষে ডিপার্টমেন্টে এলেই ৩০ থেকে ৪০ জন অফিসার রুমে এসে পরীক্ষা নেওয়ার ফাইনাল খাতাসহ রুমের আসবাবপত্র উল্টাপাল্টা করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় আমি প্রক্টরকে কল দিতে চাইলে তারা মোবাইল কেড়ে নেন এবং ফোনটি ছুড়ে মারেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনিক বিচার পাওয়ার জন্য আমি অভিযোগ দিয়েছি। মেডিকেল অফিসারও এ ঘটনায় রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। মেডিকেল অফিসার ডা. খন্দকার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মান্নান স্যার ও আমার মধ্যে ঘটনা ছিল অপ্রত্যাশিত। শনিবার আমার কার্যদিবস না থাকলেও উপাচার্য মহোদয়ের অনুরোধে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করি। এদিন মান্নান সাহেব মেডিকেল সেন্টারে আসেন এবং তার বাচ্চার চিকিৎসার কথা বলেন। আপনি শনিবার (ছুটির দিন) এসেছেন, সমস্যা নেই, আপনার সমস্যার কথা বলেন, এটাই ছিল আমার মান্নান সাহেবের সঙ্গে কথা। এ কথা বলায় মান্নান সাহেব ও রাহাত নামে এক শিক্ষার্থী আমাকে স্টুপিড বলে সম্বোধন করেন এবং দুজনই উচ্চবাচ্য করেন।’ সোমবার কর্মকর্তারা শিক্ষকের রুমে গিয়ে হেনস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘কর্মকর্তারা ৫-১০ জন আমার কাছে এসেছিলেন। আমি তাদের অপ্রীতিকর কোনো কিছু না ঘটানোর জন্য বলি। পরে কি হয়েছে জানি না। অভিযুক্ত কর্মকর্তা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইলিয়াছুর রহমান বলেন, আমার জানামতে ওইদিন এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। শেকৃবি প্রক্টর ড. হারুন উর-রশীদ বলেন, ‘এ ঘটনা কখনই প্রত্যাশিত নয়। তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কথা বলা কঠিন। উপাচার্য স্যার সিদ্ধান্ত নেবেন।’

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর