বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভাঙল মিলনমেলা

বিক্রি ৪৭ কোটি টাকা

মোস্তফা মতিহার

ভাঙল মিলনমেলা

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার পর্দা নেমেছে গতকাল। আজ থেকে বইপ্রেমীদের পদচারণে মুখরিত হবে না এখানকার বিস্তীর্ণ প্রান্তর। লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের দীর্ঘ এক বছরের অপেক্ষায় রেখে শেষ হলো এই বইমেলা। গতকাল শেষ দিনে নতুন বই আসে ২৬৭টি। গত এক মাসে মোট বই প্রকাশ পেয়েছে ৩ হাজার ৭৩০টি। এর মধ্যে গল্পের বই ৪৬৪টি, উপন্যাস ৫০৩, প্রবন্ধ ১৯৭, কবিতার বই ১২৪৭, গবেষণার ৭৫, ছড়া ৮১, শিশুতোষ ৭৯, জীবনী ১২৮, রচনাবলি ৪৩, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ৮০, নাটকের বই ৫৪, বিজ্ঞানবিষয়ক ৫১, ভ্রমণ ৬৭, ইতিহাস ৮৭, রাজনীতির ৩৩, চিকিৎসাবিষয়ক ৩৩, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক ৩৫, রম্য/ধাঁধার ২২, ধর্মীয় ৫৫, অনুবাদ ৬৯, অভিধান ১৩, সায়েন্সফিকশন ৪৬ ও অন্যান্য বিষয়ের ২৬৬টি। বাংলা একাডেমি ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছে। গতকাল শেষ দিন পর্যন্ত ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। গতবারের মেলায় মোট বিক্রি হয়েছিল ৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গত বারের তুলনায় এবারের মেলায় ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা কম বিক্রি হয়েছে। গতবার বাংলা একাডেমি বিক্রি করে ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। গতবারের তুলনায় বাংলা একাডেমির বিক্রি কমেছে ৩ লাখ টাকা।

সমাপনী অনুষ্ঠান : গতকাল সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। শুভেচ্ছা ভাষণ দেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। কে এম খালিদ এমপি বলেন, বইমেলা কেবল বই বিক্রির জায়গা নয়। দলমত-ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলা সবার সহযোগিতায় সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, অমর একুশে বইমেলা আমাদের জাতীয় জীবনে বড় একটি দিগন্ত। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, বিন্যাস ও আঙ্গিকগত দিক দিয়ে এবারের বইমেলা সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার : অমর একুশে বইমেলা ২০২৩-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০২২ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য আগামী প্রকাশনীকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়। শৈল্পিক ও গুণমান বিচারে সেরা বই বিভাগে আহমদ রফিক রচিত বিচ্ছিন্ন ভাবনা প্রকাশের জন্য জার্নিম্যান বুক্স, মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ রচিত বাংলা একাডেমি আমার বাংলা একাডেমি বইয়ের জন্য ঐতিহ্য এবং হাবিবুর রহমান রচিত ঠার : বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা প্রকাশের জন্য পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.-কে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়। শিশুতোষ বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ময়ূরপঙ্খি-কে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়। বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুথিনিলয় (প্যাভিলিয়ন), নবান্ন প্রকাশনী (২-৪ ইউনিট), উড়কি (১ ইউনিট)-কে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২, কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ এবং অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ উপলক্ষে বিভিন্ন গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ক্যারোলিন রাইট এবং জসিম মল্লিককে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ এবং কবি মোহাম্মদ রফিক-কে কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত পয়লা ফেব্রুয়ারি সশরীরে এবারের মেলার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত ১৫ লেখকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর