রবিবার, ১২ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

অধিকাংশ ডিপোর নেই ফায়ার সেফটি প্ল্যান

বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের সিংহভাগ কনটেইনার ডিপোর নেই ফায়ার সেফটি প্ল্যান। ফলে চট্টগ্রামের ১৯ বেসরকারি ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) রয়েছে চরম অগ্নিঝুঁকিতে। ফায়ার সেফটি প্ল্যান অনুসরণ না করার ফলে ঘটতে পারে সীতাকুণ্ডের বি এম কনটেইনার ডিপোর পুনরাবৃত্তি, যাতে ব্যাপক জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, ‘চট্টগ্রামের বেশির ভাগ কনটেইনার ডিপোতেই নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। এ ছাড়া কিছু ডিপোতে অনুমোদনহীনভাবে স্থাপন করা হয়েছে পেট্রলপাম্প, যা খুবই বিপজ্জনক। যেসব কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই সেসব ডিপোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছেন জেলা প্রশাসক।’

জানা যায়, চট্টগ্রামে ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) রয়েছে ১৯টি। বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলোতে ৯৫ শতাংশ রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনা এবং ৩৮ ধরনের পণ্য আমদানি ব্যবস্থাপনা করা হয়। ফলে রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণের আগে ডিপোতেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। হাজার হাজার কোটি টাকার পণ্য রাখার স্থানেই অনুসরণ করা হয় না ফায়ার সেফটি প্ল্যান। ‘ফায়ার সেফটি প্ল্যান’ অনুযায়ী কনটেইনার ডিপোতে স্মোক ডিটেক্টর, হিট ডিটেক্টর, ফায়ার হাইট্রেন্ট থাকার কথা। কিন্তু সিংহভাগ ডিপোতে নেই এসব ব্যবস্থা। অগ্নিঝুঁকি আছে এমন পণ্যের জন্য পৃথক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকলেও কনটেইনার ডিপোতে তাও অনুসরণ করা হয় না। অথচ কনটেইনার ডিপোর লাইসেন্স নেওয়ার আগে কিছু নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হয়, যার মধ্যে রয়েছে জ্বালানি তেল মজুদ করলে বিপিসির অনুমোদন, বিস্ফোরক অধিদফতর ও পরিবেশ অধিদফতরের অনাপত্তি এবং ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তি। বিপজ্জনক পণ্যের জন্য আলাদা শেড তৈরি ও পানির রিজার্ভার থাকা বাধ্যতামূলক। কিছু ডিপোর মধ্যেই আবার রয়েছে অনুমোদনহীন পেট্রলপাম্প, যার কারণে ডিপোগুলো হয়ে উঠেছে বিপজ্জনক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, গত বছর ৪ জুন সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর কনটেইনার ডিপোর অগ্নিনিরাপত্তা নিয়ে সরগরম হয় চট্টগ্রামের প্রশাসন। এরপর বেসরকারি কনটেইনার ডিপো পরিদর্শনে যায় ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক দল। বিএম ডিপোর ঘটনার পর ১৯টি ডিপো ফায়ার প্ল্যানের আবেদন জমা দেয়, যার মধ্যে কয়েকটির ফায়ার সেফটি প্ল্যান অনুমোদনও করাও হয়েছে। কিন্তু প্ল্যান অনুমোদন হওয়ার পরও বেশির ভাগ ডিপো তা বাস্তবায়ন করেনি। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চট্টগ্রামের কনটেইনার ডিপোতে ফায়ার সেফটির বিষয়টি দেখার জন্য পরিদর্শন চলছে। এর মধ্যে বেশ কিছু কনটেইনার ডিপোতে পরিদর্শন করা হয়, যার মধ্যে সেফটি প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হয়েছে হাতে গোনা কয়েকটি ডিপো। এটা নিয়ে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ খবর