ভারতের উত্তর প্রদেশের বারাণসী থেকে বাংলাদেশ হয়ে আসাম পর্যন্ত ৩২০০ কিলোমিটার নৌপথ পাড়ি দেওয়া বিশ্বের দীর্ঘতম বিলাসবহুল পাঁচ তারকা রিভার ক্রুজ গঙ্গা বিলাসে করে আবারও সুন্দরবনে এসেছেন বিদেশি পর্যটকরা।
গতকাল সকাল ১০টায় পর্যটকবাহী এ প্রমোদতরীটি বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী স্টেশন অফিস ঘাটে এসে নোঙর করে। এরপর বন বিভাগের নির্ধারিত রাজস্ব দিয়ে সুন্দরবনের হারবাড়িয়া ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রের উদ্দেশে এটি ছেড়ে যায়। এবারের গঙ্গা বিলাসে চারজন সুইস ও দুজন জার্মান পর্যটক রয়েছেন। তারা তিন দিন ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড সুন্দরবনে থেকে হারবাড়িয়া, কচিখালী ও কটকা অভয়ারণ্য এলাকাসহ জামতলা সি-বিচ ঘুরে দেখবেন।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৩২০০ কিলোমিটার নৌপথে ৫০ দিনের যাত্রায় ভারতীয় বিলাসবহুল রিভার ক্রুজ গঙ্গা বিলাসের পর্যটকরা দুই দেশের ২৭টি নদ-নদী পাড়ি দিয়ে ৫০টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) ঘুরে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। দৈর্ঘ্য ৬২.৫ মিটার এবং প্রস্থ ১২.৮ মিটার ও ১.৩৫ মিটার ড্রাফটের প্রমোদতরীটিতে ১৮টি অত্যাধুনিক স্যুইটসহ একসঙ্গে ৮০ জন পর্যটককের ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। এতে রেস্টুরেন্ট, স্পা, সুইমিংপুল, সানডেকের ব্যবস্থাসহ রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের সবরকম সুযোগ-সুবিধা। আগে ৪ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনী পর্বে সুইস ও জার্মানসহ ৩০ জন পর্যটক নিয়ে মোংলা বন্দরে পৌঁছেছিল প্রমোদতরী গঙ্গা বিলাস। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) এসব বিদেশি পর্যটকরা ঘুরে দেখার পর ১৩ মার্চ দৈ-খাওয়া নৌপথ অতিক্রম করে ভারতের আসামের ডিব্রুগড়ে পৌঁছায় প্রমোদতরীটি। ফিরতি যাত্রায় প্রমোদতরীটি গতকাল সকাল ১০টায় বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ঢাংমারী স্টেশনে পোঁছায়। তবে, ফিরতি যাত্রায় পর্যটক রয়েছেন মাত্র ছয়জন। বাকি ২৬ জন বিদেশি পর্যটক গত ১৯ মার্চ ঢাকার হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবিন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। সুন্দরবনের ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা সাইফুল বারী জানান, গতকাল সকাল ১০টায় বিদেশি পর্যটকবাহী ভারতীয় প্রমোদতরী গঙ্গা বিলাস সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী স্টেশন অফিস ঘাটে এসে নোঙর করে। পরে নির্র্ধারিত রাজস্ব দিয়ে সুন্দরবনের হারবাড়িয়া ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এবারের ফিরতি যাত্রায় প্রমোদতরীটিতে মাত্র ছয়জন বিদেশি পর্যটক রয়েছেন। তারা প্রমোদতরীতে করে তিন দিন সুন্দরবনে থেকে হারবাড়িয়া, কচিখালী ও কটকা অভয়ারণ্য এলাকাসহ জামতলা সি-বিচ ঘুরে দেখবেন। খুলনা বনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো জানান, প্রথম দিন এসব পর্যটক সুন্দরবনের হারবাড়িয়া ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রে এলাকা ঘুরে দেখবেন। বৃহস্পতিবার তারা যাবেন সুন্দরবনের কচিখালী এলাকায়। সেখানে ভ্রমণ করে পরদিন শুক্রবার তারা কটকা অভয়ারণ্য এলাকাসহ এলাকার জামতলা সি-বিচ ঘুরে দেখে রাতেই আবার ওই প্রমোদতরীতে উঠবেন। পশুর নদী পাড়ি দিয়ে পর্যটকবাহী বিলাসবহুল প্রমোদতরীটি ভোরে বাগেরহাটের মোংলায় পৌঁছাবে। ২৫ মার্চ সকালে বাগেরহাটের ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড ষাটগম্বুজ মসজিদ ভ্রমণ শেষে ওইদিনই আবার নদী পথে সুন্দরবনের আংটিহারা এলাকায় ইমিগ্রেশন করতে যাবেন বিদেশি পর্যটকরা। ২৬ মার্চ আংটিহারায় ইমিগ্রেশন শেষ করে তারা ভারতের উদ্দেশে বাংলাদেশের জলসীমা ত্যাগ করবেন।