মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
প্রচারণা বাড়িয়েছেন প্রার্থীরা

ঘরোয়া প্রচারণায় আজমত মরিয়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

আফজাল, টঙ্গী

আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার কান্ডারি হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান। অন্যদিকে মাঠের দখল পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আজমত উল্লা খান দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর বিভিন্নভাবে ঘরোয়া পরিবেশে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন নৌকাকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে। প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করবেন তিনি। আজমত উল্লা খান মেয়র নির্বাচিত হলে একটি মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন নগর উপহার ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করবেন এমনটাই জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে মেয়র প্রার্থী হিসেবে যারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন তাদের মধ্যে (ভারপ্রাপ্ত) মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান রাসেল ও সাইফুল ইসলাম নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে সমর্থন দিয়েছেন। এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর সমর্থকদের প্রচারণা চালিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। জাহাঙ্গীর আলম শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি না এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তবে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গাজীপুরবাসী তাঁর পক্ষে। তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। তিনি মাঠে না থাকলে মাঠ চলে যাবে অন্যের দখলে। এ ছাড়া জনগণের প্রত্যাশা পূরণে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

অন্যদিকে গাজীপুরে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে অংশ না নিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নূরুল ইসলাম সরকারের ছেলে সরকার শাহ নূর ইসলাম রনি স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে এবার আটঘাট বেঁধে মাঠে নামছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যারাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। বিভিন্ন এলাকায় উঠান-বৈঠক করে ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করে যাচ্ছেন। নতুন প্রার্থী পেয়ে ভোটাররাও এগিয়ে আসছেন। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শাহ নূর ইসলাম রনি সরকার আধুনিক নগর গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে নগরের চেহারা পাল্টে যাবে। এ ছাড়া মেয়র পদে গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানও ইতোমধ্যে প্রচারণায় নেমেছেন। এ বিষয়ে মেয়র প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘মানুষ একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। যদি সুষ্ঠু, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে মানুষ দলমতনির্বিশেষ আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। আমি নির্বাচিত হলে শিক্ষার মান, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত, যানজটমুক্ত নগরসহ একটি পরিকল্পিত নগর উপহার দেব। আমাকে একবার সুযোগ দিলে গাজীপুরের মানুষ বাসযোগ্য শহরে বসবাস করার সুযোগ পাবেন।’ টঙ্গী পূর্ব থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী একজন যোগ্য ব্যক্তি। তিনি স্বাস্থ্য সচিব থাকাকালে টঙ্গী-গাজীপুরে ২৫০/৫০০ শয্যা হাসপাতাল, স্কুল-কলেজের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন।

নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান বলেন, ‘বিএনপি নেতা হাসান উদ্দিন সরকার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপ্রপ্রচার চালিয়ে বেড়াচ্ছেন, মানুষকে ছোট করে কেউ বড় হতে পারে না। আমার প্রতি তার ক্ষোভ, তার ছোট ভাই টঙ্গী পৌরসভায় বেশ কয়েকবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে হেরে গিয়েছেন। সেই ক্ষোভ থেকে আমার বিরুদ্ধে তিনি নানা কথা বলছেন। একবার বলেন, আমি নাকি ভুয়া অ্যাডভোকেট; আবার বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। এসব বলে আমার জনপ্রিয়তা রোধ করা যাবে না।’ হাসান উদ্দিন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার চেয়ে আপনার জনপ্রিয়তা বেশি থাকলে মাঠে আসেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তা প্রমাণ করেন। ঘরে বসে মিথ্যা কথা বলে মানুষকে ছোট কইরেন না।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আয়তনে দেশের সবচেয়ে বড় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে ২৫ মে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ এপ্রিল, বাছাই ৩০ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৮ মে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ৯ মে এবং ভোট গ্রহণ হবে ২৫ মে।

সর্বশেষ খবর