বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরগরম সিটি নির্বাচনের মাঠ

হিসাব মেলাচ্ছে বিএনপি কৌশলী আওয়ামী লীগ

খুলনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

হিসাব মেলাচ্ছে বিএনপি কৌশলী আওয়ামী লীগ

খুলনা সিটি নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই বিএনপির কয়েকজন নেতা কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। আবার মেয়র কাউন্সিলর পদে নিশ্চিত বিজয় বা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা থাকলেও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে সরে এসেছেন অনেকে। রাজপথে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে লাভ-ক্ষতির হিসাব মিলাচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি। এর মধ্যে কৌশল বদলে প্রতি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নিজেদের একাধিক প্রার্থী রেখেছে দলটি। যাতে কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিজয়ী হতে ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে তৎপর হন। জানা যায়, নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১৪৯ জন। এ ছাড়া ১০টি সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন আরও ২৯ জন। প্রার্থীদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। আজ মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর ২৫ মে প্রত্যাহারের শেষ সময় ও ২৬ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। ১২ জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। জানা যায়, নির্বাচনে বিএনপি ঘরোনার সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলরদের মধ্যে চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আশফাকুর রহমান কাকন, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে শমসের আলী মিন্টু, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর মাজেদা বেগম ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর মাহাবুব কায়সার। এর মধ্যে আশফাকুর রহমান কাকন ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি আহ্বায়ক। মাহাবুব কায়সার আগেই দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। শমসের আলী মিন্টু ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি। তবে মাজেদা খাতুন বিএনপির কোনো কমিটিতে নেই। এ ছাড়া কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে সরে এসেছেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক ও পরপর দুবার নির্বাচিত কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান মনি। এবারও নির্বাচনে তার জয়ের সম্ভাবনা ছিল। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, দলের প্রতিটি সভায় নেতাদের বারবার নির্বাচনে অংশ না নিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা কাউন্সিলরদের বোঝানো হয়েছে। যারা কথা শোনেননি তাদের বহিষ্কার করা ছাড়া উপায় নেই। তবে অধিকাংশ ত্যাগী নেতা দলের স্বার্থে নির্বাচন থেকে সরে এসেছেন। অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক করতে সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিটি ওয়ার্ডে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনতে উদ্বুদ্ধ করতে বলা হয়। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, সাধারণ মানুষ চায় খুলনার উন্নয়ন। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। এরপর চায় আইনশৃঙ্খলা যাতে ভালো থাকে ও সন্ত্রাসমুক্ত নগর। এই কাজগুলো গত পাঁচ বছরে খুলনায় হয়নি। আমরা মাদকমুক্ত খুলনা চাই। এ ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তারপরও আমি মনে করি সব সমস্যার সমাধান হয়নি। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে বাকিটা সমাধান করার আপ্রাণ চেষ্টা করব। খুলনাবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তালুকদার খালেক বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে ভোটের দিন অবশ্যই ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যাবেন। আমাদের দলীয় একটা পার্সেন্টেজ আছে এবং এর সঙ্গে সাধারণ ভোটারও আছেন তাতে আমি মনে করি অন্তত ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ ভোট কাস্ট হবে। অন্যদিকে মেয়র নির্বাচিত হলে সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতিমুক্ত নগর গড়তে কাজ করার অঙ্গীকার করছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী আবদুল আউয়াল। তিনি বলেন, সন্ত্রাস দুর্নীতি দমন না করতে পারলে কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই সর্বপ্রথম কাজ করতে হবে সন্ত্রাস নির্মূলে। তিনি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, বর্তমানে খুলনায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজরা প্রভাব বিস্তার করেছে। সন্ত্রাস ও মাদকের প্রভাবে নগরবাসী স্বাভাবিক জীবন পরিচালনা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। নির্বাচিত হলে কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম গঠনের মাধ্যমে সন্ত্রাস মাদক নির্মূলে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।

 

সর্বশেষ খবর