২৩ জুলাই, ২০১৯ ১৭:৩৪

চবি শিক্ষার্থী সায়েম হত্যার বিচার দাবি

চবি প্রতিনিধি

চবি শিক্ষার্থী সায়েম হত্যার বিচার দাবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী সাদেকুল ইসলাম সায়েমকে গাড়িচাপায় হত্যার প্রতিবাদে গাড়িচালকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মো. জামিল হোসাইনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. ফরিদ আহসান, প্রফেসর ড. শওকত আরা বেগম, প্রফেসর ড. হাবিবুর রহমান, প্রফেসর ড. মনজুরুল কিবরীয়া, সহযোগী অধ্যাপক রাশেদা চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক মাহবুবা হাসনাতসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

প্রফেসর ড. শওকত আরা বেগম বলেন, আমার বিভাগের সব শিক্ষার্থীই আমার সন্তানের মতো। আর যেন আমার কোনো সন্তানকে সায়েমের মতো অকালে জীবন দিতে না হয়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আমাদের দেশে বিচার ব্যবস্থাকে আরও কার্যকরী করতে হবে।

ড. মো. ফরিদ আহসান বলেন, আজকের মানববন্ধন প্রমাণ করে বিচার ব্যবস্থার কাছে আমরা কতটা অসহায়। একটা বিচার যখন না হয় তখন আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। শুধু নিয়ম না মানার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। আমি চাই আর কোনো শিক্ষার্থীকে সাদিকুলের মতো রাজপথে জীবন দিতে না হয়। 

ড. মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা তাকে (সায়েমকে) সাহায্য করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। বাবাহারা ছেলেটি টিউশনি করে পরিবারের খরচ যোগাড় করতো। আমরা সায়েমকে হত্যাকারী ঘাতক বাসচালক এমজাতের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, ঘটনা শোনার পরে আমি মেডিকেলে যাই। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। তার চিকিৎসার টাকা অভাব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও অর্থপ্রদান ও অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা দিয়েছে। তারপরেও সাদেকের মৃত্যু খুবই বেদনাদায়ক। হত্যাকারী গাড়িচালকের জামিন আমাদের লজ্জার ও দুঃখজনক। এই হত্যাকারীর সর্বোচ্চ বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে সাদেকের হত্যায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

এছাড়াও মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, সাদেকের মৃত্যু আমাদের কলিজায় আঘাত করেছে। এভাবে আর যেন কারো স্বপ্ন ভেঙ্গে না যায়, সেজন্য প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। এই হত্যার বিচার না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়া হবে। প্রশাসনের কাছে এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা করছি।

সাদেকের মৃত্যু সকলের কাছে বেদনাদায়ক। গাড়িচালকের অবহেলা এখানে স্পষ্ট প্রতীয়মান। এরকম অপরাধীর কিসের এত ক্ষমতা যে গাড়ি চালক সমিতি ৯ দিন মেডিকেলে থাকাকালীন কেউ সাদেকের খবর নিলো না। আমরা মামলা করেছি তারপরেও ড্রাইভারকে থানা সুষ্ঠু পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যার কারণে সে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ায়। আদালত আমাদের সুষ্ঠু বিচারে শেষ আশ্রয়স্থল। এসব অপরাধী এবং ঘাতকের কারণে কেন আদালত প্রশ্নবিদ্ধ হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের অভিভাবক। তাই আমরা আশাবাদী হত্যাকারীর সুষ্ঠু বিচার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ মে টিউশন থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিকুল ইসলাম সায়েম। পরে পুলিশ বাসচালক এমজাতকে আটক ও গাড়ি জব্দ করলেও পরে জামিনে মুক্তি পায় এমজাত।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর