বিদ্যালয়ে খুনসুটির অভিযোগে শিক্ষকের অমানবিক লাঠিপেটায় পঙ্গুত্ববরণ করে বিছানায় পড়ে আছে সুরাইয়া খাতুন (১২)। সুরাইয়া মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শালদহ গ্রামের দিনমজুর হাফিজুল ইসলামের মেয়ে ও এসএআরবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দাবি ঘটনা এমন বড় কিছু নয়। শিশু সুরাইয়া জানান, মাস পাঁচেক আগে বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে দুষ্টমির অভিযোগে হামিদুল ইসলাম স্যার পিঠে বেধড়ক লাঠিপেটা করে। এ সময় পিঠে ব্যথ্যা শুরু হলে শ্রেণি কক্ষেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকি। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সহপাঠীকে দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। পরিবারের লোকজন গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী অথবা ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তারপর রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়া হয়।
সেখানে নিউরো মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এম আহম্মদ আলী আমার আঘাতের স্থানে পরীক্ষা করেন। তিনি জানান মেরুদন্ডের প্রধান শিরায় ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল, সঠিক চিকিৎসা না হলে চির পঙ্গুত্ব বরণ করতে হবে। চিকিৎসা করানোর মতো সাধ্য আমার পরিবারের নেই। সুরাইয়ার মা লেকজান খাতুন বলেন, শিক্ষকের অমানবিক নির্যাতনে আজ আমার মেয়ে পঙ্গু হতে চলছে। প্রথম দিকে শিক্ষক বলেছিলেন সব খরচ বহন করবে। এখন তারা বিভিন্ন নেতা ধরে আমাদের হুমকি দিচ্ছেন। শিক্ষক হামিদুল বলেন, দুষ্টামির কারণে বাঁশের চিকন কঞ্চি দিয়ে দুটি বাড়ি দিয়েছি। লাঠিপেটার বিষয়টি সত্য নয়। প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বলেন, সুরাইয়ার চিকিৎসার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি। তার পরিবার লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযুক্ত হামিদুলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা আমরা নেব না। ঊর্ধ্বতন প্রশাসনকেও আমরা বিষয়টি জানাইনি। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রনী খাতুন বলেন, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।