নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার সবচেয়ে বড় হাওর ডিঙ্গাপোতা। গত ১ এপ্রিল ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ঢলের পানি প্রবেশ করে তলিয়ে দেয় ফসলি জমি। কৃষক এক চিমটি ধানও ঘরে তোলার অবস্থা নেই। পুরো হাওর জুড়ে প্রাকৃতিক নিয়মের প্রায় মাস খানেক আগেই এ পানি চলে এসেছে। যে কারণে কারোর ধানই কাটা সম্ভব হয়নি। ধানগুলো পাকারও পর্যন্ত সময় পায়নি।
গত সোমবার থেকে এই হাওরে মাছ মরে গিয়ে ভাসতে শুরু করেছে। পানিও অনেক দুর্গন্ধ হয়ে পড়েছে। অনেকে গরু ধোয়ানো নিয়েও আতংকে আছেন। নিজেরাও এ পানি ব্যবহার নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
তেতুলিয়া গ্রামের মুস্তাফিজ জানান, আমরা হাওর পাড়ের মানুষ। হাওরের পানি দিয়েই গোসলসহ দৈনন্দিন কাজকর্ম করি। এখন পানিতে নামলে গা চুলকায়, গরুগুলোও অস্থির হয়ে যাচ্ছে। নাক-মুখ বন্ধ করে পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে।
মল্লিকপুর গ্রামের অনুপ তালুকদার বলেন, ধান হারিয়ে নিঃস্ব কৃষক শেষ সম্বল মাছের আশায় বসেছিল। অবশিষ্ট আশাটুকুও আর রইলো না। খাবারের অভাবে অনেকে গরুগুলোকেও ছেড়ে দিয়েছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দিলীপ সাহা জানান, অকাল বন্যায় পানি চলে আসায় ডিঙ্গাপোতা হাওরের সকল কাঁচা পাকা ফসল তলিয়ে গেছে। ফলে সেগুলো পানির নিচে পচন ধরে গেছে। এতে এক ধরনের গ্যাসের সৃষ্টি হয়েছে। মৎস্য গবেষকরা, পরীক্ষার জন্য নমুনা নিয়ে গেছেন। তবে প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, অক্সিজেনের অভাবে মাছগুলো মরে যাচ্ছে। আর অক্সিজেনের অভাবে মাছ মরলে তা খেলে ক্ষতি নেই।
তিনি আরও বলেন, বিশাল হাওরে পানি সোধন করারও তেমন ব্যবস্থা নেই। তবে বিশেষজ্ঞ টিম এসেছিলেন। তাদের নিয়ে আমরা হাওর পরিদর্শন করেছি। তারা পরবর্তীতে যে নির্দেশনা দিবেন আমরা সেভাবে কাজ করবো। আতঙ্কিত না হতে এলাকায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/১৮ এপ্রিল, ২০১৭/ফারজানা