জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ সদস্যরা। ইতিপূর্বে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড ও কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার হওয়া জেএমবির ৮ সদস্যের তথ্যের ভিত্তিতে ১৮ এপ্রিল ভোর ৪ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লা থেকে ঐ দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যব। র্যাবের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
র্যাব-১১ এর পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ৬ ও ৭ এপ্রিল র্যাব-১১ সদস্যরা সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড ও কুমিল্লার গৌরীপুর থেকে সারোয়ার-তামিম গ্রুপের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল র্যাব। তাদের দেয়া তথ্য মতে র্যাব-১১ সদস্যরা ১৭ এপ্রিল ৯ টা থেকে ১৮ এপ্রিল ভোর ৪টা পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লায় অভিযান চালায় র্যাব। ঐ এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব সদস্যরা আব্দুর রহমান ওরফে সোহেল (২৫), ফয়সাল আহমেদকে (৪৪) গ্রেফতার করে।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আব্দুর রহমান ও মো. ফয়সাল স্বীকার করে যে, তারা গত ৬ ও ৭ এপ্রিল ২০১৭ কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা হতে গ্রেফতারকৃত জেএমবি (সারোয়ার-তামিম) গ্রুপের সদস্য। তাদের পরিকল্পিত নাশকতার কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে র্যাব প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে। তারাও উক্ত সংগঠনের বিবিধ দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতো বলে জানায় র্যাব। এছাড়াও ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের এমএলএম কোম্পানীর সদস্যদের নিকট জঙ্গিবাদী মতবাদ প্রচার করে আসছিল।গ্রেফতার হওয়া আব্দুর রহমান ওরফে সোহেল গত ৪ বছর ধরে গৌরিপুরের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতো। সে ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইতিপূর্বে গ্রেফতারকৃত জেএমবির সক্রিয় সদস্য ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী জামাল ওরফে রাসেল জিহাদী’র মাধ্যমে জেএমবিতে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকে সে জেএমবির (সারোয়ার-তামিম) গ্রুপের একাধিক সদস্যের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত এবং নারায়ণগঞ্জের একাধিক স্থানে গোপন বৈঠকে অংশ নিয়েছে। ইতিপূর্বে তারা একাধিকবার নারায়ণগঞ্জের শনিরআখড়ায় জনৈক এক ব্যক্তির বাসায় সাংগঠনিক কাঠামো বর্ধিতকরণ, নতুন নতুন সদস্য সংগ্রহ করার নিয়ম ও পদ্ধতি এবং নাশকতা পরিচালনার ব্যাপারে বৈঠক করেছে। বিগত অভিযানে জব্দকৃত বিস্ফোরক সরবরাহের সাথে তার সম্পৃক্ততা আছে বলেও সে স্বীকার করেছে বলে র্যাব উল্লেখ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে। এছাড়াও সে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জেএমবির নারী সদস্য সংগ্রহের জন্য কাজ করছিল সে। অপরদিকে ফয়সাল আহমেদ ১৯৯৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করে কুয়েতে চলে যায়। ১৯৯৪ সাল হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত কুয়েতে কাজ করে বাংলাদেশে চলে আসে এবং ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা শুরু করে। ২০১৬ সালে ইতিপূর্বে গ্রেফতারকৃত জেএমবি (সারোয়ার-তামিম) গ্রুপের জামাল ওরফে রাসেল জিহাদীর মাধ্যমে জেএমবিতে যোগদান করে এবং সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করে। ফয়সাল দীর্ঘ সময় কুয়েতে বসবাস করার কারনে আরবি ভাষার উপর দক্ষতা অর্জন করে। সে ইন্টারনেট হতে প্রাপ্ত আরবি ভাষায় বিভিন্ন উগ্রবাদী তথ্যচিত্র বাংলায় অনুবাদ করত এবং সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে তা সরবরাহ করত। সে সংগঠনের জন্য অর্থের যোগান দিত। গ্রেফতার হওয়া আব্দুর রহমান ওরফে সোহেলের বাড়ি কুমিল্লা জেলার তিতাস থানা এলাকায়। মো. ফয়সাল আহমেদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানা এলাকায়। সে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় বসবাস করে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার