করোনার মধ্যেও থেমে নেই সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় মাদকের বিস্তার। হাত বাড়ালেই সর্বত্র পাওয়া যাচ্ছে মাদক। মাদকের ছড়াছড়িতে যুবসমাজ চুরি-ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ছে। তবে মাদকসেবীরা প্রকাশ্যে মাদক সেবন করলেও শিবগঞ্জ থানা পুলিশ কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলায় মাদক ব্যবসায়ীরা শুধু খুচরা বিক্রি করে ক্ষান্ত হচ্ছে না, পাশাপাশি বড় বড় চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবাধে নিয়ে যাচ্ছে মাদকের চালান।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় মাদক সেবন। হাত বাড়ালেই মিলছে মরণ নেশা হেরোইন, ইয়াবা, গাঁজা আর ফেনসিডিল। এতে উঠতি বয়সের ছেলেদের টার্গেট করছে ওসব ব্যবসায়ী এবং অবাধে মাদক বিক্রি করছে। তবে গত অক্টোবর ও চলতি নভেম্বর মাসে এ পর্যন্ত র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির অভিযানে মাদকসেবীসহ বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। শিবগঞ্জে র্যাবের অভিযানে ১ কেজি ৫’শ গ্রাম হেরোইন, ৯ হাজার ৯২০ পিস ইয়াবা, ৪৬৫ বোতল ফেনসিডিল, গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ১০৪৩ বোতল ফেন্সিডিল ও ৪৪০০ পিস ইয়াবা, বিজিবির অভিযানে ১৫৩০ পিস ইয়াবা ও ৬৮৫ গ্রাম হেরোইন উদ্ধারসহ ১৫ জনকে আটক করা হয়। এমনকি মাদকসেবীদের আটকসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও জিকে ফাউন্ডেশনের পরিচালক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম জানান, কিছু সংখ্যক তরুণ বখাটে সোনামসজিদ- চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে রাতে বিভিন্ন সময়ে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, সিএনজি ও ক্ষুদ্রব্যবসায়ীদের সাইকেল আটক করে তাদের সব কিছু ছিনিয়ে নিচ্ছে।
এদিকে সম্প্রতি ঘোড়াপাখিয়া গ্রামে ২০-২৫টি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। এমতাবস্থায় এলাকাবাসী চুরির প্রবণতা ঠেকাতে পালাক্রমে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন।
নয়ালাভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হক জানান, শিবগঞ্জ উপজেলার রাণীহাটি বাজার, ছত্রাজিতপুর বাজার, উজিরপুর, জলোবাজারে মাদক সেবন ও মাদক বিক্রি অব্যাহত থাকায় এলাকার সাধারণ মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে।
শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র কারিবুল হক রাজিন জানান, রসুলপুর মোড়, শিবগঞ্জ বাজার, কোর্টবাজার, কানসাট, মনাকষা, বিনোদপুর, সোনামসজিদ, চককীর্ত্তি, মোবারকপুর, ধাইনগর, ধোবড়া বাজারে হাত বাড়ালেই অবাধে মিলছে মাদক। তিনি এসব এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
শিবগঞ্জ থানার সদ্য যোগদানকৃত ওসি ফরিদ হোসেন বলেন, এ এলাকায় ব্যাপক মাদক চোরাচালান হয়ে থাকে বলে শুনেছি। তাই মাদকের নিয়ন্ত্রণে আনাই হবে আমার প্রথম কাজ।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মো. সামিল উদ্দীন আহমেদ শিমুল বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা আটক হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ