২৪ অক্টোবর, ২০২১ ১৫:৪৩

সড়ক যোগাযোগে নতুন দ্বার খুলেছে পায়রা সেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

সড়ক যোগাযোগে নতুন দ্বার 
খুলেছে পায়রা সেতু

দেশের সড়ক যোগাযোগে নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর দক্ষিণের কুয়াকাটা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত ফেরীবিহীন সড়ক যোগাযোগ চালু হয়েছে। রবিবার সকাল ১১টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পায়রা সেতুর উদ্বোধন ঘোষণার পর বেলা সাড়ে ১২টায় সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এর ফলে এই অঞ্চলে যান চলাচল বাড়বে এবং এক সময়ের অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। প্রতীক্ষিত পায়রা সেতুর দ্বার উন্মোচন করায় খুশি বরিশাল অঞ্চলের মানুষ। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা। 

১ হাজার ১শ ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পায়রা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আজ সেতুর দক্ষিণপ্রান্তে পটুয়াখালীর দুমকী এলাকায় ছিলো সাজ সাজ রব। অনুষ্ঠানস্থলে ছিলেন বরিশাল অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১১টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণের শেষ পর্যায়ে পায়রা সেতুর শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করেন। এর পরপরই স্থানীয় হাজারো জনতার ঢল নামে পায়রা সেতুতে। এ সময় বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাস প্রকাশ করেন তারা। 

সংশ্লিষ্টরা বলেন, এই সেতু উদ্বোধনের ফলে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত যেতে সময় বাঁচবে। লাঘব হবে ভোগান্তির। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা। 

বেলা সাড়ে ১২টা থেকে সেতু দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যান চলাচল শুরু হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর টোল দিয়ে সেতু পাড় হয়ে আনুষ্ঠানিক যান চলাচলের শুভ সূচনা করেন। 

এ সময় প্রধান প্রকৌশলী বলেন, পায়রা সেতু সড়ক যোগাযোগের নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। সরকারের এই সম্পদ সুরক্ষার দায়িত্ব জনগণের। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক এমপি, সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ এবং বরিশাল-৪ আসনের এমপি পংকজ নাথ। 

পায়রা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুল হালিম বলেন, এই সেতু উদ্বোধনের ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ চালু হলো। এতে ফেরীঘাটের ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে জনগণ। সেতুর নান্দনিকতায় পর্যটকও আকৃষ্ট হবে। দেশের একমাত্র সেতু পায়রায় নিজস্ব হেলথ মনিটরিং সিস্টেম রয়েছে। এর ফলে যে কোন ধরনের দুর্যোগ-দুর্ঘটনার আগাম তথ্য পাবে সেতু কর্তৃপক্ষ। 

বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের ২৬ তম কিলোমিটারে লেবুখালী পয়েন্টে পায়রা নদীর উপর সেতু নির্মানের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। শেষ হয় সম্প্রতি। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট (কেএফএইডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্টের (ওএফআইডি) যৌথভাবে এই সেতু নির্মানে অর্থায়ন করে। এক্সট্রা ডোজ ক্যাবল স্ট্রেট নান্দনিক নকশায় নির্মিত সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪শ ৭০ মিটার এবং প্রস্থ ১৯.৭৬ মিটার। নদীর উভয়প্রান্তে এপ্রোচ সড়ক রয়েছে ১ হাজার ২শ ৬৮ মিটার। চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লং জিয়ান রোড এন্ড ব্রিজ কোম্পানি লিমিটেড সেতুটি নির্মাণ করে। 

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর