সাতক্ষীরায় ডায়রিয়ার প্রকোপ চরম আকার ধারন করেছে। চৈত্রের তীব্র গরম ও তাপদাহে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পূর্বের তুলনায় দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। আসন সংকটের কারণে এসব সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে না পেরে বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। শুধু গত এক সপ্তাহে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগ মিলে ৮৭০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রতিদিন এ হাসপাতালে গড়ে ১৩০ থেকে ১৩৫ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে বর্তমানে বেডে ও বারান্দায় অবস্থান নিয়ে ৭০ জনের মত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। চৈত্রের এই তীব্র গরমে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সরা। এছাড়া হাসপাতালের পরিবেশ ও বেড নোংড়া থাকায় অনেকে বেসরকারী ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের সিনিয়ির মেডিকেল অফিসার নবজাতক ও শিশু কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আবুল বাশার আরমান জানান, গত মার্চ মাসে বহির বিভাগ থেকে ৩ হাজারের উপরে ডায়রিয়া আক্তান্ত শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। আর ৩৫০ জন রোগী হাসপাতালে অবস্থান নিয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরেছেন। তবে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পূর্বের তুলনায় দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন গড়ে আন্তঃ ও বহির্বিভাগ মিলিয়ে ১৩০ থেকে ১৩৫ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডাক্তার ও নার্স সংকটে রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
তিনি আরও জানান, তীব্র তাপদাহ ও পানিবাহিত কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এ অবস্থা থেকে কিছুটা হলেও পরিত্রাণ পেতে সব সময় শিশুদের বিশুদ্ধ খাবার পানি পান ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রাখতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সাতক্ষীরা সরকারি সদর হাসপাতালের অবস্থা একই। সেখানে দেখা গেছে শিশু ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৩ জন শিশু ও ৩ জন বয়স্ক মানুষ ভর্তি রয়েছেন। বর্তমানে তাদের প্রত্যেকের স্যালাইন চলছে। তবে তারা শঙ্কামুক্ত রয়েছে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত জানান, হঠাৎ চৈত্র মাসের তীব্র গরম পড়ছে। বিশেষ করে দুপুর ও সন্ধ্যায় ব্যাপক গরম এবং শেষ রাতে ঠান্ডা পড়ছে। বৈচিত্রময় আবহাওয়ার কারণে শিশুরা ঠান্ডা গরম এডজাস্ট করতে পারছে না, মূলত সে কারণে ডায়রিয়া রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এর প্রতিরোধের একটাই উপায় পরিস্কার-পরিছন্ন থাকা। বিশুদ্ধ পানি পান করা। তিনি জানান, এ হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের শয্যা সংখ্যা মাত্র ৬টি। সে কারণে এ হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর চাপ অনেক কম। তার পরেও গত এক সপ্তাহে ৭০ জন ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে গেছেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল