খালিয়াজুরী উপজেলা হাওলাঞ্চলের মাঝে আলাদা দ্বীপের মতো। বর্ষাকালে হাওরাঞ্চলের অন্যান্য উপজেলাগুলো অর্ধেক বা বেশি অর্ধেক পানিতে তলিয়ে থাকলেও খালিয়াজুরী পুরো উপজেলা দ্বীপের মতো ভেসে থাকে। এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে নৌযানে চলাচল করতে হয়। হেমন্তকালে পুরো শুকনো মৌসুমেও নিরবিচ্ছিন্ন হয় না যোগাযোগ। একমাত্র ধনু নদী বাধ সাধে যোগাযোগে।
শুধুমাত্র জেলা শহর বা অন্যান্য উপজেলাই নয়। উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়ন ও বেশকটি গ্রাম থাকে নদীর জন্য যোগযোগ বিছিন্ন থাকে। ফলে দুর্ভোগ নিয়েই চলাচল করতে হয় উপজেলাবাসীকে। ৫৫ কিলোমিটার সড়কের ১৯ কিলোমিটার পাকা সাবমার্সিবল থাকলেও নদী পারাপারে ভোগান্তি চরমে। রোগী নিয়ে বেশি ভোগান্তি হয়। নদীর এ পারে রসুলপুরে এসে যানবাহন বদলাতে হয়। শুধু রোগীই নয় সকল প্রকার জিনিসপত্র সবজিসহ মানুষের আসা যাওয়ার প্রধান মাধ্যম ইঞ্জিন চালিত নৌকা। নৌকা পারাপারে ঘটে নানা দুর্ঘটনাও। তবে সড়ক বিভাগের ফেরি চালু হলে লাখো মানুষের দুর্ভোগ কমে আসবে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, শুধু খালিয়াজুরীই নয় পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের ভৈরবসহ প্রতিদিন প্রায় কমপক্ষে হাজার দশেক মানুষও চলেন এই হাওর সীমান্ত দিয়ে। অনেক রোগীকে মদন বা মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ জেলা সদরে বা ময়মনসিংহে নিয়ে যাওয়ার আগেই প্রাণ চলে যায়। নৌকা চালক নুরুজ্জামান জানান, জেলা পরিষদ থেকে এক বছরের জন্য অর্থাৎ চার থেকে পাঁচ মাসের জন্য ১৩ লাখ টাকায় ঘাট ইজারা নেন। কম টাকাতেই পার করেন সবাইকে। প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ হাজার মানুষ পার হন।
এদিকে মোটরসাইকেল চালক হিরা মিয়াসহ যাত্রীরা বলেন, তারা প্রতিজনে ৫ টাকা করে রাখলেও মোটরসাইকেল পারাপারে রাখা হয় প্রতিবার ২০ থেকে ৩০ টাকা। রয়েছে পণ্য পারাপার। তবে ফেরি চললে অন্তত সরাসরি অ্যাম্বুলেন্সসহ অটো রিকশা পার হতে পারবে। এতে সময় নষ্ট কম হবে। সেই সাথে ঝুঁকিমুক্ত হবে মানুষ। কিন্তু গত দুবছর ধরে ফেরির অপেক্ষা করছে।
সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার খান শরীফ জানান, এই নদীতে ভবিষ্যতে ব্রিজ বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সে পর্যন্ত মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এবং সরাসরি জেলার সাথে যোগাযোগ উন্নয়ন ঘটাতে দ্রুতই হচ্ছে সরকারিভাবে ফেরি চলাচলের কার্যক্রম। এ মাসের মাঝামাঝি চালু করার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন