ফলসার নামের ফলটির বাংলা, হিন্দি, উর্দু, গুজরাটি, স্প্যানিশ, ইংরেজি নামও ফলসা। গাছটি এখন ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে। সারা দেশে বিচ্ছিন্নভাবে দুই-এক জায়গায় দেখা যায়। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের রাস্তা ধরে সোজা পশ্চিম দিকে এগোতে থাকলে দেখা মিলবে কেন্দ্রীয় মসজিদের। মসজিদ ডান দিকে রেখে আর কিছুদূর পর রাস্তাটি শেষ হয়েছে পরিবহন পুলে। সেখানকার উত্তর দেয়ালঘেঁষা জায়গায় গাছভর্তি শুধু ফলসার ফল আর ফল।
ফলসার রস খেতে অনেকটা আঙুরের রসের মতো। পাকা ফল চিপে রস বের করে ভালো শরবত ও স্কোয়াশ বানানো যায়। টাটকা ফল ফুড ডেজার্ট তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। পাকা ফলসা দিয়ে নানা রকম কোমল পানীয়, শরবত ও জুস তৈরি করা যায়। গাছের কাঁচা পাতা গবাদিপশুকে খাওয়ানো যায়। ফলসার উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Grewia asiatica. আদিনিবাস ভারত এবং নেপাল।
বাংলা একাডেমির সহপরিচালক এবং বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, ফলসাগাছ খুব একটা বেশি বড় হয় না। খাটো আকৃতির পাতাঝরা স্বভাবের ঝোপালো বৃক্ষ। উচ্চতায় পাঁচ-সাত মিটার হয়। প্রধান কান্ড থেকে ডালপালা নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। কচি ডালের ওপর সূক্ষ্ম পশমে ঢাকা থাকে। ক্ষুদ্র হালকা হলদে রঙের ফুল ফোটে মার্চ-এপ্রিল মাসে এবং ফল পাকে এক মাস পরেই। জুন-জুলাই মাসেও কখনও কখনও ফুল দেখা যায়। ফল কাবুলি বুট বা মোটরদানার মতো। কাঁচা ফলের রং সবুজ ও স্বাদে টক। পাকলে লাল ও শেষে কালচে বাদামি হয়ে যায়। পাকা ফলের স্বাদ টক-মিষ্টি তবে সুস্বাদু।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক, সৌখিন আলোকচিত্রী ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, ‘তৃতীয়বারের মতো এই ফলসা গাছে ফল এলো। ক্যাম্পাসের মিডিয়া চত্বরেও একটি গাছ আছে। সেটিতে এখনও ফুলের দেখা মেলেনি।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ