শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫ আপডেট: ০১:৫৪, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধ ও সেনাবাহিনীর আত্মপ্রকাশ

কর্নেল আবদুল্লাহ মোর্শেদ, পিএসসি
প্রিন্ট ভার্সন
একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধ ও সেনাবাহিনীর আত্মপ্রকাশ

১৯৭১ সালে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পরাধীনতার শৃঙ্খল হতে মুক্ত হওয়ার জন্য বাঙালি জাতির ত্যাগ, তিতিক্ষা আর ইতিহাস পাল্টে দেওয়া মরণপণ লড়াই গত শতাব্দীর দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে আবির্ভূত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ বিশ্বের বিরল রাজনৈতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি, যা একটি নতুন জাতিসত্তার জন্মের মতো ঐতিহাসিক ঘটনাকে সামনে নিয়ে আসে। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকরা পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জনগণকে কয়েক দশক ধরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অমানবিক শোষণ আর নিপীড়ন করে আসছিল, এই বঞ্চনা আর নির্যাতন থেকে মুক্তির দুর্নিবার ইচ্ছা থেকেই স্বাধীনতা অর্জনের এই ঐতিহাসিক পটভূমির উদ্ভব ঘটে। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের নির্যাতিত, শোষিত ও বঞ্চিত জাতি আত্মত্যাগের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস সৃষ্টি করে শত্রুর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় বহু কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম এবং লাখো দেশপ্রেমিক জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার ইতিহাস বিশ্বের নিপীড়িত শান্তিপ্রিয় মানুষের সাহসিকতা ও দুর্নিবার দেশপ্রেমের একটি উদাহরণ। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ছিল একটি সশস্ত্র প্রতিরোধ, যেখানে সেনাবাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে একটি যুদ্ধ বিজয়ের ইতিহাস সৃষ্টি করে। এটি ছিল একটি গণযুদ্ধ যা প্রথমত গণ আন্দোলন থেকে পরবর্তী সময়ে তীব্র সশস্ত্র আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল, এর নেতৃত্বে ছিল এই দেশের সেনাবাহিনী যাদের দ্বারা চিত্রিত হয়েছিল একটি স্বাধীনতার মহাকাব্য। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার বিরুদ্ধে ইবিআর (ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) এবং ইপিআরের (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) বাঙালি সেনাদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু হয় যেখানে সেনা আর সাধারণ মুক্তিকামী জনতা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গঠন করে ‘মুক্তিবাহিনী’। এই মুক্তিবাহিনীর কেন্দ্রীয় চরিত্ররা ছিল তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসার এবং সেনারা, যারা দেশমাতৃকার প্রয়োজনে নিজেদের চাওয়াপাওয়াকে তুচ্ছজ্ঞান করে দেশের স্বাধীনতার জন্য অকাতরে জীবন দিয়েছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছাড়া বাংলাদেশকে স্বাধীন করা হয়তো সুদূরপরাহত এক বাস্তবতা হিসেবেই ইতিহাসে স্থান পেত। সশস্ত্র সম্মুখযুদ্ধে অকুতোভয় বীর সেনাদের সঙ্গে মুক্তিকামী আপামর জনতার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার সংগ্রামের মধ্য দিয়েই জন্ম নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

বৈষম্য আর বঞ্চনার পটভূমিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আত্মপ্রকাশ

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) থেকে অনেক সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। শুধু ভৌগোলিক দূরত্বের কারণে সব ধরনের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এ দেশের সেনারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ব্যাপক বৈষম্য আর হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। বাঙালি সেনাদের সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অবমূল্যায়ন ছিল নৈমত্তিক ঘটনা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে অফিসারদের উচ্চপদে বাঙালিদের সংখ্যা ছিল খুবই কম। বাঙালিদের দেশপ্রেম এবং সামরিক আনুগত্য নিয়ে সন্দেহ করে পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তারা মনে করতেন, বাঙালিরা শারীরিকভাবে দুর্বল এবং যুদ্ধে পারঙ্গম নয়, ফলে তাদের বিশ্বস্ততার ও আস্থার জায়গায় রাখা হতো না। পূর্ব পাকিস্তানে মোতায়েন করা বাঙালি ইউনিটগুলোতে নিম্নমানের অস্ত্র সরবরাহ করা হতো আর অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের ইউনিট আর বাহিনীগুলো উন্নত অস্ত্র ও রসদ পেত, যা চাকরিরত বাঙালি সেনাসদস্যদের মর্মবেদনা আর কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সামরিক বাজেটের বেশির ভাগ অংশ অবলীলায় পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যয় করা হতো যেখানে পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং অস্ত্রাগারে প্রচুর অবকাঠামোর উন্নতির প্রয়োজনীয়তা থাকা সত্ত্বেও কম বরাদ্দ দেওয়া হতো। সেনাবাহিনীতে এই বৈষম্য ছিল মূলত পশ্চিম পাকিস্তানের সামগ্রিক শাসনব্যবস্থারই প্রতিফলন। পশ্চিম পাকিস্তানিদের কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানিদের ওপর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ সব ক্ষেত্রেই যে শোষণ করা হতো, তা সেনাবাহিনীতেও স্পষ্ট ছিল। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীতে বাঙালি সেনাদের প্রতি এই শোষণ ও বৈষম্য শুধু তাদের সামরিক জীবনের ওপর নেতিবাচক প্রভাবই ফেলেনি বরং ক্ষোভ ও অসন্তোষেরও জন্ম দেয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ঢাকা এবং অন্যান্য জায়গায় বর্বর হামলা চালায়। এই নির্বিচার হামলা ও হত্যা এবং দশকের পর দশক ধরে হয়ে আসা বৈষম্য ১৯৭১-এর মার্চের শেষদিকে বাঙালি সেনাসদস্যরা বিদ্রোহে ফুঁসে ওঠে। ২৫ মার্চের কালরাতের গণহত্যার পরপরই পশ্চিম পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ব্যারাকে থাকা বাঙালি অফিসার ও সৈনিকরা অনেকেই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে এবং পূর্ব পাকিস্তানে ছুটিতে অবস্থানরত সেনারা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে কর্মরত প্রায় ২৬ হাজার প্রশিক্ষিত বাঙালি অফিসার ও সৈনিক বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিভিন্ন পর্যায়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের আটটি ব্যাটালিয়ন ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল চালিকাশক্তি। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সদস্য, সর্বস্তরের মুক্তিপাগল হাজার হাজার সাধারণ বাঙালি, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা যাদের যুদ্ধের কোনো জ্ঞান বা প্রশিক্ষণ ছিল না, তারাও বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে গড়ে তোলার স্বার্থে তাদের জীবন ও পরিবারের সদস্যদের জীবন বিপন্ন করেছিল এবং অকাতরে জীবন দিয়ে রচনা করেছিল দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঐতিহাসিক ভূমিকা

১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চ মাস এবং তৎপরবর্তী ৯টি মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম এ দেশের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে বাধ্য করে। এই ইতিহাসের পরতে পরতে সগৌরবে উচ্চারিত হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নাম। ১৯৭১-এর এপ্রিলের শুরু থেকেই বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম ধারণ করে সশস্ত্র সংগ্রামের রূপ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যখন বাঙালিদের ওপর আক্রমণ করে, তখন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসার ও সৈন্যরা এই দেশের জনসাধারণের সঙ্গে নিয়ে কোনো সংগঠিত বা সম্মিলিত বাহিনী ছাড়াই দেশের বিভিন্ন অংশে স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ ও প্রতিরোধ আন্দোলনে অংশ নেয়। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে পাকিস্তানি শাসকদের স্বপ্ন নস্যাৎ ও তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন দেখা দেয় একটি সুসংগঠিত সশস্ত্র বাহিনীর। ১৯৭১ সালের মার্চ এবং এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘটনাবহুল। এই সময়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাঙালি সেনাসদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিতে শুরু করে। তাদের এই ভূমিকা স্বাধীনতাসংগ্রামের পথ প্রশস্ত করে। স্বাধীনতা অর্জনের মহান ব্রত আর লক্ষ্যকে সামনে রেখে অকুতোভয়ী বাঙালি সেনাদের অসীমসাহসী আর দেশমাতৃকার প্রয়োজনে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা পুরো যুদ্ধের চিত্রকেই নতুন করে চিত্রিত করে। অন্যান্য বাহিনীর স্বল্পসংখ্যক সদস্য ছিল বলে প্রাথমিক অবস্থায় সেনাবাহিনীর অধীনেই পরিচালিত হয়েছিল গেরিলাযুদ্ধ, যা প্রচলিত সামরিক যুদ্ধকৌশলে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম এবং কর্মসম্পাদন ক্ষেত্রেও তা ছিল সমস্যাসংকুল। এই বাহিনীর অকুতোভয় সেনানিরা বীর বাঙালিদের সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পর্যুদস্ত করার মাধ্যমে সেই অসাধ্যই সাধন করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ইতিহাসের আলোকে নির্দ্বিধায় ও নিঃসংকোচে বলা যায় যে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের চালিকাশক্তিই ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব

১০ এপ্রিল ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়। এটি ছিল বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার, যা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি কেন্দ্রীয় কাঠামো তৈরি করেছিল। মুজিবনগর সরকার কর্নেল (পরবর্তী সময়ে জেনারেল) ওসমানীর সামরিক অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা, নেতৃত্বগুণ এবং দেশপ্রেমের ওপর ভিত্তি করে মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক (Commander-in-Chief) হিসেবে নিয়োগ দেয়। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক প্রাথমিক অবস্থায় বাংলাদেশকে চারটি (পরবর্তী সময়ে ছয়টি) সামরিক অঞ্চলে এবং পরবর্তী সময়ে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করে প্রতিটি সেক্টরে এক একজন অসমসাহসী এবং প্রতিভাধর সামরিক কর্মকর্তাকে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে যুদ্ধপরিকল্পনা ও পরিচালনা করেছিলেন। সর্বশেষ তিনি তিনটি ব্রিগেড গঠন করে তাদের স্বতন্ত্র ফোর্স (জেড ফোর্স, কে ফোর্স, এস ফোর্স) হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধকে সর্বাত্মক সশস্ত্র আন্দোলনে রূপ দিয়েছিলেন। 

জেড ফোর্স (Z Force) : ১৯৭১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর লে. কর্নেল জিয়াউর রহমানের (পরবর্তী সময়ে সেনাপ্রধান) নেতৃত্বে তিনটি ব্যাটালিয়ন (১ম, ৩য় এবং ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) নিয়ে এই বাহিনী সংগঠিত হয়। জেড ফোর্সের মূল কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল সিলেট, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল এবং জামালপুর অঞ্চলে। বিশেষত টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহে পরিচালিত অভিযানগুলো মুক্তিযুদ্ধের জন্য কৌশলগত সুবিধা এনে দেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষিত ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করার ক্ষেত্রে জেড ফোর্স ছিল পথিকৃৎ। লে. কর্নেল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এই বাহিনী গেরিলা আক্রমণ ও প্রতিরোধযুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে, যা মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেড ফোর্সের অধীনে এই অঞ্চলে পরিচালিত সব সফল অপারেশন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে গৌরবান্বিত করেছে। 

এস ফোর্স (S Force) : ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এস ফোর্স লে. কর্নেল কে এম শফিউল্লাহর (পরবর্তী সময়ে সেনাপ্রধান) নেতৃত্বে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দুটি ব্যাটালিয়ন (২য় ও ১১তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) নিয়ে গঠিত হয়। এই বাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সরাইল ও আশুগঞ্জ থানা এবং হবিগঞ্জ মহকুমা অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম চালায়। তাদের কৌশল ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থানে আক্রমণ করে তাদের সরবরাহ ও শক্তি দুর্বল করা। এস ফোর্সের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনীর শক্ত ঘাঁটিগুলোকে ভেঙে ফেলা। এর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকার দিকে অগ্রসর হওয়ার পথ সুগম করে। শৃঙ্খলা, সাহসিকতা এবং সফল আক্রমণের জন্য এস ফোর্স মুক্তিযুদ্ধে অনন্য ভূমিকা পালন করে। 

কে ফোর্স (K Force) : ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কে ফোর্স লে. কর্নেল খালেদ মোশাররফের (পরবর্তী সময়ে মেজর জেনারেল) নেতৃত্বে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের তিনটি ব্যাটালিয়ন (৪র্থ, ৯ম ও ১০ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) নিয়ে গঠিত হয় এবং প্রধানত ঢাকা, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ফরিদপুর অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। কে ফোর্সের মূল ভূমিকা ছিল গেরিলাযুদ্ধ ও নিয়মিত বাহিনীর মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শক্ত ঘাঁটিগুলোকে ভেঙে তাদের কার্যক্রম ব্যাহত করা। এসব অঞ্চলের যুদ্ধের কৌশলগত সাফল্য ‘কে’ ফোর্সের অন্যতম অর্জন, যা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় কে ফোর্সের দক্ষ নেতৃত্ব ও সামরিক সাফল্য পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলে এবং স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যুদ্ধকৌশল

মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর গণপ্রতিরোধ থেকে সশস্ত্র সংগ্রামে রূপদানের প্রাথমিক পদক্ষেপ ছিল ৪ এপ্রিল ১৯৭১ সালের ‘তেলিয়াপাড়া সম্মেলন’। সিলেট জেলার হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ডাকবাংলোর সম্মেলনে প্রতিরোধযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন ও একটি কেন্দ্রীয় কমান্ডে নিয়ে আসতে দুটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহাসিক এই তেলিয়াপাড়ায় এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে দ্বিতীয় সম্মেলনে তিনি সশস্ত্রযুদ্ধের একটি রূপরেখা উপস্থাপন করেন। জেনারেল ওসমানী উপলব্ধি করেছিলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়, কারণ তাদের ভারী অস্ত্র, প্রশিক্ষিত সৈনিক এবং সামরিক সক্ষমতা ছিল বেশি। তাই তিনি গেরিলা কৌশলের ওপর জোর দেন। ‘তেলিয়াপাড়া কৌশল’ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধকৌশল নিয়ে গঠিত ছিল প্রথমত, গেরিলা বাহিনীর অতর্কিত ও ছোট ছোট অপারেশনের করে শত্রু বাহিনীর অবাধ চলাচল ও রসদ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটানো এবং শত্রু সরবরাহ লাইনের বিরুদ্ধে ‘হিট অ্যান্ড রান’ অভিযানে লিপ্ত হওয়া যাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা যুদ্ধের মনোবল হারিয়ে ফেলে। দ্বিতীয়ত নিয়মিত বাহিনীকে পুনর্গঠন করা এবং গেরিলা অভিযানকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এটিকে বেশ কয়েকটি সেক্টরে বিভক্ত করে সারা দেশে সশস্ত্র প্রতিরোধ জোরদার করা। তৃতীয়ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পূর্ণমাত্রায় মোকাবিলা করার নিমিত্তে নিয়মিত ইউনিট এবং গেরিলা বাহিনীকে মারণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করে নিয়মিত বাহিনী গঠন করা। ১৯৭১ সালের ১২ জুলাই, ‘তেলিয়াপাড়া কৌশল’কে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে সামগ্রিক পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে বাংলাদেশকে এগারোটি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়েছিল। সামরিক অভিযানের উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং প্রান্তিক পর্যায়ে যুদ্ধকে ত্বরান্বিত করার জন্য প্রতিটি সেক্টরকে সাব-সেক্টর কমান্ডারদের নেতৃত্বে সাব-সেক্টরের সংমিশ্রণে বিভক্ত করা হয়েছিল। সমস্ত সাব-সেক্টর কমান্ডার গেরিলা ঘাঁটিগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য দায়বদ্ধ ছিলেন। সেক্টরের সৈন্যরা মূলত স্বল্পপাল্লার পদাতিক অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত ছিল। কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবনবাজি রেখে সফল অপারেশনের মাধ্যমে কার্যকরভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে অচল করে দিতে সক্ষম হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে তিনটি নিয়মিত ব্রিগেড গঠন করে মুক্তিযুদ্ধকে আরও বেগবান এবং তেজস্বী করে তোলা হয়। প্রচলিত যুদ্ধপদ্ধতির বাইরে গিয়ে গেরিলাপদ্ধতিতে যুদ্ধের জন্য সাধারণ জনগণকে একত্র করা, প্রশিক্ষণ দেওয়া, ছোট ছোট উপদলে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো, গেরিলাযুদ্ধের সামগ্রিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ‘যুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী’র কাঠামো তৈরি ও হানাদার পাকিস্তানি সৈনিকদের অবস্থান এবং রণ পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ভেস্তে দিয়েছিল। গেরিলা আক্রমণে এবং মিত্রশক্তির সহযোগিতায় নভেম্বর ১৯৭১-এর শুরুতেই সীমান্তবর্তী এলাকা শত্রুমুক্ত হতে শুরু করলে পাক হানাদার বাহিনীর মনোবল সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। ওই সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনী দেশব্যাপী আক্রমণ আরও জোরদার করে। প্রতিটি সেক্টরে পাক হানাদার বাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় মূলত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক বিজয়গাথারই উপাখ্যান।

উপসংহার : ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এই সংগ্রাম ছিল বাংলার মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এক গৌরবময় লড়াই, যেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত সাহসিকতা, আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেমের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। নির্বিচারে গণহত্যার কারণে বাঙালি জাতির হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আর প্রতিশোধের আকাঙ্খাকে সশস্ত্র সংগ্রামে রূপদানে প্রতিটি প্রশিক্ষিত বাঙালি সৈনিক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বাঙালি সেনাসদস্যরা নিজস্ব বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে অমিত সাহস আর দুর্দমনীয় দেশপ্রেমের যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন তা বিশ্বের সামরিক ইতিহাসে বিরল ঘটনা হিসেবে চিত্রিত হয়েছে। এই বাহিনীর সদস্যরাই সর্বপ্রথম পাকিস্তানি হানাদারদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সারা দেশে সশস্ত্র মুক্তির সংগ্রামকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিল। এই বাহিনীর প্রশিক্ষিত সেনারা দেশকে ভালোবেসে, দেশের জন্য অবলীলায় জীবন উৎসর্গ করে, পাকিস্তানি বাহিনীর কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্ম দিয়েছে এবং একই সঙ্গে ইতিহাসের পাতায় এই বাহিনীকে অমরত্বের মর্যাদা দিয়েছে। স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বের মাধ্যমেই এ দেশের আপামর জনসাধারণের কাছে সেনাবাহিনী হয়ে ওঠে মুক্তিসংগ্রাম আর সার্বভৌমত্বের প্রতীক। এই বাহিনীর মৃত্যুঞ্জয়ী সেনাদের সাহস, নেতৃত্ব, কৌশল এবং আত্মত্যাগের ফলেই বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা মুক্ত আকাশে ডানা মেলেছে। মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনীর ত্যাগ ও অবদানে অর্জিত এই ‘স্বাধীনতা’ সমুন্নত রাখতে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সদস্যরা আজ বদ্ধপরিকর।

 

লেখক : অধিনায়ক, আর্মি মিলিটারি পুলিশ ইউনিট, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট

এই বিভাগের আরও খবর
গ্যাসসংকট
গ্যাসসংকট
চাল নিয়ে চালবাজি
চাল নিয়ে চালবাজি
শ্রমিকেরাও মানুষ
শ্রমিকেরাও মানুষ
শেরেবাংলা, মেয়র হানিফ ও ঢাকার মশা
শেরেবাংলা, মেয়র হানিফ ও ঢাকার মশা
শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য
শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য
অর্থনীতিতে বিসংবাদ
অর্থনীতিতে বিসংবাদ
শিক্ষা অর্জনের প্রেরণা জোগায় কোরআন
শিক্ষা অর্জনের প্রেরণা জোগায় কোরআন
চাই ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ
চাই ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ
জাতীয়তাবাদের উপহার সবাই মিলে এক জাতি
জাতীয়তাবাদের উপহার সবাই মিলে এক জাতি
ছয় সম্রাজ্ঞী যায় ওই সাগরে
ছয় সম্রাজ্ঞী যায় ওই সাগরে
আল্লাহর কাছে বান্দার দোয়ার গুরুত্ব অনন্য
আল্লাহর কাছে বান্দার দোয়ার গুরুত্ব অনন্য
পাক-ভারত উত্তেজনা
পাক-ভারত উত্তেজনা
সর্বশেষ খবর
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, হাসপাতালে ভর্তি ২৯
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, হাসপাতালে ভর্তি ২৯

এই মাত্র | ডেঙ্গু আপডেট

ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে সিপিবি নেতা হাসান তারিক
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে সিপিবি নেতা হাসান তারিক

৩৭ সেকেন্ড আগে | রাজনীতি

রাখাইনে করিডর নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে সরকারের প্রতি সাইফুল হকের আহ্বান
রাখাইনে করিডর নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে সরকারের প্রতি সাইফুল হকের আহ্বান

২ মিনিট আগে | রাজনীতি

চট্টগ্রামে মৃগী রোগী আছে, পৃথক সেবা নেই
চট্টগ্রামে মৃগী রোগী আছে, পৃথক সেবা নেই

৩ মিনিট আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

১০০ টাকার জন্য খুন, আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
১০০ টাকার জন্য খুন, আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

৬ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

সংযোগ সড়কবিহীন সেতু, ১০ গ্রামবাসীর দুর্ভোগ
সংযোগ সড়কবিহীন সেতু, ১০ গ্রামবাসীর দুর্ভোগ

১৭ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

দেশের রিজার্ভ বেড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার
দেশের রিজার্ভ বেড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার

২০ মিনিট আগে | জাতীয়

বগুড়ায় মাসব্যাপী অ্যাথলেটিকস প্রশিক্ষণ
বগুড়ায় মাসব্যাপী অ্যাথলেটিকস প্রশিক্ষণ

৪০ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

গোবিপ্রবি’তে কর্মকর্তাদের আচরণ ও শৃঙ্খলা বিষয়ক কর্মশালা
গোবিপ্রবি’তে কর্মকর্তাদের আচরণ ও শৃঙ্খলা বিষয়ক কর্মশালা

৪১ মিনিট আগে | ক্যাম্পাস

মুহুর্মুহু রকেট হামলায় বিপর্যস্ত মার্কিন রণতরী, বাধ্য হলো পিছু হটতে
মুহুর্মুহু রকেট হামলায় বিপর্যস্ত মার্কিন রণতরী, বাধ্য হলো পিছু হটতে

৪১ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ছাত্রলীগের নির্যাতনের সহযোগী শিক্ষক-কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে ঢাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
ছাত্রলীগের নির্যাতনের সহযোগী শিক্ষক-কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে ঢাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ

৪২ মিনিট আগে | ক্যাম্পাস

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েশন ডে ২০২৫ উদযাপন
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েশন ডে ২০২৫ উদযাপন

৫০ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

সৌদি আরবে ঈদুল আজহার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা
সৌদি আরবে ঈদুল আজহার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা

৫৭ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বগুড়ায় ধান চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন
বগুড়ায় ধান চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

কলাপাড়ায় বসতবাড়িতে ডাকাতি
কলাপাড়ায় বসতবাড়িতে ডাকাতি

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

মিরাজের ঘূর্ণিতে তিনদিনেই জিতল বাংলাদেশ
মিরাজের ঘূর্ণিতে তিনদিনেই জিতল বাংলাদেশ

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিত
চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিত

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

কসবায় ভারতীয় চশমা জব্দ
কসবায় ভারতীয় চশমা জব্দ

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

বন্যায় গৃহহীন ফেনীর শতাধিক পরিবার পেল সরকারি ঘর
বন্যায় গৃহহীন ফেনীর শতাধিক পরিবার পেল সরকারি ঘর

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

চট্টগ্রামে দেয়াল ভেঙে ঘরে ঢুকে গেল লরি
চট্টগ্রামে দেয়াল ভেঙে ঘরে ঢুকে গেল লরি

১ ঘণ্টা আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মে মাসে দু’টি ঘূর্ণিঝড়ের আভাস
মে মাসে দু’টি ঘূর্ণিঝড়ের আভাস

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

খাওয়ার পর তাৎক্ষণিক দাঁত ব্রাশ করলেই হতে পারে সর্বনাশ
খাওয়ার পর তাৎক্ষণিক দাঁত ব্রাশ করলেই হতে পারে সর্বনাশ

১ ঘণ্টা আগে | জীবন ধারা

প্রিপেইড গ্যাস মিটার নিয়ে প্রতারণা এড়াতে তিতাসের সতর্কবার্তা
প্রিপেইড গ্যাস মিটার নিয়ে প্রতারণা এড়াতে তিতাসের সতর্কবার্তা

১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

সাংবাদিকদের থেকে দূরে থাকতেন আমির, কারণ কী?
সাংবাদিকদের থেকে দূরে থাকতেন আমির, কারণ কী?

১ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

শিল্পীদের মেধাসম্পদ সংরক্ষণে কাজ করছে সরকার : শিল্প উপদেষ্টা
শিল্পীদের মেধাসম্পদ সংরক্ষণে কাজ করছে সরকার : শিল্প উপদেষ্টা

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধাবস্থা নিয়ে জেল থেকে যে বার্তা দিলেন ইমরান খান
ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধাবস্থা নিয়ে জেল থেকে যে বার্তা দিলেন ইমরান খান

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

গোবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের আচরণ ও শৃঙ্খলা বিষয়ক কর্মশালার সমাপ্তি
গোবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের আচরণ ও শৃঙ্খলা বিষয়ক কর্মশালার সমাপ্তি

২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

১১৯তম প্রাইজ বন্ডের ড্র, প্রথম বিজয়ী নম্বর ০২৬৪২৫৫
১১৯তম প্রাইজ বন্ডের ড্র, প্রথম বিজয়ী নম্বর ০২৬৪২৫৫

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

রাজধানীর উত্তরায় ঢাবির বাসে হামলা, গ্রেফতার ৫
রাজধানীর উত্তরায় ঢাবির বাসে হামলা, গ্রেফতার ৫

২ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

সর্বাধিক পঠিত
কাশ্মীর ইস্যু: প্রতিশোধ নিতে সামরিক হামলার ‘সবুজ সংকেত’ দিলেন মোদি
কাশ্মীর ইস্যু: প্রতিশোধ নিতে সামরিক হামলার ‘সবুজ সংকেত’ দিলেন মোদি

২২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

‘মুক্তিযোদ্ধা’র সনদ বাতিলের তালিকায় আলোচিত নামগুলো কারা?
‘মুক্তিযোদ্ধা’র সনদ বাতিলের তালিকায় আলোচিত নামগুলো কারা?

১১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

এখনো তৎপর মালয়েশিয়ার সিন্ডিকেট
এখনো তৎপর মালয়েশিয়ার সিন্ডিকেট

১৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

‘২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’, অডিওটি শেখ হাসিনার
‘২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’, অডিওটি শেখ হাসিনার

৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানের তাড়া খেয়ে পিছু হটেছে ভারতীয় রাফাল
পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানের তাড়া খেয়ে পিছু হটেছে ভারতীয় রাফাল

২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

‘২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে ভারত’
‘২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে ভারত’

৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

চীন-পাকিস্তানকে ‘মাথায় রেখেই’ কী রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত?
চীন-পাকিস্তানকে ‘মাথায় রেখেই’ কী রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত?

৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

উচ্চতর গ্রেড পাবেন সরকারি চাকরিজীবীদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরা
উচ্চতর গ্রেড পাবেন সরকারি চাকরিজীবীদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরা

৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

সুবর্ণা, শাওনসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা
সুবর্ণা, শাওনসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা

১৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেয়ার মার্কিন প্রস্তাবে ‘অস্বীকৃতি’ সিরিয়ার
আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেয়ার মার্কিন প্রস্তাবে ‘অস্বীকৃতি’ সিরিয়ার

৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

খোঁজ নেই টাঙ্গাইলের সেই নাজিরের, চিন্তায়-অস্থিরতায় দিন কাটছে পরিবারের
খোঁজ নেই টাঙ্গাইলের সেই নাজিরের, চিন্তায়-অস্থিরতায় দিন কাটছে পরিবারের

২৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

অভিনেতা সিদ্দিকের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ
অভিনেতা সিদ্দিকের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

‘যখন বুঝতে পারলাম কী হচ্ছে, তখন চিৎকার শুরু করি’
‘যখন বুঝতে পারলাম কী হচ্ছে, তখন চিৎকার শুরু করি’

৭ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

ভারতে পাঠ্যবই থেকে বাদ মোগল-সুলতানি ইতিহাস
ভারতে পাঠ্যবই থেকে বাদ মোগল-সুলতানি ইতিহাস

২১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আসছে ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’, এক ঠিকানায় মিলবে সব সেবা
আসছে ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’, এক ঠিকানায় মিলবে সব সেবা

৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

‘বেগম খালেদা জিয়াকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ফেরাতে কাজ করছে সরকার’
‘বেগম খালেদা জিয়াকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ফেরাতে কাজ করছে সরকার’

২৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ
শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ

২২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ই-কমার্স ব্যবসায় মেয়ে, যে কারণে বিনিয়োগ করলেন না বিল গেটস
ই-কমার্স ব্যবসায় মেয়ে, যে কারণে বিনিয়োগ করলেন না বিল গেটস

১৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

‘অনুমানে দুইয়ে দুইয়ে চার না মেলানোই ভালো’
‘অনুমানে দুইয়ে দুইয়ে চার না মেলানোই ভালো’

১৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ইমরানকে মুক্তি দিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুন: পিটিআই
ইমরানকে মুক্তি দিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুন: পিটিআই

২০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

পুতিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা; স্থায়ী চুক্তি চান ট্রাম্প
পুতিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা; স্থায়ী চুক্তি চান ট্রাম্প

১০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বিএনপি নেতা আমানের ১৩ ও তার স্ত্রীর ৩ বছরের সাজা বাতিল
বিএনপি নেতা আমানের ১৩ ও তার স্ত্রীর ৩ বছরের সাজা বাতিল

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শ্রমিক অসন্তোষে গাজীপুরে দুই কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ
শ্রমিক অসন্তোষে গাজীপুরে দুই কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

৭ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

নতুন ক্ষেপণাস্ত্র-বোট তৈরির ঘোষণা দিল ইরান
নতুন ক্ষেপণাস্ত্র-বোট তৈরির ঘোষণা দিল ইরান

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

চিন্ময় দাসের জামিন হাইকোর্টে
চিন্ময় দাসের জামিন হাইকোর্টে

৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ, বাবা-ছেলে গ্রেফতার
গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ, বাবা-ছেলে গ্রেফতার

২০ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

মডেল মেঘনা আলম কারামুক্ত
মডেল মেঘনা আলম কারামুক্ত

২৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ‘ড্র’ আজ
প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ‘ড্র’ আজ

১০ ঘণ্টা আগে | বাণিজ্য

আইফোন ১৭-কে টপকে যাবে অ্যান্ড্রয়েড?
আইফোন ১৭-কে টপকে যাবে অ্যান্ড্রয়েড?

১৩ ঘণ্টা আগে | টেক ওয়ার্ল্ড

কলকাতার হোটেলে ভয়াবহ আগুনে ১৪ জনের মৃত্যু
কলকাতার হোটেলে ভয়াবহ আগুনে ১৪ জনের মৃত্যু

১০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

প্রিন্ট সর্বাধিক
অভিবাসী বহিষ্কারে রেকর্ড গড়লেন ট্রাম্প
অভিবাসী বহিষ্কারে রেকর্ড গড়লেন ট্রাম্প

প্রথম পৃষ্ঠা

বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করতে চায় ডেসকো ওজোপাডিকো
বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করতে চায় ডেসকো ওজোপাডিকো

পেছনের পৃষ্ঠা

আমবাগান পরিদর্শনে চীনের রাষ্ট্রদূত
আমবাগান পরিদর্শনে চীনের রাষ্ট্রদূত

প্রথম পৃষ্ঠা

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

আরও জটিল রোহিঙ্গা পরিস্থিতি
আরও জটিল রোহিঙ্গা পরিস্থিতি

প্রথম পৃষ্ঠা

বিজনেস পিপলকে মেরে ফেলা যাবে না
বিজনেস পিপলকে মেরে ফেলা যাবে না

প্রথম পৃষ্ঠা

পল্লী বিদ্যুতে চালু রাখার চেষ্টা ডিইপিজেড
পল্লী বিদ্যুতে চালু রাখার চেষ্টা ডিইপিজেড

নগর জীবন

চীনের হাসপাতাল নীলফামারীতে
চীনের হাসপাতাল নীলফামারীতে

পেছনের পৃষ্ঠা

মোহনীয় কৃষ্ণচূড়া জারুল সোনালু
মোহনীয় কৃষ্ণচূড়া জারুল সোনালু

পেছনের পৃষ্ঠা

পাল্টা প্রস্তুতিতে পাকিস্তান
পাল্টা প্রস্তুতিতে পাকিস্তান

প্রথম পৃষ্ঠা

সাবিলা নূরের লুকোচুরি...
সাবিলা নূরের লুকোচুরি...

শোবিজ

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ
অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ

পেছনের পৃষ্ঠা

বিনিয়োগকারীরা আর ঝুঁকি নিতে চান না
বিনিয়োগকারীরা আর ঝুঁকি নিতে চান না

পেছনের পৃষ্ঠা

অপকর্ম করলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা
অপকর্ম করলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা

প্রথম পৃষ্ঠা

গৃহকর্মী ধর্ষণের শিকার, বাবা-ছেলে আটক
গৃহকর্মী ধর্ষণের শিকার, বাবা-ছেলে আটক

দেশগ্রাম

ব্যবসায় পরিবেশ উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই
ব্যবসায় পরিবেশ উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই

পেছনের পৃষ্ঠা

শেরেবাংলা, মেয়র হানিফ ও ঢাকার মশা
শেরেবাংলা, মেয়র হানিফ ও ঢাকার মশা

সম্পাদকীয়

শিশুশিল্পী থেকে যেভাবে তারকা
শিশুশিল্পী থেকে যেভাবে তারকা

শোবিজ

আইসিইউতে অর্থনীতি, সংকটে রাজনীতি
আইসিইউতে অর্থনীতি, সংকটে রাজনীতি

প্রথম পৃষ্ঠা

বিতর্কে কারিনা
বিতর্কে কারিনা

শোবিজ

শ্রমিকেরাও মানুষ
শ্রমিকেরাও মানুষ

সম্পাদকীয়

মোহামেডানকে কাঁদিয়ে ক্রিকেটে আবাহনীই সেরা
মোহামেডানকে কাঁদিয়ে ক্রিকেটে আবাহনীই সেরা

মাঠে ময়দানে

গ্যাস ও ব্যাংকিং সংকটে বিপর্যয়ে রপ্তানি শিল্প
গ্যাস ও ব্যাংকিং সংকটে বিপর্যয়ে রপ্তানি শিল্প

পেছনের পৃষ্ঠা

চম্পা কেন দূরে
চম্পা কেন দূরে

শোবিজ

১৫ বছর পর সেমিতে বার্সা-ইন্টার
১৫ বছর পর সেমিতে বার্সা-ইন্টার

মাঠে ময়দানে

নাচে এখন পেশাদারির জায়গা তৈরি হয়েছে
নাচে এখন পেশাদারির জায়গা তৈরি হয়েছে

শোবিজ

মানুষ মর্যাদা পাবে তার গুণের ভিত্তিতে
মানুষ মর্যাদা পাবে তার গুণের ভিত্তিতে

প্রথম পৃষ্ঠা

কী চায় নতুন দলগুলো
কী চায় নতুন দলগুলো

প্রথম পৃষ্ঠা

চট্টগ্রামে লিড নিয়েছে বাংলাদেশ
চট্টগ্রামে লিড নিয়েছে বাংলাদেশ

মাঠে ময়দানে

নাটকীয় ফাইনালে কিংসের শিরোপা
নাটকীয় ফাইনালে কিংসের শিরোপা

মাঠে ময়দানে