পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে প্যারিস। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পদত্যাগ চেয়ে রাস্তায় নেমেছে দেশটির জনগণ। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায় বিক্ষোভকারীদের। শনিবার বিক্ষোভে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে চার পুলিশ কর্মকর্তাসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। আটক করা হয় দেড় শতাধিক বিক্ষোভকারীকে।
শনিবার ফ্রান্সে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় প্যারিসের চ্যাম্প এলিসি অ্যাভিনিউ। এ দিন রাস্তায় নামেন অন্তত এক লাখ বিক্ষোভকারী। এসময় বিক্ষোভকারীদের দমাতে টিয়ারসেল ও জলকামান ব্যবহার করা হয়। এসময় অন্তত ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও বিক্ষোভকারীদের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিছিল করছিলেন। এদিকে এর এক সপ্তাহ আগে দেশজুড়ে অন্তত ৩ লাখ মানুষ রাস্তা অবরোধ করেছিলেন।
এদিকে চলমান বিক্ষোভে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে, নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। একইসঙ্গে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উস্কানি দেয়ার অভিযোগ তোলে ক্ষমতাসীন দল। বিক্ষোভ দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফি কাস্টনার বলেন, প্রায় এক লাখ মানুষ বিক্ষোভ অংশ নিয়েছেন। তার মধ্যে ৮ হাজার জন বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী। তারা বিক্ষোভে উস্কানি দিচ্ছে। আমরা জানি কীভাবে বিক্ষোভ দমন করতে হয়। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিনন্দন।
বিক্ষোভের জন্য বিরোধীদের দায়ী করায় ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অসততার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দল কট্টর ডানপন্থী ন্যাশনাল র্যালি পার্টির প্রধান ম্যারি ল্যঁ পেন।
কিন্তু কেন এই আন্দোলন?
গত এক বছরে বেড়েছে পেট্রল-ডিজেলের দাম। গত বছরের তুলনায় যা প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি! ২০০০-এর পর থেকে ফ্রান্সে জ্বালানির দাম এতটা বাড়ার নজির নেই। গত সপ্তাহ থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধিকিধিকি জ্বলছিল ক্ষোভের আগুন। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বক্তব্য, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম চড়েছে। তাই দাম বেড়েছে দেশে। ১ জানুয়ারি থেকে আরো বাড়বে।
কিন্তু বাস্তবে গত কয়েক দিনে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমলেও ফ্রান্সে কমেনি। এটা ক্ষোভের আঁচ বাড়িয়েছে আরো।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন