পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর (পিওকে) থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে এসে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাস শুরু করার পর পরবর্তীতে জম্মু-কাশ্মীরের চলে আসা ৫৩০০ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষনা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
জম্মু-কাশ্মীরের জন্য ‘প্রাইম মিনিস্টারস ডেভলপমেন্ট প্যাকেজ-২০১৫’-এর অধীন ওই সমস্ত পরিবার পিছু এককালীন সাড়ে ৫ লাখ রুপি করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষনা করা হয়েছে। আগামী ২৪ অক্টোবর জম্মু-কাশ্মীরে অনুষ্ঠিতব্য ব্লক ডেভলপমেন্ট কাউন্সিল (বিডিসি) নির্বাচনের ঠিক আগে ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্ত।
আজ বুধবার নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ক্যাবিনেট বৈঠকের পরই দিল্লির শাস্ত্রী ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই ঘোষনা দেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে জম্মু-কাশ্মীরে পাকিস্তান আগ্রাসনের পর ৩১,৬১৯ টি পরিবার পিওকে থেকে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে চলে আসেন। এর মধ্যে ২৬৩১৯ টি পরিবার জম্মু-কাশ্মীরে থেকে যান কিন্তু ৫৩০০ টি পরিবার উপত্যকা ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে দেশের অন্যত্র গিয়ে বসবাস শুরু করেন। ফলে এই মানুষগুলি পূর্বের ঘোষিত কেন্দ্রের আর্থিক প্যাকেজের সুবিধা পায়নি। এখন ওই ৫৩০০ পরিবার-যারা পরবর্তীতে ফের জম্মু-কাশ্মীরে ফিরে গিয়ে বসবাস শুরু করে-তাদেরকেও আর্থিক প্যাকেজের আওতাভুক্ত করা হল। অর্থাৎ ওই পরিবার পিছু ৫.৫ লাখ রুপি করে এককালীন আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। এর ফলে ওই সমস্ত বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলি ন্যায় বিচার পাবে।’
উল্লেখ্য এর আগে গত ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন প্রকল্পের ঘোষনা দেন। সেই প্রকল্পের আওতায় পিওকে ও ছাম্ব সেক্টর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে জম্মু-কাশ্মীরে চলে আসা ৩৬,৩৮৪ জন মানুষের জন্য এককালীন পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষনা করা হয়েছিল। সেসময় ওই আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন এই ৫৩০০ টি পরিবার।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিমত ‘তিন ধরনের বাস্তুচ্যুত মানুষ জম্মু-কাশ্মীরে চলে এসেছেন। প্রথমত ১৯৪৭ সালে দেশ (ভারত-পাকিস্তান) ভাগের পর এখানে এসেছেন। দ্বিতীয়ত ভারতের সাথে কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্তি হওয়ার পর এবং সবশেষে পাক-শাসিত কাশ্মীর থেকে বেশকিছু পরিবার ভারতে চলে আসেন।’
জাভড়েকর জানান, ‘জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষেত্রে এই আর্থিক প্যাকেজ ঐতিহাসিক ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিবারগুলি যুদ্ধ ও বিদ্বিষের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছে, এই আর্থিক সহায়তার ফলে তারা একটা যুক্তিসঙ্গত মাসিক আয় উপার্জন করতে সক্ষম হবে এবং মূলধারার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অংশ হতে পারবে।’
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ