গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে রাশিয়া। এরপর থেকে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিপাকে পড়েন বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ। এবার সেই খাদ্য সংকট কাটাতে তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ঐতিহাসিক চুক্তিতে পৌঁছেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সাক্ষরিত চুক্তির আওতায় রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে তাদের অবরোধ শিথিল করবে, যাতে ইউক্রেন থেকে জাহাজে করে খাদ্য রফতানি হতে পারে।
চুক্তির ব্যাপারে কথা বলেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। তিনি বলেন, রাশিয়ার কথার সঙ্গে অবশ্যই কাজের মিল থাকতে হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্য ও এর মিত্ররা একসঙ্গে কাজ করবে।
এক বিবৃতিতে লিজ ট্রাস বলেছেন, ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বর্বর আক্রমণের কারণে বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ ও গরীব দেশগুলোর মানুষ খাদ্যাভাবে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন। ইউক্রেনের শস্য আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছানো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ চুক্তি করতে মধ্যস্থতা করায় আমরা তুরস্ক ও জাতিসংঘ সেক্রেটারিকে অভিনন্দন জানাই।
তিনি আরও বলেন, এ অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য যুক্তরাজ্য এবং আমাদের মিত্ররা কঠোর চেষ্টা করেছি। এখন চুক্তিটি অবশ্যই কার্যকর হতে হবে এবং আমরা পর্যবেক্ষণ করব এবং নিশ্চিত করব যেন রাশিয়ার কথার সঙ্গে কাজের মিল থাকে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বে শান্তি, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে পুতিনকে অবশ্যই পুতিনকে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং তার সেনাদের ইউক্রেন থেকে সরিয়ে নিতে হবে।
এদিকে তুরস্ক বলেছে, এই চুক্তির ফলে শুধু ইউক্রেন নয়, কৃষ্ণসাগর দিয়ে রাশিয়ার খাদ্য রফতানিও সহজ হবে। পাঁচ মাস আগে যুদ্ধ শুরুর পরপরই রাশিয়া ইউক্রেনের উপকূলের কাছে কৃষ্ণসাগরে নৌ অবরোধ দিলে ইউক্রেনের রফতানি মুখ থুবড়ে পড়ে। ইউক্রেন জুড়ে বিভিন্ন গুদামে প্রচুর খাদ্যশস্য মাসের পর মাস রফতানির জন্য পড়ে রয়েছে। কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ওডেসা বন্দরে গুদামেই এখন দুই কোটি টনের মত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে।
এগুলো এখন আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন যেসব দেশে খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে সেখানে রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যে মাত্রায় অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে, তাতে এই চুক্তি শেষ পর্যন্ত কতটা কাজ করবে এবং কতদিন তা টিকবে তা নিয়ে পর্যবেক্ষকদের মধ্যে যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র : আল-জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর