৭ জুলাই, ২০২০ ১৩:৩৯

চলছে নিবন্ধন, হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু ১৯ জুলাই

মোহাম্মদ আল-আমীন, সৌদি আরব

চলছে নিবন্ধন, হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু ১৯ জুলাই

ফাইল ছবি

শুরু হয়েছে ২০২০ সালের হজের অনলাইন নিবন্ধন কার্যক্রম। ৬ জুলাই শুরু হওয়া এই কার্যক্রম চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত। বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের হজে কতজন অংশ নিবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে না জানালেও সর্বনিম্ন ১ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার জনকে সুযোগ দেয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরমধ্যে ৭০ শতাংশ বিদেশি নাগরিক এবং ৩০ শতাংশ সৌদি নাগরিক থাকবেন। এবারের হজে অংশগ্রহণকারী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সার্বিক তদারকির দায়িত্বে থাকবে দেশটির রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (সিডিসি)।

আবেদনের পর নির্বাচিতদের নামের তালিকা ১২ জুলাই প্রকাশ করা হবে। সেই সঙ্গে আবেদনকারীকে এসএমএস ও মেইল করে জানিয়ে দেওয়া হবে।

এবারের হজে অংশ নিতে ইচ্ছুকদের প্রাথমিক নিবন্ধনের সময় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নের জবাব দেয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ করতে হবে এই কার্যক্রম। সিডিসি’র দেয়া তথ্য অনুযায়ী ডায়াবেটিকস, হার্টের সমস্যা, শ্বাসজনিত সমস্যা, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন, করোনার কোন উপসর্গ নেই, বয়স ২০-৬৫ বছরের মধ্যে এবং ইতিপূর্বে কখনোই হজে অংশ নেননি এমন ব্যক্তিদেরাই এবার হজ করার সুযোগ পাবেন।

সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে এবারের হজে অংশগ্রহণকারীদের বেশ কিছু নিয়ম মেনে হজ পালন করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা, ওআইসি'সহ বিভিন্ন সংস্থা এবং সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করে বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসব নিয়মের অন্যতম হলো- ওয়াফের সময় পবিত্র কাবা স্পর্শ করা যাবে না। কালো পাথর হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া যাবে না। অবশ্য হাজরে আসওয়াদে চুমু দিতে না পারলে ওই পাথরের দিকেত ইশারা করে তাওয়ায় শুরু করার বিধান রয়েছে। আর কাবার স্পর্শ করা হজের কোনো মৌলিক বিধান নয়। তাওয়াফ করা হজের বিধানের অন্যতম।

নামাজের সময় এমনকি কাবা শরিফ তাওয়াফের সময়ও দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে হাজিদের। এ নিয়ম মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতেও মানতে হবে। এই সময়ে হজযাত্রী ও আয়োজকদের প্রত্যেকের জন্য সর্বদা মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। ইহরাম অবস্থায় মুখ খোলা রাখা বাধ্যতামূলক হলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মাস্ক পরার বিষয়ে আলেমরা জায়েজ বলে ফতোয়া দিয়েছেন।

অনুমতি ছাড়া কেউ মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতের ময়দানে যেতে পারবেন না। এসব স্থানে যাওয়া-আসা নিয়ন্ত্রণ করবে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তবে এসব স্থানে যাওয়ার ব্যবস্থা ও সময় পরে জানানো হবে।

জামারাতে পাথর মারার সময় হজযাত্রীদের জীবাণুমুক্ত পাথর সরবরাহ করা হবে, সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। পাথর নিক্ষেপের সময় কোনো দলে পঞ্চাশজনের বেশি লোক থাকতে পারবে না।

কোরবানি সম্পন্ন করতে হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। কোনো হজযাত্রী নিজে কোরবানির পশু ক্রয় কিংবা জবাই করতে পারবেন না।

হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত পরিবহন শ্রমিক এবং খাবার সরবরাহকারী ও স্বেচ্ছাসেবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের সমাবেশ ও সভা। বার বার হাত ধোয়ার পাশাপাশি হাঁচি-কাশির সময় শালীনতা করতে হবে।

তাওয়াফের সময় আলাদা আলাদা লাইন থাকবে সেই লাইন অনুসরণ করতে হবে। সাফা-মারওয়ায় সায়ীর সময়ও একই নিয়ম মানতে হবে।

মসজিদে হারামে কোনো ধরনের খাবারের অনুমতি নেই। ওয়াটার কুলার ও জমজমের পানি সরবরাহ বন্ধ থাকবে। জমজমের পানি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

হজযাত্রী ও হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়মতি পরীক্ষা করা হবে। হোটেল-রেস্তোরাঁ, চলাচলের পথ ও যানবাহনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

কারো মাঝে করোনার লক্ষণ প্রকাশ পেলে তাকে আইসোলেশনে পাঠানো হবে। কোনো ধরনের পত্রিকা বা প্রচারপত্র বিলি-বিতরণ করা যাবে না। এটিএম বুথ, টাচস্ক্রিন গাইড এবং ভেন্ডিং মেশিনের পাশে হ্যান্ডস্যানিটাইজার রাখতে হবে। হজযাত্রীদের লাগেজ জীবাণুমুক্ত এবং স্যানিটাইজ করতে হবে।

বর্তমান পরিস্থিতির কারণে চলতি বছরে হজের দিন কাবার গিলাফ বদলানো হবে না। এটা অন্য সময় বদলানো হবে। সেই তারিখও পরে জানানো হবে।

তবে মক্কার ভেতরে বসবাসকারীরা এবার অংশ নিতে পারবেন কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। অন্যবার তারা তাসরিহ বা অনুমতিপত্র ছাড়া স্বাভাবিক নিয়মে হজে অংশ নিতে পারতেন।


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

সর্বশেষ খবর